বর্তমানে বাংলা ধারাবাহিক এবং ওয়েব সিরিজের জগতে অতি পরিচিত মুখ তিনি। কাজ করেছেন একের পর এক ধারাবাহিকে। মুখ্য চরিত্র থেকে পার্সন চরিত্র এমনকি খল চরিত্রেও নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছেন সৌনক রায় (Sounak Rayy)। তার অভিনয় বারবার মুগ্ধ করছে দর্শকদের। একসময় স্টার জলসার কপালকুণ্ডলা ধারাবাহিকে নবকুমারের চরিত্রে তার অভিনয় মন জয় করেছিল দর্শকদের। এছাড়াও করুণাময়ী রাসমণি, মা মঙ্গলচন্ডী, ঠাকুমার ঝুলি, খেলাঘর ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সৌনক।
তবে ধারাবাহিক ছাড়াও বেশ কয়েকটি শর্ট সিনেমায় কাজ করছেন তিনি। বর্তমানে জি বাংলার অর্গানিক স্টুডিওর দুটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক কার কাছে কই মনের কথা এবং অষ্টমীতে অভিনয় করছেন সৌনক। যদিও দুটি চরিত্রই খল। সম্প্রতি নিজের জীবনের কথা অভিনয় ভাগ করে নিয়েছেন সকলের সঙ্গে। কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তিনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পরিবর্তে অভিনয় এবং ক্রিকেটের প্রতি তার বেশি ঝোঁক ছিল।
ক্লাস সিক্স থেকেই শুরু করেন নাটক এবং ক্রিকেট। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই অভিনয়ের জন্য স্ট্রাগেল শুরু করেন তিনি। সেইসময় পয়সা দিয়ে পোর্টফোলিও বানানোর ক্ষমতা ছিল না তার। ফলে বাধ্য হয়ে বন্ধুর সাহায্যে ফোন ছবি তুলে স্টুডিওতে ঘুরে ঘুরে নিজের ছবি জমা দিতে শুরু করেন সৌনক। শুরু হয় সারা শহর ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দেওয়া। অ্যাকাউন্টেন্সি পাশ করে ভর্তি হন সিএর জন্য কিন্তু অভিনয়ের টানে সিএর পড়াশোনা বন্ধ করে মন দেন থিয়েটারে।
নিজের ছবি ডাস্টবিনে পুড়তে দেখেছেন সৌনক রায়
তবে অভিনয়ের যাত্রা ছিল না মসৃণ। নানান খারাপ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন বারবার। একবার একজন কাস্টিং ডিরেক্টরকে ছবি দিয়ে আসেন তিনি। পরক্ষণে সেখানে গিয়ে তিনি ভিতরে গিয়ে দেখেন সেই ডিরেক্টর সিগারেট খাচ্ছেন এবং তার পাশে রাখা ডাস্টবিনে পুড়ে যাচ্ছে তার ছবি। বেরিয়ে এসে হাতে চা নিয়ে বসে পড়েন তিনি। চোখ দিয়ে ঝরছে জল। তবে সেইদিনই সংকল্প করে নেন এখানেই মাটি কামড়ে পড়ে থাকবেন তিনি। তারপর থেকেই কখনও ভিড়ের দৃশ্যে, কখনও জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: “ও যা ছোঁয় তাই সোনা হয়!” আলাদা থাকা সত্ত্বেও রচনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্বামী প্রবাল বসু
নেপোটিজমের শিকার হয়েছেন অভিনেতা সৌনক রায়
এমনকি একবার একটি ধারাবাহিকে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শেষ করে তিনি দেখেন তার খাওয়ার জন্য পড়ে আসে খালি ডাল আর ভাত। সেটা নিয়েই খেতে বসেন তিনি। তবে অত্যধিক গরমের কারণে মেকআপ রুমে গিয়ে খেতে বসেন তিনি। সেই মুহূর্তে তার মুখের সামনে থেকে থালা টেনে নিয়ে তাকে বের করে দেওয়া হয় বাইরে। অভিনেতা জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে নেপোটিজমেরও শিকার হয়েছেন বহুবার। লুক সেটের পরও কপালে জুটেছে রিজেকশন। তবে কোন কিছুকে পাত্তা না দিয়ে তিনি চালিয়ে গেছেন লড়াই। নিজের আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য্যকে কাজে লাগিয়ে এখনও ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করার জন্য লড়ছেন সৌনক।