জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

সাফল্যের আলো আজ ফিকে, সবচেয়ে কাছের মানুষকে হারিয়ে ভেঙে পড়লেন পারিজাত! স্বপ্নপূরণের দিনে হৃদয়ে নেমে এলো গভীর শূন্যতা! যে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল, সেই মানুষটাই আজ নেই পাশে!

প্রথমবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (KIFF)-এর মঞ্চে নিজের ছবির বিশেষ প্রদর্শনী, এমন একটা মুহূর্তের স্বপ্নই দেখেছিলেন বহুদিন ধরে তরুণ অভিনেত্রী ‘পারিজাত চৌধুরী’ (Parijat Chaudhuri)। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত ‘হালুম’ (Halum) ছবিটি ‘কিফ’-এ দেখানো হবে শুনে তাঁর উচ্ছ্বাস ছিল সীমাহীন। এই ছবির সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে থাকা ভালোবাসা, পরিশ্রম, আর আবেগ সবটাই যেন একসঙ্গে জেগে উঠেছিল এই দিনটিতে। সকাল থেকেই তাঁর মন ভাল থাকার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্য যেন অন্য পরিকল্পনা করেছিল অভিনেত্রীর জন্য।

আনন্দের দিনেই জীবনের গভীরতম শোক এসে আছড়ে পড়ল তাঁর ওপর। রবীন্দ্র সদনে আয়োজিত সেই বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক থেকে দর্শক, সকলেই। পারিজাতের অভিনয়ের প্রশংসায় মুখর ছিলেন সবাই। অথচ ভিতরে ভিতরে তিনি লড়ছিলেন তীব্র মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে। সকালে ঘুম ভাঙতেই যে খবরটা পেয়েছিলেন, তা যেন এক মুহূর্তেই তাঁর পৃথিবীকে ওলটপালট করে দেয়। যে মানুষটির সঙ্গে প্রতিটি সাফল্যের গল্প ভাগ করে নিতেন, যে তাঁর প্রতিটি কাজের প্রথম দর্শক ছিলেন, সেই কাছের মানুষটি আর নেই!

তবু মন শক্ত করে উপস্থিত হয়েছিলেন সেই প্রদর্শনীতে। কারণ, তিনি জানতেন— এই আনন্দের দিনটিতে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। পারিজাত বলেন, তাঁর কথা ভেবেই তিনি প্রদর্শনীতে উপস্থিত থেকেছেন। কারণ, তিনি বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। কয়েক বছর আগে যখন এই ছবির শুটিং করেছিলেন, একমাত্র সেই মানুষটি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন কবে বড় পর্দায় দেখবেন ছবিটি। আজ দর্শক ছবিটা দেখছে ঠিকই, কিন্তু সেই মানুষটা আর পারলেন না।

তবু অভিনেত্রী বিশ্বাস করেন, মৃ’ত্যুর পরে যদি কোনও জায়গা থেকে থাকে সেখান থেকেই তিনি দেখতেন সব। প্রসঙ্গত, এই ছবির অভিনয় করতে পেরে আপ্লুত অভিনেত্রী। তবে, মনের গভীরে জমে থাকা হতাশা নিয়ে তিনি বললেন, দিদা তাঁর প্রতিটি কাজ দেখতেন, এমনকি সদ্য শেষ হওয়া ধারাবাহিক ‘মিত্তির বাড়ি’র একটিও পর্ব দেখতে ভোলেননি কখনও। সেই মানুষটি পারিজাতের সবচেয়ে কাছের, তার দিদা। তাই প্রথম ছবির এই সাফল্যটাও দিদার জন্যই উৎসর্গ করেছেন পারিজাত।

তাঁর কথায়, দিদা এমনিতেই পায়ের ব্যথায় খুব একটা হাঁটতে পারতেন না বলে প্রদর্শনীতে না এনে প্রিমিয়ারে আনবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সেটার সম্ভব হলো না। উল্লেখ্য, পারিজাতের জীবনে এই মানুষটি শুধু আত্মীয় নন, ছিলেন তাঁর গল্পের সঙ্গীও। দুজনের শখের মিলও ছিল প্রবল। কিন্তু আচমকা হৃদরোগেই মাত্র কয়েক সেকেন্ডে সবটা শেষ! অভিনেত্রীর গলায় এখনও অবিশ্বাস। হাজার আলো আর প্রশংসার মধ্যেও পারিজাতের চোখে আজ এক গভীর শূন্যতা, জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষকে হারানোর শূন্যতা।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page