বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, গার্হস্থ্য নি’র্যাতন এবং পারিবারিক অবহেলা-এই সব মিলিয়ে ‘কুমার শানু’কে (Kumar Sanu) ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কে উত্তাল সমাজ মাধ্যম থেকে সাংস্কৃতিক মহল। সঙ্গীতজগতে দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য হলেও, ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্ক যেন সেই জনপ্রিয়তায় কালো ছায়া ফেলে দিয়েছে। সেই বিতর্কের মধ্যেই সম্প্রতি প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যের (Rita Bhattacharya) বক্তব্য নিয়ে আইনত প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছেন কুমার শানু।
তাঁর অভিযোগ, কিছু মিথ্যে তথ্যের মাধ্যমে তাঁর সুনাম ও পারিবারিক সম্মান ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, রীতা ভট্টাচার্য বেশ স্পষ্ট করেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, কুমার শানুর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে থাকাকালীনই তিনি নানা ধরনের অবহেলা ও নির্যা’তনের শিকার হয়েছেন। এমনকি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও আর্থিক অনটনে পড়তে হয় তাঁকে। দুই সন্তানকে নিয়ে দিন কাটানোর মতো সামান্য অর্থ জোগানও না থাকায় তাঁকে নিজের গয়না পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল।
এতগুলো মানুষকে নিয়ে একশ টাকার দিন চালাতেন তিনি, এমন অভিজ্ঞতা যে কাউকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিতে পারে। রীতা বলেন, সন্তানদের চিকিৎসা, খাবার, এমনকি দুধ জোগাড় করতেও তিনি লড়েছেন একা, যেখানে একজন সঙ্গীর পাশে থাকা প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি। তাঁর কথায়, “ছেলেদের দুধ তো দূরের কথা, চিকিৎসার খরচও দেয়নি। সন্তানদের কী পরিমাণ অত্যাচার করেছে, কেউ জানেন না। গোয়ালাকে দুধ দিতে বারণ করে। তিন সন্তানকে যে ডাক্তার প্রসব করিয়েছেন, তাঁকে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়েছিল।”
এই অভিযোগের পরবর্তী পরিস্থিতিতে আইনি পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন কুমার শানু। তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো নোটিসে বলা হয়েছে, শিল্পীর দীর্ঘ কেরিয়ার এবং অর্জনের মর্যাদা রক্ষায় এমন অপপ্রচার রোধ করা প্রয়োজন। নোটিসে এও উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি মিথ্যা আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা তাঁর পারিবারিক এবং পেশাগত ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কুমার শানুর বক্তব্য, শিল্পী হিসেবে তিনি যে ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছেন, তা এভাবে মুছে ফেলা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ শঙ্খ-ঢাকের শব্দে মাতল বসুবাড়ি, পারুলের ঐক্যের জাদুতে মুগ্ধ সবাই! সপ্তমী আয়োজনে পারুলের জয়, কিন্তু হঠাৎ শিরীনের আগমনে বাড়ল অনিশ্চয়তা!
অন্যদিকে, অভিনেত্রী কুনিকা সদানন্দের কথাও এই বিতর্কে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কুমার শানুর সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীন আরও এক নারীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন শিল্পী। সেই কারণেই তিনি নিজে সেই সম্পর্ক থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন যেমন মানুষের সম্পর্ককে দুর্বল করে দেয়, তেমনই জনমানসে একটা চির ধরায়। শানুর মতো একজন জনপ্রিয় শিল্পীর ক্ষেত্রেও সেটাই এখন চোখে পড়ছে। সব মিলিয়ে পুরো বিষয়টি এখন ব্যক্তিগত অভিযোগ থেকে আইনি লড়াইয়ের পথে এগোচ্ছে এবার।