ছোট পর্দার অভিনেতা ‘অভিষেক বোস’ (Abhishek Bose) বরাবরই এক পরিচিত মুখ। জি বাংলায় ‘নেতাজি’ (Netaji) থেকে ‘ফুলকি’র (Phulki) রোহিত— প্রতিটি চরিত্রেই তিনি নিখুঁত অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন। তবে অভিনয় জীবনের পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে। কখনও ‘দিয়া মুখার্জী’র (Diya Mukherjee) সাথে মাখোমাখো প্রেম, কখনও ‘সুরভী মল্লিক’ (Surabhi Mallick) এর সঙ্গে বিয়ের জল্পনা, সবশেষে সম্পর্কই ভেঙে দেওয়ার অভ্যাসে। একাধিক সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং প্রাক্তনের বান্ধবীর সাথে সম্পর্ক থেকে বিয়ে, এটাই যেন অভিনেতার চরিত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সমাজ মাধ্যমে এখন তাঁকে নিয়ে কথা উঠলেই শুরু হয় কটাক্ষের বন্যা।এমন পরিস্থিতিতেই তাঁর জীবনে প্রবেশ করেন শার্লি মোদক। ধারাবাহিকের সেটে আলাপ হলেও শুরুটা ছিল নিছক বন্ধুত্বের। দুজনেই তখন অতীতের সম্পর্কের যন্ত্রণায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, নতুন সম্পর্কে জড়ানোর সাহসটুকু পর্যন্ত ছিল না। তবে তাঁদের এই সম্পর্কও একরকম জল্পনার কেন্দ্রে চলে আসে যখন ফুলকির পরিচালকের পোস্ট, যেখানে একসঙ্গে আইবুড়ো ভাত খাচ্ছেন অভিষেক-শার্লির ছবি ভাইরাল হয়। দর্শকরা যেন আকাশ থেকে পড়েন, যদিও গুঞ্জন ছিল প্রেমের, তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি!
আর ঠিক পরদিনই গোপনে আইনত বিয়ে সারেন দুজনে। কোনও মিডিয়ার শোরগোল ছাড়াই, কেবল প্রিয়জনদের উপস্থিতিতে নিজেদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন অভিষেক-শার্লি। এদিন বিয়ের পর প্রথমবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন দুজনে। শার্লির কপালে লাল টিপ, মাথায় সিঁদুর, ইতিমধ্যেই মধুচন্দ্রিমা সেরে ফিরেছেন পাহাড় থেকে। অভিষেক অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, কাশ্মীর যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু আর হলো না। এবার অতীতের সস্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন দুজনে। অভিষেক বলেন, অতীতে যে কটা সম্পর্কে জড়িয়েছেন, সেই সবাই তাঁর ক্ষত জায়গায় বারবার আঘাত করেছে।
এমনকি সস্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেও অভিষেকের বন্ধুদের তাঁর বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া হয়েছে এই বলে যে সে খুব খারাপ। অভিনেতা জানান, একটা সময় মনের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এতোবার মানুসিকভাবে আহত হয়েছেন যে আর সম্পর্কে জড়াতে চাননি। তবুও শার্লির সাথে দেখা হওয়ার পর একে অপরকে বিশ্বাসের মধ্যে দিয়ে আস্তে আস্তে তৈরি হতে থাকে নির্ভরতা। দীর্ঘ একাকীত্ব পেরিয়ে শার্লি খুঁজে পান এমন এক মানুষকে যিনি তাঁকে জোর করে নয়, সহানুভূতির সঙ্গে ভালোবেসেছেন। অভিষেকও স্বীকার করেছেন, বহু ব্যর্থতার পর এই সম্পর্কেই তিনি স্থিরতা খুঁজে পেয়েছেন।
বিয়ের পর সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, অতীতে এমন কথাও শুনতে হয়েছে যে তিনি এতটাই খারাপ মানুষ, যে তাঁর মরে যাওয়া উচিত। আবার দল তৈরী করেও বন্ধুদের মধ্যেও তাঁকে হেয় করার চেষ্টা হয়েছে। প্রাক্তন প্রেমিকা সুরভীর সম্পর্কেই যে অভিষেক এই কটাক্ষ করেছেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারোরই।শার্লিও এদিন জানান, নিজের সম্পর্ক ভেঙে একা থাকার অভিজ্ঞতা তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। দুজনেই মেনে নিয়েছেন, প্রেম না থাকলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা আর বোঝাপড়া তাঁদেরকে এক করেছে। শার্লি এদিন বলেছেন, “একটা সম্পর্কে যখন দুজনের মধ্যে একজন কে সব সময়ই যদি এটা অনুভব করানো হয়
আরও পড়ুনঃ জুটিতে লুটি! প্রথমবার একসঙ্গে ছোট পর্দায় অর্জুন-দেবচন্দ্রিমা! বাস্তবতার ভিড়ে ভালোবাসার গল্প বলবে এই ধারাবাহিক? নতুন প্রেমের সংজ্ঞা লিখতে আসছে ‘তোমাকে বুঝিনা প্রিয়’!
যে আজ তুমি যা কিছু সেটা শুধু আমার জন্য, তখন ওটা প্রেমের সম্পর্ক নয়, বশ্যতার সম্পর্ক।” অভিনেতা বলেন, তিনি আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন এবার একেবারে বিয়ে করবেন প্রেম নয়, সেই মতন শার্লিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। শার্লিও বলেন, “আমি আগে থেকেই জানতাম ও আমার জন্যই হয়তো এসেছে, প্রেম ছিল না কিন্তু ওই অনুভূতিটা ছিল।” দুজনে বলেন, “আমরা নিজেদের বিয়ে নিজেরাই দিয়েছি, মা-বাবা অবাক হয়ে গেছিলেন প্রথমে।” সবশেষে দুজনের বলেন — “যখন দুজনেই খারাপ, তখন একসঙ্গে থাকলেই ভালো।” অতীতের ছায়া যেন বর্তমানে না পড়ে, সুখী হয় তাদের দাম্পত্য এটাই এখন কাম্য।