রাজনীতি আর বিনোদন—দুই জগৎ যেন মিশে যাচ্ছে এক সুতোয়! একদিকে যেমন টলিউড তারকারা পা রাখছেন রাজনীতির ময়দানে, অন্যদিকে রাজনীতিবিদদেরও দেখা মিলছে সিনেমা বা মঞ্চনাটকের দুনিয়ায়। এই মেলবন্ধন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও, একেবারে আলাদা ব্যাখ্যা দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, রাজনীতি এবং অভিনয় একে অপরের পরিপূরক হতে পারে, বরং এই আদানপ্রদান থাকলে দুর্নীতিও কম হতে পারে!
২০১৫ সালের ঘটনা। কলকাতার এক প্রথম সারির প্রযোজকের মামলা লড়তে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন দিল্লি থেকে আসা তৃণমূল সাংসদ-আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জেতেন সেই মামলাও। আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে নিজের চেম্বারে ফিরতেই প্রযোজক এসে হাজির—হাতে ফুল ও মিষ্টি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পর সেই প্রযোজকের প্রশ্ন, “আপনি তো দুর্দান্ত অভিনেতা! সিনেমা করবেন?” উত্তরে হেসে কল্যাণ বলেছিলেন, “হ্যাঁ, ওটাই বাকি…”। যদিও এতদিনেও অভিনয়ে দেখা যায়নি তাঁকে।
সম্প্রতি পরিচালক অরিন্দম শীলের ছবিতে ‘কর্পূর’ চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। অন্যদিকে সাংসদ পার্থ ভৌমিক তো ইতিমধ্যেই কাজ করেছেন সিনেমা এবং নাটকে। এবার তাঁকে দেখা যাবে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবিতে, যেখানে তিনি অভিনয় করবেন শ্রীরামকৃষ্ণদেব-এর চরিত্রে। এমনকি কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা যাবে সেই ছবিতে। অর্থাৎ, একের পর এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিনোদন জগতে পা রাখছেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, রাজনীতি আর বিনোদন দুই-ই উন্মুক্ত মঞ্চ। তাঁর কথায়, “যার মেধা আছে, সে নিজের জায়গা করে নিতে পারে। আর সঠিক আয় থাকলে রাজনীতিতে দুর্নীতি কমে।” দেব, শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়—এই সব তারকাদের উদাহরণ টেনে তিনি জানান, “তাঁদের নামে কোনও দুর্নীতির খবর শোনা যায়নি।” সেই কারণেই রাজনীতির সঙ্গে অভিনয়ের সম্পর্ককে নেতিবাচক চোখে দেখেন না কল্যাণ।
আরও পড়ুন: জন্মদিন উদযাপন করতে গিয়েই বিপদ! শহরতলির রিসর্টে হাইপ্রোফাইল পার্টি, হানা দিল পুলিশ! আবগারি অনুমতি ছাড়াই চলছিল গাঁ’জা সেবন! তদন্তে নাম জড়াল জনপ্রিয় গায়িকার!
এই আলোচনা সত্ত্বেও, অভিনয়ে আসার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। কল্যাণ বলেন, “আমার স্থায়ী আয় আইন পেশা থেকেই। ওটাই যথেষ্ট।” যদিও নিয়মিত সিনেমা দেখেন তিনি। কে ভালো লাগে? জানতে চাওয়া হলে বলেন, “প্রত্যেকেই ভালো কাজ করেন। বিনোদন থেকে রাজনীতিতে আসুন বা রাজনীতি থেকে বিনোদনে যান।” শেষে একটু লাজুক স্বীকারোক্তি—অরুণিমা ঘোষের অভিনয় তাঁর বিশেষ ভালো লেগেছে। এমনকি, তাঁর সঙ্গে একদিন দেখা করার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।