জি বাংলার ‘জোয়ার ভাঁটা’র (Jowar Bhanta) এই পর্যায়ে এসে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে উজির মানসিক টানাপোড়েন। দিদির প্রতি অগাধ বিশ্বাস আর নিজের ভেতরের অনুভূতির মধ্যে সে এক অদ্ভুত দোটানায় আটকে যাচ্ছে। নিশা তাকে ছোটবেলা থেকে শিখিয়েছে, দিদির কথাই শেষ কথা আর এবার বাবার মৃ’ত্যুর প্রতিশোধ নিতে হবে, তাই ঋষির সঙ্গে সম্পর্কটাও একধরনের বাধ্যতামূলক খেলা হয়ে গেছে তার কাছে। অথচ বাস্তবটা অন্য, ঋষি প্রথম দিন থেকেই উজিকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসে আর যতদিন যাচ্ছে উজিও সেটা নীরবে অনুভব করতে শুরু করেছে।
কিন্তু দিদির কথাকে অমান্য করার সাহস এখনও তার হয়নি। এই মানসিক চাপে আরও অস্বস্তি তৈরি করেছে অপহরণের ঘটনাটা। উজি জানে দিদি ক্রমশ অন্ধকারের দিকে এগোচ্ছে, তবুও বিপদে পড়ে সে-ই নিশাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিল পুলিশের হাত থেকে। এই কাজটা উজি করেছে নিছক মানবিক স্নেহ থেকে, কোনও প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে নয়। কিন্তু নিশা ফিরে এসে যেভাবে উজিকেই দোষারোপ করতে থাকে টাকা না পাওয়া থেকে শুরু করে প্রতিশোধ ভুলে যাওয়ার অভিযোগ, সেই আচরণ উজির ভেতরে একটা অচেনা ভয় তৈরি করছে।

দিদির রাগ আর সন্দেহের সামনে সে অসহায় হয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। এদিকে ঋষি ফিরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে ধীরে ধীরে আর ঠিক এই জায়গায় উজির জীবনে আরও বড় সংকট তৈরি হয়েছে। ঋষির প্রতি তার মন ধীরে ধীরে নরম হচ্ছে, সেই ভালোবাসার স্পর্শে সে নতুন করে বাঁচতে চাইছে যেন। কিন্তু নিশার চোখে সবই দুর্বলতা। বোনের জীবনে শান্তি বা সুখ জমা হতে দেখলেই নিশার মনে হয় প্রতিশোধ নাকি ফসকে যাচ্ছে! ফলে সে আবার উজির ওপর চাপ বাড়িয়ে দেয় যে ঋষির কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।
চাইলে বলে দিতে হবে যে সে ব্রত করেছে তাই কোনও দাম্পত্য সম্পর্ক করতে পারবে না। ফুলশয্যার মতো নতুন শুরুর রাতেও যখন দিদি তাকে এমন কথা বলে, তখন উজি পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। সম্পর্কটা যার কাছে অভিনয়ের ছিল, সেটাই এখন সত্যি হয়ে উঠছে, কিন্তু সেই সত্যিটা প্রকাশ করার সুযোগ উজির নেই। ঋষির সামনে সে শান্ত, দূরত্ব বজায় রাখা মানুষ যার কারণ জানে কেবল সে আর নিশা। ঋষি বুঝতেই পারছে না কেন উজি একেক সময় এত দূরে সরে যায়, অথচ চোখের ভাষা বলে দেয় সে তাকে আঘাত করতেও চায় না।
আরও পড়ুনঃ দিতিপ্রিয়া সরে যেতেই ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’এ নায়িকা শূন্যতা! সবার নজর এখন সৃজা দত্তের দিকে, দিতিপ্রিয়ার পর সৃজাই কি বদলে দেবেন ধারাবাহিকের ছন্দ? টলিপাড়ার চর্চা তুঙ্গে, কী বললেন অভিনেত্রী?
এই অবস্থায় উজির নীরবতা যেন আরও গভীর দুঃশ্চিন্তা তৈরি করছে। দর্শকেরা তাই এখন প্রশ্ন তুলছেন, নিশা আসলে কী করতে চাইছে? বাবার প্রতিশোধের নামে সে নিজের জীবনটাকেই অপরাধের পথে ঠেলে দিচ্ছে, তাও ঠিক ছিল, কিন্তু এখন সে বোনকেও সেই অন্ধকার পথে নামাতে চাইছে! উজি যে তার কথায় উঠ-বস করে, সেই নির্ভরতার সুযোগ নিয়েই নিশা যেন একে একে সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ উজি মানুষ, তারও অনুভূতি আছে, স্পর্শ আছে, ভালোবাসা আছে। এই বাস্তবতাকে দিদি যতই অস্বীকার করুক, উজির ভিতরে যে ঝড় চলছে তা আর লুকিয়ে রাখা কঠিন!
