জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“প্রতিভার অভাব নেই, তবু সুযোগ কোথায়?”— অভিনয়ে দক্ষতা, দর্শকের ভালোবাসা সব থাকা সত্ত্বেও কেন টলিউডে যোগ্য চরিত্র থেকে বঞ্চিত দেবজ্যোতি রায় চৌধুরী? প্রশ্ন উঠছে দর্শক মহলে দর্শকমহলে!

বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় এমন কিছু মুখ আছে, যাদের উপস্থিতি দর্শকের মনে আলাদা করে দাগ কাটে। চরিত্র খল হোক বা ভয়ঙ্কর, আবার কখনও সহানুভূতিশীল—একজন অভিনেতা যদি প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারেন, দর্শক তাকে ভুলতে পারে না। দেবজ্যোতি রায়চৌধুরী ঠিক সেই রকমই একজন অভিনেতা, যাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না, অথচ তাঁর প্রাপ্য জায়গা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বছরের পর বছর ধরে কাজ করেও কেন তিনি আজও পাকাপোক্ত মুখ্য চরিত্রে ফিরতে পারছেন না, সেই প্রশ্নই ঘুরছে বিনোদন মহলে।

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে ফিরে যেতে হয় তাঁর শুরুর দিনগুলোতে। উত্তর পাড়ায় বেড়ে ওঠা দেবজ্যোতি পড়াশোনা শুরু করেন ডানকুনির হাইস্কুলে। অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই থাকলেও পরিবারে সেই স্বপ্নকে সহজভাবে মেনে নেওয়া হয়নি। মায়ের সমর্থন থাকলেও বাবার আপত্তি ছিল প্রবল। তবু পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। সংসারের দায়িত্ব সামলাতে টিউশন করে চলেছে জীবন, আর পাশাপাশি এক অডিশন থেকে আরেক অডিশনে ঘুরে বেড়ানো—এই ছিল তাঁর প্রতিদিনের বাস্তবতা।

থিয়েটার থেকেই অভিনয় জীবনের হাতেখড়ি। ধীরে ধীরে টেলিভিশনের সুযোগ আসে এবং বড় ব্রেক আসে স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কপাল কুন্ডোলা’-তে কাবালিক চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। সেই ভয়ঙ্কর, রহস্যময় চরিত্রে তাঁর অভিনয় দর্শকের নজর কেড়ে নেয় মুহূর্তেই। এরপর একের পর এক ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে—‘ফেলনা বৌমা’, ‘এক ঘরে’ সহ একাধিক প্রজেক্টে তাঁর উপস্থিতি তখন টেলিভিশনের পরিচিত ছবি।

শুধু ধারাবাহিকেই নয়, সিনেমা ও ওয়েব সিরিজেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন দেবজ্যোতি। ‘হাবজি কাবজি’, ‘পাকদণ্ডী’, ‘তুই গোলাপি’, ‘ফেলুমিত্তির লেন’-এর মতো ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি শর্ট ফিল্ম ‘অনুগামী’ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শর্ট ফিল্ম বিভাগে প্রদর্শিত হওয়া তাঁর অভিনয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। একাধিক শর্ট ফিল্ম ও মিউজিক ভিডিওতেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।

তবুও বাস্তবতা হলো, আজ তাঁকে বেশি দেখা যায় পার্শ্বচরিত্রে বা খল চরিত্রে—‘জল থৈথই’, ‘ভালোবাসা’, ‘নিমফুলের মধু’, ‘লক্ষী ঝাঁপিয়ে’ কিংবা ‘মনদার’-এর মতো ধারাবাহিকে। দর্শকের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, এত অভিজ্ঞতা ও প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি আবার মুখ্য চরিত্রে ফিরছেন না। অনুরাগীদের আশা, এই অপেক্ষা একদিন শেষ হবে, আর দেবজ্যোতি রায়চৌধুরী আবারও প্রমাণ করবেন—তিনি শুধু পার্শ্বচরিত্রে সীমাবদ্ধ থাকার জন্য নন, বরং গল্পের কেন্দ্রে থাকার যোগ্য একজন অভিনেতা।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page