বর্তমানে টেলিভিশনের পর্দায় ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) ধারাবাহিকটি যতটা জনপ্রিয় তাঁর পর্দার জুটি আর্য-অপর্ণাকে নিয়ে, বাইরে ঠিক ততটা আলোচনার জন্ম দিয়েছে মুখ্য অভিনেতা জিতু কমল (Jeetu Kamal) আর দিতিপ্রিয়া রায়ের (Ditipriya Roy) দীর্ঘদিন ধরে চলা ঠান্ডা লড়াই। দর্শকের কাছে ধারাবাহিকের গল্পটি বিশেষ হলেও, সেই আবহে দীর্ঘদিন ধরা জড়িয়ে থেকেছে বিতর্কের ছায়া। কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জিতু শুটিং করতে করতেই।
সপ্তাহ খানেক পরে শুটিংয়ে ফেরার পর থেকেই নাকি তাঁকে খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে আর সেই সব ধীরে ধীরে জমাট বেঁধে বড় সমস্যার রূপ ধারণ করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিতিপ্রিয়াকে ঘিরে পুরোনো বিরোধ আরও একবার সামনে এসে পড়েছিল সামাজিক মাধ্যমে। মাস দুয়েক আগের সেই ঘটনা, যখন তিনি অভিযোগ করেছিলেন, জিতুর অশালীন মন্তব্য নিয়ে, এখনও অনেকের মনে গেঁথে আছে। পরে অবশ্য জিতু বিষয়টি পরিষ্কার করার পর দিতিপ্রিয়া ক্ষমা চেয়ে নেন।
এরপর দু’জনই কাজে ফিরলেও, নেপথ্যের টানাপড়েন থেকেই গিয়েছিল। এবার নতুন করে শোরগোল শুরু হয় যখন শোনা যায়, দিতিপ্রিয়া নাকি জিতুর অসুস্থতা নিয়ে উদাসীন ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে শট দিতেও অনীহা দেখিয়েছেন। দর্শকদের মধ্যে শুরু হয় নানান জল্পনা, এবার ধারাবাহিক ছাড়বেন কি জিতু? তাঁর পরিবর্তে অন্য কারও আসার সম্ভাবনাও আলোচনায় উঠে আসে। পরে অবশ্য নির্মাতাদের অনুরোধ আর ভক্তদের আবেগকে সম্মান জানিয়ে জিতু আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে, দিতিপ্রিয়া বেশ সংযত থেকেছেন পুরো ঘটনায়। তিনি শুধু জানিয়েছিলেন, তাঁর দিক থেকে কোনও সমস্যা নেই এবং সবকিছু স্বাভাবিক গতিতেই চলছে।
তবে সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে কটাক্ষের ঝড় কমেনি। ঠিক এই অবস্থার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হল ‘টেলি অ্যাকাডেমি’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, যেখানে ছোটপর্দার শিল্পীদের সঙ্গে চলচ্চিত্র জগতের মানুষরাও সম্মানিত হলেন। নানা বিভাগে একাধিক অভিনেতা অভিনেত্রীরা পুরস্কার পেলেও, দিতিপ্রিয়া একাই পুরস্কার পেলেন ‘প্রিয় মেয়ে’ বিভাগে। জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার ধারাবাহিক’ একমাত্র এই পুরস্কারে জিতেছে। যেখানে অন্যান্য ধারাবাহিকের ঝুলিতে একাধিক পুরস্কার।
এদিনের অনুষ্ঠানটিতে দিতিপ্রিয়া উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের শাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন। সব সময় মুখে সেই চেনা হাসি লেগেই ছিল তাঁর। তাকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না বিগত কিছুদিন ধরে কোন দ্বন্দ্ব বা টানাপড়েন অংশ তিনি। স্বাভাবিকভাবে তাকে এই বিতর্কে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি বলে, এদিন সাংবাদিকরা তার প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়েছিলেন। পুরস্কার নিয়ে বাইরে বেরোতেই তিনি প্রথমে বলেন, “খুব ভালো লাগছে আর এই পুরস্কারের কৃতিত্ব আমার প্রোডাকশন আর চ্যানেল কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুনঃ “যে জুটিকে ভালোবাসে গোটা বাংলা, তারা পুরস্কারের বাইরে কেন?” “সেরা জুটি যাঁরা হলেন, আলোচনায় নেই তারা…ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব কি তবে পুরস্কার ঠিক করছে?” ‘চিরদিনই’র আর্য-অপর্ণা নেই সেরা তালিকায়! দিতিপ্রিয়ার একা জয়, পুরস্কারে ‘অর্ধেক স্বীকৃতি’তে ক্ষোভে ফুঁসছেন দর্শক! উঠছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ !
অবশ্যই অদিতি দির কাছে আমি কৃতজ্ঞ আর সব সময় বাবা-মা আমার পাশে আছে এবং প্রিয় দর্শকরা না থাকলে এটা হতো না।” এরপর একজন সাংবাদিক পুরস্কারটির নাম ভুল করে ‘লক্ষ্মী মেয়ে’ বলে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ তাকে শুধরে দিয়ে দিতিপ্রিয়া বলেন, “ওটা ‘প্রিয় মেয়ে’ হবে, লক্ষ্মী আমি নই!” তারপরেই সেই প্রত্যাশিত প্রশ্ন আসে তার দিকে, জিতুকে নিয়ে কি বলতে চান? মুখে একটা চওড়া হাসি নিয়ে বিদায় জানাতে জানাতে, “নো কমেন্টস” বলে বেরিয়ে যান তিনি। তবে কি ঠান্ডা লড়াই এখনও চলছে দু’জনের মধ্যে? আবার জুটিতে পর্দায় ফিরলেও, দর্শকরা কি সেই পুরনো রসায়ন ফিরে পাবে তাদের মধ্যে?
