পরনে সুতির শাড়ি, কপালে লাল টিপ আর হাতে শাঁখা পলা। এই চেনা বাঙালি সাজেই যেন নতুন করে ধরা দিচ্ছেন অভিনেত্রী শ্যামৌপ্তি মুদলি। অভ্রজিৎ সেন পরিচালিত রঙ্কিনী ভবন সিরিজে তাঁকে দর্শক দেখবেন একেবারে অন্য রূপে। এত দিন ছোটপর্দার তরুণী চরিত্রে যাঁকে অভ্যস্ত ছিলেন দর্শক, সেই শ্যামৌপ্তিই এবার অনেক বেশি পরিণত। শুধু চরিত্রের বদল নয়, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও এসেছে গভীর পরিবর্তন, যার প্রভাব স্পষ্ট তাঁর ভাবনায়, কথাবার্তায় এবং কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে।
শ্যামৌপ্তির মতে, মানুষের জীবনে প্রতিটি সম্পর্কেই যত্ন আর বোঝাপড়া ভীষণ জরুরি। মা বাবা বা বন্ধুবান্ধবের মতোই একজন সঙ্গীর ভূমিকা অনেক সময় জীবনের দিশা বদলে দিতে পারে। অভিনেত্রী নিজেই স্বীকার করেন, দেড় বছর আগের শ্যামৌপ্তি আর আজকের শ্যামৌপ্তির মধ্যে বিস্তর তফাত। এই বদলের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে রণজয়ের। তাঁর কথায়, জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভালো সঙ্গ এবং ইতিবাচক পরিবেশ খুব প্রয়োজন, আর সেই জায়গাটাই রণজয় এনে দিয়েছেন।
একটা সময় ছিল, যখন শ্যামৌপ্তির বন্ধুবৃত্ত মূলত ইন্ডাস্ট্রির বাইরের মানুষদের নিয়ে। ফলে তাঁর কাজের জগতটা বোঝার মতো কেউ তখন পাশে ছিল না। বয়সও ছিল কম, বাস্তবতার অভিজ্ঞতাও সীমিত। সেই সময় তিনি অনেকটাই কল্পনার আর স্বপ্নের জগতে বাস করতেন। নিজেই বলছেন, তখন কেউ তাঁকে বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড় করায়নি। জীবনে প্রথমবার কেউ এসে বুঝিয়ে দিয়েছে, সমাজে নিজের জায়গা তৈরি করতে গেলে কীভাবে ভাবতে হয়, কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
রণজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তাঁকে শিখিয়েছে জীবন আর কাজ দুটোকেই নতুন চোখে দেখতে। কোনও চরিত্র নিয়ে আলোচনা হোক বা বই পড়া, চিন্তার আদানপ্রদান সবকিছুই এখন স্বাভাবিক। এই পরস্পরের পাশে থাকা এবং একে অন্যের উন্নতি দেখতে চাওয়াটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। শ্যামৌপ্তির মতে, আজকের দিনে এমন মানসিকতা খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখা যায়, আর তাই তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করেন।
আরও পড়ুনঃ ভালবাসাকে বাঁচাতে সংসার ত্যাগ করবে গোরা! তিন অচেনা সাধু কারা, যা বলছে তাই মিলছে কেন? আধ্যাত্মিক শক্তি নাকি গোরা-রূপমঞ্জুরিকে আলাদা করতে চলছে বড় কোনও ষড়যন্ত্র? ‘তারে ধরি ধরি মনে করি’ কোন পথে এগোবে গল্প?
ছোটবেলা থেকে মা বাবার ভালোবাসা আর সঠিক পরামর্শ যেমন তাঁকে শক্ত ভিত দিয়েছে, তেমনই তাঁর সঙ্গীর কাছ থেকেও তিনি পেয়েছেন নির্ভরতার জায়গা। এর ফলেই নতুন কাজ বাছাই বা চরিত্র নির্বাচন নিয়ে এখন তিনি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও এসেছে নিজের ভিতর থেকেই। কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবের মাটিতে পা রেখে শ্যামৌপ্তির এই পরিণত হয়ে ওঠা নিঃসন্দেহে তাঁর জীবনের এক নতুন অধ্যায়।
