টেলিভিশনের জনপ্রিয় “বামাক্ষ্যাপা” (Sadhak Bamakhyapa) অবতারের পর এবার বড় পর্দায় সাধক বামাক্ষ্যাপা হয়ে হাজির হচ্ছেন ‘সব্যসাচী চৌধুরী’ (Sabyasachi Chowdhury)। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল তাঁর প্রথম বায়োপিক প্রজেক্ট হিসেবে বেছে নিয়েছেন উনিশ শতকের এই তন্ত্রসাধকের জীবন, যেখানে কিংবদন্তি সাধকের অসামান্য আধ্যাত্মিক যাত্রা, তারাপীঠের অলৌকিক আখ্যান ও সামাজিক দ্বন্দ্বগুলিকে নতুন করে তুলে ধরা হবে। গত সপ্তাহে ছবির শুভ মহরত সেরে ফেলেছে ইউনিট।
সায়ন্তন, চিত্রগ্রাহক সৌমিক হালদার, সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত-সহ পুরো টিম শিল্পীত পুজো দিয়ে শুটিং শুরুর মন্ত্র পড়েছেন। মা তারার আবির্ভাবে থাকবেন সবার প্রিয় অভিনেত্রী ‘পায়েল দে’ (Payel De)। টেলিভিশনে দেবী রূপে যাঁর উপস্থিতি বহুদিন ধরে দর্শককে আকর্ষণ করেছে, এবার সিলভার স্ক্রিনে তিনি হলেন বামাক্ষ্যাপার সাধনার কেন্দ্রবিন্দু। সাহেব চট্টোপাধ্যায় থাকছেন গুরুত্বপূর্ণ এক তাত্ত্বিক চরিত্রে, যাঁর উপস্থিতি সাধকের আধ্যাত্মিক দ্বন্দ্বকে আরও দাঁর করাবে বলে নির্মাতাদের বিশ্বাস।
সঙ্গীতে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত আশ্রয় নিচ্ছেন বাউল, শ্যামা সঙ্গীত আর মন্দিরী ধ্রুপদের মিশ্রণে—যে সুর দর্শককে তারাপীঠের শ্মশান-সন্নিহিত পরিবেশে নিয়ে যাবে। সব্যসাচীর প্রস্তুতি এবার দ্বিমুখী। একদিকে বড় চুল, প্রগাঢ় দাড়ি, তন্ত্রসাধকের গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তুলতে দেহী রূপান্তর, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে লিখে ফেলা চিত্রনাট্যে প্রতিটি দৃশ্য ও সংলাপে নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি যোগ করা। অভিনেতা স্পষ্ট জানিয়েছেন—এই চরিত্রটির ভার বহন করতে আপাতত অন্য কোনও প্রজেক্টে সই করেননি।
তাঁর কথায়, “বামাক্ষ্যাপার দর্শন ধারণ করতে হলে গোটা মন-প্রাণ সঁপে দিতে হয়, সেই দায়বদ্ধতার বাইরে তাল মিলিয়ে আর কিছু করতে ইচ্ছে হয়নি।” পরিচালকের কাছেও ছবিটি এক বড় পদক্ষেপ। অতীতে থ্রিলার বানালেও বায়োপিকে কাজ তাঁর প্রথম। তিনি বলছেন, “বামাক্ষ্যাপা কেবল ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নন, বাংলার লোকজ সংস্কৃতি আর বিদ্রোহী চেতনারও প্রতীক। সেই সত্তাকে রূপালি পর্দার উপযোগী করতে গবেষণা, লোকেশন, পোশাক ও আলোর পরিকল্পনায় আমরা কোনও খামতি রাখছি না।”
আরও পড়ুনঃ “অনেক মেধাবী ও পরিশ্রমী নারীরা সংসারের জন্য নিজের ইচ্ছা এবং পেশাকে জলাঞ্জলি দিতে বাধ্য হয়!” — নারীর সংগ্রাম নিয়ে খোলামেলা সোনালী! ‘মিত্তির বাড়ি’তে তপতীর ভূমিকায় বাস্তবের গল্প বলছেন তিনি! সংসারে লড়াই করে মেয়েরাও ঘুরে দাঁড়াতে পারে, বার্তা তাঁর!
ইউনিট সূত্রে খবর, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহেই শুরু হবে টানা শুট, প্রথম পর্যায়ে বীরভূম ও বর্ধমানের প্রকৃত মন্দির-মঠে শ্যুটিং হবে, তারপর স্টুডিয়ো সেটে পুনর্গঠন। প্রযোজকদের আশা, দেবী আর সাধকের সম্পর্কের আধ্যাত্মিক আবহ, তারাপীঠের মৃত্যুঞ্জয়ী স্তোত্র আর বামাক্ষ্যাপার মানবিক দিক—সব মিলিয়ে এই ছবি দর্শকের কাছে শুধু এক ঐতিহাসিক কাহিনি নয়, বরং আত্মিক অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে। শ্যুটিং শেষ হলে ২০২৬ সালে দুর্গাপুজোর আগেই মুক্তির পরিকল্পনা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।