ডেলি সোপ (Daily soap) বা সিরিয়াল ভারতবাসীর কাছে একটি বিনোদনের (entertainment) অন্যতম অংশ। বলতে গেলে প্রাত্যহিক দিনের একটি অঙ্গ। অনেকেই এমন আছে বিকেল পাঁচটা বাজলেই টিভির(TV) সামনে তাদের প্রিয় সিরিয়াল চালিয়ে বসেন। বাঙালি ও এর ব্যতিক্রম নয়। বাঙালির(Bengali) কাছে বড় সিরিয়াল বিনোদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর সাথে জড়িয়ে হাজারো মানুষের আবেগ। সিরিয়াল হিরো হিরোইন কাঁদলে এমনও মানুষ আছে যাদের চোখে জল আসে। তাদের খুশিতেই তারা নিজেদের খুশি খুঁজে পায়।
বাংলায় মূলত জি বাংলা এবং স্টার জলসার জনপ্রিয়তা বরাবরই তুঙ্গে তাদের অভিনব গল্প এবং নায়ক নায়িকাকে ঘিরে। এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে প্রায়শই দেখা যায় অনুরাগীদের ঠান্ডা লড়াই। কেউ বলে জি বাংলা স্টার জলসা কে কপি করছে আবার কেউ বলে স্টার জলসা জি বাংলা কে হার মানাতেই একই সময় আনেন একই রকম গল্প। তবে সম্পূর্ণটাই নেটিজেনদের মতামত।
গল্পে নতুনত্ব চমক আনতে জি বাংলার জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে নতুন চমক দেওয়ার পরিবর্তে তারা হতাশ করে ফেলছেন অনুরাগীদের। কি সেই চমক? কিছুদিন আগেই জি বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক কোন গোপনে মন ভেসেছে তে, শ্যামলীকে নিজের বরকে রোহিনীর সাথে বিয়ে দিতে দেখা যায়। যে কিনা অতীতে হাজার বার শ্যামলী ও তার বরের সম্পর্ক ভাঙার হাজারো চেষ্টা করেছে। সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে শ্যামলী প্রত্যেকবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু হঠাৎ তারই সাথে বিয়ে দিলো নিজের বরকে!
অন্যদিকে জি বাংলার আরেক ধারাবাহিক ফুলকিতে, দেখা যেতে চলেছে একটি ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী ফুলকি ও তার স্বামী নাকি আদতে ভাই বোন! ফুলকি নাকি তারই শ্বশুরবাড়ির একসময় হারিয়ে যাওয়া মেয়ে। প্রায় দেড় বছর সংসার করার পর এই খবর যেমন সিরিয়ালের হিরো হিরোইন কে হতাশ করেছে তেমনি অনুরাগীদের ও। সমাজমাধ্যমে এই প্রমো পোস্ট এর সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল পরিমাণে ট্রোল এর শিকার হচ্ছে জি বাংলা তথা ফুলকি।
আরও পড়ুনঃ তুঙ্গে বিনোদিনী তরজা! রাম কমলকে ‘হাইব্রিড মায়েস্ত্র’ বলে কটাক্ষ সৃজিতের! যোগ্য জবাব দিলেন বিনোদিনীর পরিচালক
হাজারো মিম পেজে তৈরি হচ্ছে মিম, নেটিজেনদের একাংশ আবার বলছে এমনটা যদি সত্যি হয় তাহলে তারা এই সিরিয়াল আর দেখবেন না। এ তো না হয় সিরিয়ালের প্লট মাত্র, কিন্তু সিরিয়াল মানেই তো সমাজের চিত্র তুলে ধরা যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো মানুষের আবেগ। এতে কি প্রভাব পড়ছে সমাজের উপর? আদিও কি এতে কোন ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে নাকি সম্পূর্ণটাই নেতিবাচক হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
সিরিয়ালে প্রায় সই দেখানো হয়ে থাকে হিরো অথবা হিরোইনকে মারতে ভিলেনের চূড়ান্ত মারণ ফাঁদ। কখনো কখনো ছুরি, ছিন্তাই, কিডন্যাপ ইত্যাদি। কিন্তু সিরিয়াল যে মানুষের জীবনে এক অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে টিআরপি বাড়াতে প্রযোজকের মাথা থেকে এ কথা বোধায় উধাও হয়ে যাচ্ছে। যে সিরিয়ালের কাজ সমাজিক চিত্র তুলে ধরা সেই সিরিয়ালই এখন হাস্যরসের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইসব সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ কী? এতে মানুষের জীবনে প্রভাব পড়ছে কতটা?