আজকের টলিউডের (Tollywood) অন্যতম একজন সাহসী কণ্ঠ হলেন অভিনেত্রী ‘ঋতাভরী চক্রবর্তী’ (Ritabhari Chakraborty) । তাঁর অভিনয় যাত্রা খুব একটা সহজ পথে চলেনি। বরং চরিত্রের গভীরতা, অভিনয়ের পরিশ্রম এবং নিজস্বতা নিয়ে তিনি ক্রমাগত নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরেছেন পর্দায়। বর্তমানে বাংলা বিনোদন জগতে ঋতাভরী এখন এক উজ্জ্বল নাম, যিনি বরাবর গ্ল্যামারের বাইরে গিয়েও অভিনয়কেই নিজের অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন।
সম্প্রতি মৈনাক ভৌমিক পরিচালিত ছবি ‘বাৎসরিক’-এ ঋতাভরী এক বিধবা নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রে তিনি সম্পূর্ণ মেকআপহীন, স্বাভাবিক এক বিধবা নারীর জীবনযন্ত্রণা তুলে ধরেছেন পর্দায়। তাঁর মতে, চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য ‘মেকআপ’ নয়, দরকার অন্তর থেকে অনুভব করা। তিনি বলেন, “আমি বরাবরই অভিনয়টাকেই প্রাধান্য দিই। অনেকেই নিজেদের স্টার ভাবে, আমি নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবেই দেখি। অন্যদের মতো নামের আগে স্টার বসাতে রাজি নই।”
ঋতাভরীর এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু ‘বাৎসরিক’ ছবির ক্ষেত্রেই নয়, একইসঙ্গে তাঁর আরেক আসন্ন ছবি ‘শাখাপ্রশাখা’তেও দেখা যাবে। এই দুই ছবিতেই তিনি সদ্য বিধবা হয়েছেন এমন নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যেখানে চকমকে গ্ল্যামার বা সাজসজ্জা একেবারেই অনুপস্থিত। অভিনেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এমন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রয়োজন নেই, বরং বাস্তব জীবনের চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ। সব নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে তিনি বলেন, “উগ্র সাজ দেখতে হলে ইন্টারনেটে অনেক ছবি আছে দেখে নেবেন।”
তিনি চান পর্দার তাকে যেন সবাই সেই চরিত্রের নামেই চেনে, ঋতাভরী হিসেবে নয়। তবে শুধু পর্দায় নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও ঋতাভরী বেশ স্পষ্টবাদী। ট্রোলিং, বডি শেমিং বা নারীদের নিয়ে সমাজের কটাক্ষ— এই সব বিষয়ে বরাবরই তিনি মুখ খুলেছেন। নিজের শরীর বা চেহারা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ঋতাভরী বিশ্বাস করেন, নারী হয়ে সমাজে বাঁচার অর্থই হচ্ছে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করে চলা। সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এমন কোনও গুজব রয়েছে কি যা তিনি সত্যি হতে দেখতে চান?
আরও পড়ুনঃ “প্রথম ভালবাসা আমার, স্ত্রীর মতোই ছিল!”— আর্থিক অভাবে ৯ বছরের সম্পর্ক ভাঙছে অভিনেতা ঋষভ বসুর!
হেসে ঋতাভরীর জবাব দেন, “হ্যাঁ, এমন একটা গুজব প্রচলিত আছে যে আমার নাকি একজন বাবু আছে, যার প্রচুর টাকা! সে আমার সব খরচ চালায়, আমি কিছুই করি না। আমি বরং চাই, এই গুজবটাই একদিন সত্যি হোক। অনেক বছর ধরেই খুঁজছি। সুমিতকে অনেকবার বলেছি, এমন একটা বাবু দরকার, যে গুচি-প্রাডা কিনে দেবে, আমি আর কাজ না করলেও চলবে!” এমন মজার উত্তরই যেন আবারও প্রমাণ করে দিল, ঋতাভরীর সাহসিকতা কেবল অভিনয়েই নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবনে সমান স্বতন্ত্র।