গান দিয়েই তাঁর পরিচিতি, তবে গানের বাইরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও একসময় প্রচুর জলঘোলা হয়েছিল তাঁকে নিয়ে। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে গায়িকা ‘পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়’র (Pousali Banerjee)। জি বাংলার সারেগামাপার (Sa Re Ga Ma Pa) মঞ্চ থেকে উঠে আসা এই গায়িকা আজ লোকগানের জগতে এক প্রতিষ্ঠিত নাম। শান্তিনিকেতনেই তাঁর বড় হওয়া, পড়াশোনা ও প্রেম, আর সেখানেই স্বামী ‘পারিজাত দত্ত’কে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ (Didi No.1) -এ খেলতে আসা নিয়ে এ কেমন অপবাদ পেলেন তিনি?
বেশ অনেকদিন আগে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এ স্বামীকে নিয়ে খেলতে আসেন তিনি, জীবনের সুন্দর মুহূর্তও ভাগ করে নিয়েছিলেন টেলিভিশনের পর্দায়। তবে তার কিছুদিন পরেই ফের সেই একই অনুষ্ঠানে অভিনেতা ‘হৃতজিৎ চট্টোপাধ্যায়’ (Hritojeet Chottopadhay) এর সঙ্গে পৌষালীকে দেখে শুরু হয় নতুন গুঞ্জন। এরপর একসঙ্গে ছবি, কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত ও কথাবার্তার জেরে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে নানা কানাঘুষো শুরু হয়ে যায় ইন্ডাস্ট্রি এবং তার বাইরেও। দর্শকের একাংশ মনে করতে থাকেন, হয়তো তাদের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
এমনকি পৌষালীর মাকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল সেই সময়, তাঁদের মেয়ের কি বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে? হৃতজিতের সাথে তাঁর মেয়ের কি সস্পর্ক?— এই সমস্ত বিভ্রান্তিকর জল্পনা আর মিথ্যে রটনায় ক্ষুব্ধ হয়েই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মুখ খোলেন গায়িকা। পৌষালী বললেন, “ঘটনাটি ছিল নিছক বন্ধুত্বের একটি পর্ব। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এ একটি বন্ধু স্পেশাল পর্বে অংশ নিয়েছিলাম আমি আর হৃতজিৎ। কিন্তু সেই বন্ধুত্বের ফ্রেমকেই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হবে, ভাবিনি কোনও দিন।”
সমাজে যা কিছুই হয়ে যাক না কেন, মেয়েদের দিকেই বেশি আঙুল ওঠে। এই অপপ্রচারে আমি একাই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলাম। সত্যি জানার চেয়ে, গুজব বিশ্বাস করাই যেন অনেকের কাছে সহজ। তবে আজকের আমি আর সেদিনের আমির মধ্যে অনেক পার্থক্য, এখন আমি আর লোককে বোঝাতে যায়না যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। এটা জানি যে ৯৪ জন যদি আমায় অবিশ্বাস করেন, তাহলেও ৪ জন তো থাকবেই যারা আমায় বিশ্বাস করবে।”
এই ঘটনায় তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছিল বলেও জানালেন গায়িকা। চার বছর আগের সেই ঘটনা আজও তাঁর মনের ক্ষত হয়ে আছে। পৌষালী বলেন, “তৎকালীন সময়ে টেলিভিশনে আসা মানেই এ এক বড় সুযোগ বলেই ভেবেছিলেন তাই না করিনি, কিন্তু তার ফল যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে, তা ভাবেননি।” শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও নানান কটুক্তি করেন পৌষালীকে নিয়ে, কারণ এই অভিযোগ সাধারণ একটি পরিবারের পক্ষে মেনে নেওয়া সহজ ছিল না, বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ মরণ-বাঁচনের প্রশ্ন তবুও মহান হওয়া কি ছাড়া যায়? “সবেতেই বেশি পাকামি না করলেই নয়!” অনির্বাণের বারণ সত্ত্বেও সন্তানের জন্ম দেবে সে! তার মৃত্যুতেই কী শেষ হবে ধারাবাহিক?
তবে সব সময় যিনি পৌষালীর পাশে প্রতিটি মুহূর্তে থেকেছেন, তিনি হলেন তাঁর স্বামী পারিজাত দত্ত। পৌষালী অকপটে বললেন এদিন, “আমার স্বামীর মতো সুস্থ মানসিকতার মানুষ খুব কমই দেখা যায়। যখন ভেঙে পড়েছিলাম, তখন পারিজাতই টেনে বের করেছিল অন্ধকার থেকে।” জীবনের এই কঠিন সময় পেরিয়ে আজ তিনি কৃতজ্ঞতা জানালেন সেই মানুষের প্রতি, যিনি শুধু একজন স্বামী নন, বরং পৌষালীর শক্ত মেরুদণ্ডও।