বিনোদন জগতের ইতি পরিচিত মুখ পৌষমিতা গোস্বামী (Poushmita Goswami)। নানা ধারাবাহিকে তার অভিনয় মন জিতে নিয়েছে দর্শকদের। আলতা ফড়িং থেকে সাঁঝের বাতি সব ধারাবাহিকেই পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে তিনি বর্তমানে জনপ্রিয় মুখ টলিপাড়ার। বর্তমানে জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক মিঠিঝোরাতে রাইপূর্নার এবং নীলুর মা নন্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি গেছিলেন জি বাংলার জনপ্রিয় শো দিদি নম্বর ১এ। সেখানে গিয়েই স্বামীর প্রসঙ্গে কথা বলেন সকলের সামনে।
কিছুদিন আগেই স্বামীহারা হয়েছেন অভিনেত্রী পৌষমিতা গোস্বামী। ২০২৪ শের ১০ই জানুয়ারি বিবাহের দুবছর পেরাতে না পেরোতেই তাকে ফেলে রেখে চলে যায় না ফেরার দেশে। পর্দার সামনের মতোই বৈধব্য জীবনের স্বীকার হন অভিনেত্রী। তার স্বামী অর্ণব রায়ও ছিলেন টলিপাড়ার একটি জনপ্রিয় মুখ। দীর্ঘসময় যাবত জনপ্রিয় প্রযোজনা সংস্থা অ্যাক্রোপলিস প্রযোজনা সংস্থার প্রযোজকের কাজে নিযুক্ত ছিলেন অর্ণব।
জানা গেছে স্টার জলসার একসময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিক সাঁঝের বাতি সুবাদেই তার পরিচয় হয় তার স্বামী অর্ণব রায় সঙ্গে। তারপরই বেশ কয়েকবছর চুটিয়ে প্রেম করেন তারা দুজনে। ২০২১ সালেই রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বিয়ে করেন এই জুটি। পরের বছরই ফেব্রুয়ারিতে ধুমধাম করে অগ্নি সাক্ষী করে গাঁটছড়া বাঁধেন তারা। কিন্তু সুখ সইলো না ভাগ্যে। সাত জন্ম একে অপরের সুখ দুঃখের অংশীদার হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেই দুবছর যেতে না যেতেই সঙ্গিহারা হন পৌষমিতা।
আরও পড়ুন- জি বাংলার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সারা টলিউড! কিন্তু কি এমন কান্ড ঘটালো জি বাংলা?
মাত্র ৪০ বছর বয়সেই সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে ফেলে রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি দেয় অর্ণব। ক্যান্সারই নষ্ট করে দেয় তাদের সদ্য সাজানো সংসার। ভেঙে দেয় একসঙ্গে পথ চলার স্বপ্ন। স্বামীকে হারিয়ে অত্যন্ত ভেঙে পড়েছেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি তিনি যান রচনা ব্যানার্জীর জনপ্রিয় শো দিদি নম্বর ১এ। অভিনেত্রীর উদ্দেশ্যে রচনা ব্যানার্জী বলেন তিনি জানেন কি দুঃখের পাহাড় নেমে এসেছে তার জীবনে। কিন্তু তবুও তিনি চান শোতে থাকাকালীন এই একটা ঘণ্টা তিনি হাসি মুখে কাটান। তবে অভিনেত্রী নিজেই কথা বলেন অর্ণবের বিষয়ে।
একটু সংকোচন রচনা জিজ্ঞাসা করেন “এত কম বয়সে কি করে হল এমন?” উত্তরে পৌষমিতা মাথার দিকে ইশারা করে জানান “কাজের প্রেসার। আসলে একটা মানুষের মাথায় কি চলছে আমরা তো সেটা বুঝতে পারি না। কেউ যখন বলে আমি আর পারছি না। তখন আমরা কিছু বুঝি না কিন্তু যখন সে অ্যাসাইলামে চলে যায় বা এই পৃথিবী থেকে চলে যায় তখন আমরা বুঝতে পারি সত্যিই হয়তো সে পারছিল না।”
“দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন অর্ণবের মা। তখন আমরা এক অপরের জীবনে আসেনি। সেই নিয়েও কম সংগ্রাম যায়নি। কম বয়সেই মাথায় অনেক চাপ ছিল ওর। আর ওর মা ওর খুব কাছের ছিল ওনার চলে যাওয়া সবটা মিলিয়েই হয়তো…..। আমি আর অর্ণব মিলেই ২০২৩ সালের মার্চে আমাদের প্রযোজনা সংস্থা খুলেছিলাম সেটা নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। যেহেতু আমি পরিচালনা ইচ্ছে আছে এবং অর্ণব অনেকবছর ধরে সম্পাদনা করেছে তাই অনেককিছু ভেবেছিলাম আমরা। তবে জীবনে সব বন্ধ হলেও এই প্রযোজনা সংস্থা বন্ধ হবে না। এতদিন নিজের জন্য বেঁচেছি এবার আমাদের দুজনের জন্য আরও বেশি করে বাঁচবো।” জানিয়েছেন অভিনেত্রী।