টেলিভিশনের পর্দায় কিংবা মঞ্চনাটকে, তাঁর উপস্থিতি মানেই বিশ্বাসযোগ্যতা। চরিত্র যাই হোক না কেন, অভিনয়ের খুঁটিনাটি যত্নে ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁর অনন্য। কথা হচ্ছে অভিনেত্রী মানসী সিনহা–র। বাংলা বিনোদন জগতের এক পরিণত মুখ তিনি, যাঁর অভিনয় ভোলার নয়। বহু নাটকপ্রেমী দর্শকের কাছে তিনি শুধুই একজন অভিনেত্রী নন, বরং আবেগ ও বাস্তবতার সেতুবন্ধ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়েও খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন, যা আবারও তাঁকে করে তুলেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ছোট পর্দা হোক কিংবা বড়, মানসী সিনহার অভিনয় সব সময়ই দর্শকদের ছুঁয়ে গেছে। বিশেষ করে বাংলা নাট্যজগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ‘পটল কুমার গানওয়ালা’, ‘ভুতু’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’- র মতো একাধিক ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। একই সঙ্গে বড় পর্দাতেও তাঁর অবদান প্রশংসনীয়—“আলো”, “গয়নার বাক্স”, “অবশেষে”, “একটু সরে বসুন”–এর মতো একাধিক সিনেমায় তাঁর অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটে গেছে।
যে কোনও চরিত্রে অভিনয়ের সময় তিনি চরিত্রের গভীরে ঢুকে পড়েন। ফলে দর্শকও বিশ্বাস করতে শুরু করে তাঁর চরিত্রকে। এতটা আত্মস্থ হওয়া একমাত্র তখনই সম্ভব, যখন একজন শিল্পী নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন। সেই আত্মবিশ্বাসই তাঁকে গড়ে তুলেছে আলাদা করে। এমনকি বাস্তব জীবনের বহু প্রসঙ্গে তিনি সরব হয়েছেন, নিজের মত জানাতে দ্বিধা করেননি।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে মানসী স্পষ্ট জানান, “আমি কখনও রাজনীতি নিয়ে ভাবিনি। একজন অভিনেত্রীর মতো যেভাবে বিনোদনে সম্পূর্ণ সময় দিচ্ছি, ঠিক সেইভাবেই রাজনীতিতেও সম্পূর্ণ সময় দিতে হয়। আর সেই দায়িত্ব নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” অর্থাৎ তিনি মনে করেন, রাজনীতি হল একটি পূর্ণকালীন দায়িত্ব, যেখানে অংশ নিতে গেলে ১০০ শতাংশ সময় ও মনোযোগ উত্সর্গ করতে হয়।
নিজের মতামত জানাতে গিয়ে মানসী বলেন, “আমি আগাগোড়া বামপন্থায় বিশ্বাস করি। কারণ বামপন্থা মানে সকলকে নিয়ে চলা। কারও একচ্ছত্র আধিপত্য নয়।” তাঁর মতে, একটি সমাজকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে গেলে একসঙ্গে চলার ভাবনাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। এবং সেটাই তিনি পেয়েছেন বামপন্থার দর্শনে।
আরও পড়ুনঃ ফুলের ছোঁয়ায় জ্ঞান ফিরল আর্যর, কিন্তু অপু নিখোঁজ! তারা সুন্দরী মায়ের সতর্কবার্তা সত্যি প্রমাণিত, মেঘরাজ অপ’হরণ করেছে অপুকে! আর্য কি পারবে অপুকে বাঁচাতে?
সাক্ষাৎকারের শেষে তিনি আরও জানান, “প্রত্যেক রাজনৈতিক দলে ভালো এবং খারাপ মানুষ থাকে। আমি ভালো মানুষদের শ্রদ্ধা করি, কিন্তু খারাপদের প্রতি আমার কোন সহানুভূতি নেই।” তাঁর এই মন্তব্য প্রমাণ করে, তিনি রাজনৈতিক বিশ্বাসের দিক থেকেও যুক্তিবাদী ও মানবিক। রাজনীতির প্রতি একধরনের শ্রদ্ধাবোধ তাঁর আছে, তবে নিজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে চান না।