জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“দীর্ঘদিন মলের ওয়াশ রুমে ব্যবহার করতাম” মডেলিং থেকে অভিনয়ের যাত্রা নিয়ে মুখ খুললেন নিম ফুলের অভিমন্যু অর্থাৎ রাজা গোস্বামী

\বর্তমানে বিনোদন জগতের একজন অতি জনপ্রিয় মুখ অভিনেতা রাজা গোস্বামী (Raja Goswami)। একের পর এক ধারাবাহিক অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। স্টার জলসার ভালোবাসার ডট কম ধারাবাহিকটি বদলে দেয় তার জীবন। এরপর ছদ্মবেশী, কোজাগরী, সত্যমেব জগতে, খড়কুটো, বিয়ের ফুল, মহাপীঠ তারাপীঠ, ইরাবতীর চুপকথা, ধুলিকণা, বাংলা মিডিয়াম, কার কাছে কই মনের কথা সহ একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন রাজা।

বর্তমানে জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক নিম ফুলের মধুতে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। ধারাবাহিকটিতে অভিমন্যু সেন ওরফে ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। ইতিমধ্যেই তার চরিত্রটি সারা ফেলেছে দর্শকদের মনে। তবে একেবারেই সহজ ছিল না তার অভিনয়ের যাত্রা। উত্তর কলকাতার জোড়াবাগানে একটি ভাড়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অভিনেতা রাজা। এরপর ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় নিজের বাড়ি কেনেন অভিনেতা বাবা। মাধ্যমিকে স্টার নম্বর পাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে সেকেন্ড ডিভিশন হয়ে যায় তার।

”এমন কিছু করিস না যাতে ওকে এইভাবে দেখতে হয়” কেন বলেছিলেন রাজা গোস্বামীর মা?

আবার পরের বছর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পান রাজা। তখন থেকেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়েছিলেন দু চোখে। শুরু হয় মডেলিংয়ের যাত্রা। সঙ্গে ছিল না কেউ। ভর্তি হন একটি মডেলিং সংস্থায়। অনেক কষ্ট করে একটি বিজ্ঞাপনে মডেলিং করার সুযোগ পান অভিনেতা। যদিও সেখানে কাজ ছিল না কিছুই। অভিনেতা জানান “বাড়িতে প্রায় ৪-৫ বার ভিডিওটা দেখিয়ে তারপর আমার মা বাবা চিনতে পেরেছিলেন ওটা তাদের ছেলে। মা বলেছিলেন এমন কাজ করিস না বাবা যেটা এইভাবে দেখতে হচ্ছে।”

ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে কলকাতা ছেড়ে চলে যায় মুম্বাই, কি বললেন অভিনেতা রাজা গোস্বামী

মায়ের কথা শুনেই একপ্রকার জেদ চেপে যায় অভিনেতার মাথায়। কলেজ শেষ হলে হেঁটে হেঁটে টালিগঞ্জ এসে স্টুডিও পাড়ায় ছবি দিয়ে যেতেন তিনি। অপেক্ষা শুধু একটা সুযোগের। তারপর মাঝে শেষ হয় ইঞ্জিনিয়ারিং। সমস্ত বন্ধুরা চাকরি পেয়ে গেছে বাকি তিনি একা। সেই নিয়েই প্রতিবেশীদের কাছে নানান মন্তব্য শুনেছেন তিনি। এরপরই তিনি চলে যায় মুম্বাই। একজন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন তিনি। সেখানে গিয়েও নানান জায়গায় অডিশন দিতে থাকেন রাজা। একদিন রাত্রে ফ্ল্যাট এসে দেখেন ঘর আছে কিন্তু বাথরুম নেই।

আরো পড়ুন: মন্দারের পর অনিকেত-শ্যামলীর মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি! পুরোনো প্রেমিকার কাছে ফিরবে কি অনিকেত?

নেই অভিনয়ের শিক্ষা, মাথায় নেই কারুর হাত, ভালোবাসা ডট কম খুলে দেয় অভিনেতা রাজা গোস্বামীর ভাগ্য

অভিনেতার বন্ধু তাকে জানান ফ্ল্যাট পুনরায় নতুন করানোর কথা জানিয়েছিলেন তারা। মালিকের কাছে যে ছবিটা ছিল সেটা দিয়েই ঘর খুলে বাথরুমে কাজ শুরু করেছেন তারা। এরপর দীর্ঘদিন পাশের মলের বাথরুমে সকালে ব্রাশ করতে চলে যেতেন তিনি। অনেক কষ্টেশিষ্ঠে তিনি জোগাড় করেন একটি ভাড়া বাড়ি। কোনদিনও স্কুলে করেননি নাটক, নেই অভিজ্ঞতা, মাথার ওপর ছিলনা কারুর হাত। এরপরই পুজোর সময় তিনি আসেন কলকাতায়। প্রথমে এক জায়গায় সুযোগ পান জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে। তখনই তার পারিশ্রমিক ছিল ৩০০ টাকা। এরপরই খুলে নয় তার ভাগ্যের চাকা। সুযোগ পান স্টার জলসার ভালোবাসা ডট কম ধারাবাহিকে। ধারাবাহিকটিতে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পান রাজা। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। শুধুমাত্র জেদ, আত্মবিশ্বাস এবং কিছু করে দেখানোর তাগিদেই আজ তিনি হয়ে উঠেছেন সকলের প্রিয় অভিনেতা রাজা গোস্বামী।

 

Ruhi Roy

রুহি রায়, গণ মাধ্যম নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ। সাংবাদিকতার প্রতি টানে এই পেশায় আসা। বিনোদন ক্ষেত্রে লেখায় বিশেষ আগ্রহী। আমার লেখা আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন।