প্রয়াত অভিনেত্রীর শেষ ইচ্ছে পূরণ করবেন তার মা। এক মাস হয়ে গেল আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। রেখে দিয়েছেন তার মা, বাবা, দিদি, দুটো পোষ্য এবং প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীকে।
২০ নভেম্বর অভিনেত্রী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার কলকাতার ফ্ল্যাট এখন তালা বন্ধ। আর সেখানে যেতে ইচ্ছে করে না মা শিখা দেবীর। কারন সেই বাড়িময় মেয়ের স্মৃতি ছড়িয়ে রয়েছে আনাচে-কানাচে।
তবে আপনারা হয়তো জানেন না অভিনেত্রী মায়ের কাছে সাধ করে একটা আবদার করেছিলেন। মেয়ে বেঁচে থাকাকালীন সেই আবদার পূরণ করতে পারেননি মা শিখা দেবী। তাই এবার সেই আবদার পূরণ করতে চান তিনি। মেঘ শেষ ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে কলকাতার ফ্ল্যাটে ফিরতে চান শিখা দেবী। অভিনেত্রীর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এক সংবাদ মাধ্যম। সেখানেই শিখা দেবী মেয়ের অপূর্ণ ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন।
শিখা দেবী বলেন গোপালকে খুব ভালবাসতেন মেয়ে মিষ্টি। মিষ্টি হলো অভিনেত্রীর ডাকনাম। নিজের গোপালকে তিনি কোলে নিয়ে থাকতেন সবসময়। পুজো অর্চনা বিজয় পছন্দ ছিল মেয়ের আর ওই কারণেই ভগবান নিজেই স্বয়ং তার সন্তানকে হয়তো নিজের কোলে টেনে নিলেন, এমনই ভাবছেন শিখা দেবী। এখন ঐন্দ্রিলার মা-বাবা বহরমপুরে চলে গিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে থাকবেন?
সেই বাড়ির প্রতিটা কোনায় মিষ্টি। ছোটবেলায় মজা করে মেয়েকে বলতেন ভুল করে তোর নাম মিষ্টি দিয়ে ফেলেছি। উচিত ছিল দুষ্টু নাম দেওয়া। তখন অভিনেত্রী খিলখিল করে হেসে বলতেন দিয়ে যখন ফেলেছ আর কিছু করা যাবে না। সেই স্মৃতি নিয়ে এই বাড়িটাই আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না শিখা দেবী। নার্সিংহোমে যান কিন্তু সেখানেও বেশিক্ষণ বসতে পারেন না। একটা মাসে তাদের হাসিখুশি পরিবারটা ওলট-পালট হয়ে গেল।
ফেসবুকে মেয়েকে নিয়ে যা যা দেখতে পান খবর সবকিছু সংগ্রহ করে রেখে দেন নিজের কাছে। চলে যাওয়ার কিছুদিন আগে মাকে ফোন করে অভিনেত্রী বলেছিলেন মা অনেকগুলো শাড়ি হয়ে গেছে, একটা ওয়ার্ডরোব লাগবে আর শাড়িগুলো গুছিয়ে দিও। অভিনেত্রী নিজে প্রচন্ড টিপটপ থাকতে ভালবাসতেন। শিখা দেবী কথাও দিয়েছিলেন মেয়েকে কিন্তু কাজের ফাঁকে সেই কথা আর রাখতে পারলেন না তিনি। কিন্তু এবার সেটা পূরণ করবেন। শিখা দেবী বললেন বাঁচতে চেয়েছিল মেয়েটা পারল না। মা হয় অন্তত ওয়ার্ডরোবটা অন্তত ওর জন্যেই গড়িয়ে দিই। এভাবেই হয়তো মায়ের কাছে, প্রতিটি দর্শকের কাছে ঐন্দ্রিলা শর্মা চির অমর হয়ে থাকবেন।