জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

মানবিকতার সেরা উদাহরণ, অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে একফ্রেমে টলিকুইন কোয়েল! কলকাতায় ‘সিতারে জমিন পর’-এর বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে আরও এক ‘কোয়েল’কে পেয়ে কাছে টেনে নিলেন তিনি! বিশেষ শিশুদের বন্ধু হয়ে উঠলেন টলিউড রানী!

টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেও, ‘কোয়েল মল্লিক’ (Koel Mallick)-এর কাছে তারকাসুলভ চাকচিক্যের চেয়েও বেশি মূল্যবান মানুষের ভালবাসা ও সহমর্মিতা। সেটাই আবার প্রমাণ হলো ‘সিতারে জমিন পর’-এর (Sitaare Zameen Par) বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে তাঁর মধুর উপস্থিতিতে। অটিস্টিক শিশু এবং কিশোর–কিশোরীদের নিয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন একেবারে নিজস্ব, নির্লিপ্ত ভদ্রস্থ এক মুখ। কোনও ভিআইপি দূরত্ব নয়, হলভরতি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন দর্শকের ভিড়ে কোয়েলও হয়ে উঠেছিলেন তাদেরই ‘কোয়েল দিদি’।

সিনেমা শুরুর আগে প্রত্যেকের সঙ্গেই আলাপ, হাসি আর হাতছানিতে সময় কাটালেন অভিনেত্রী। পর্দায় আমির খানের সংবেদনশীল গল্প যেমন ছেলেমেয়েদের চোখে খুশির ঝলক আনে, ঠিক তেমনই কোয়েলের সান্নিধ্যে তাদের মুখেও ফুটে উঠল নিখাদ উচ্ছ্বাস। নিজেরই নামের আরেকটি ছোট্ট ‘কোয়েল’কে কাছে টেনে নিলেন তারকা, যেন দর্শকাসনে বসা অভিভাবকদের বুঝিয়ে দিলেন, সত্যিকারের বড় হওয়া মানে মানুষের ভেতরের শিশুকে আঁকড়ে বাঁচা।

সিনেমা শেষে অভিনেত্রী স্পষ্ট করেই বললেন, “অটিজম বা অন্য নিউরোলজিক্যাল সমস্যার কথা চেপে রাখা নয়, ছোটবেলা থেকে সচেতন হলেই এগিয়ে দেওয়া যায় শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশকে।” তাঁর বক্তব্যে ছিল এক ছাপানো বার্তার স্নিগ্ধ ভঙ্গি। তিনি আরও বলেন, “বদল আনতে হলে গল্প বলতে হবে, আর সেই গল্পের ভাষা হতে পারে সিনেমা।” কোয়েলের মতে, ‘তারে জমিন পর’-এর মতোই ‘সিতারে জমিন পর’ বহু পরিবারকে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার প্রেরণা জোগাবে।

শিশুরা যখন তাঁকে ঘিরে সেলফি তুলতে ব্যস্ত, অভিনেত্রী হাসতে হাসতেই সবার মুঠোফোন টেনে নিলেন— যাতে ২০০ জনের মধ্যে কেউ বাদ না যায় সেই ছবির ফ্রেম থেকে। উপস্থিত অনেকেই শেয়ার করলেন, “এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি তিনি সুপারস্টার, যেন বাড়ির দিদি।” সমাজমাধ্যমে আপলোড হওয়া সেই ভিডিওগুলো তাই ছড়িয়ে দিচ্ছে একটাই বার্তা— সত্যিকারের জনপ্রিয়তা প্রমাণ হয় ক্যামেরার ফ্ল্যাশে নয়, মানুষের চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়া আনন্দে।

অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে কোয়েলের কথোপকথন এবং ব্যাবহার দেখে অত্যন্ত আপ্লুত দর্শকমহল। সমাজ মাধ্যমে সেই ভিডিও প্রকাশ হতেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। কেউ বলছেন, “নিজেকে সুপারস্টার প্রমাণ করতে অথবা জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পিয়ারের প্রয়োজন হয় না প্রয়োজন হয় মানবিকতা ও শিক্ষার! যেটা কয়েলের মধ্যে আছে বলেই উনি টলিকুইন।” কোয়েল নিঃশব্দে মনে করালেন, বড় পর্দার বাইরে তাঁর আসল পরিচয়— সাদা মনের মানুষ, যাঁর কাছে সৌন্দর্যের চেয়ে সমানুভূতিই জীবনের আধার।

Rimi Datta

রিমি দত্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কপি রাইটার হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় চার বছরের অভিজ্ঞতা।