Bangla Serial

Best Serial Actress: বছর প্রায় শেষের মুখে, সারা বছরে দর্শকদের মন আর টিআরপি ভরাল সিরিয়ালের কোন পাঁচ চরিত্র?

সন্ধ্যে মানেই শঙ্খধ্বনি, গরম চা, মুড়ি মাখা আর টিভির পর্দায় জি বাংলা (Zee Bangla) বা স্টার জলসা (Star Jalsha)। এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের খুব বেশি দ্বিমত হয়না। কারণ শিমুল, জগদ্ধাত্রী, দীপা এরা এখন আমাদের ঘরের মেয়েই হয়ে উঠেছে। বাংলা মেগার জনপ্রিয়তা সেই আশি-নব্বইয়ের দশক থেকে। ‘তেরো পার্বন’ সিরিয়াল দিয়ে তাঁদের সিরিয়াল দেখার অভ্যাসের শুভ সূচনা।

তারপর একে একে এসেছে ‘জন্মভূমি’, ‘এক আকাশের নীচে’, ‘গানের ওপারে’, ‘মহাপ্রভু’ ইত্যাদি। বাংলা সিরিয়ালপ্রেমীদের মনে এই সিরিয়ালগুলি রীতিমত গেঁথে আছে। বর্তমানে অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী বাংলা বিনোদন চ্যানেলগুলির সিরিয়ালের হাত ধরে কেরিয়ায় শুরু করছেন অনেকে। আগে যেমন সিরিয়াল মানেই ভরসা ছিল দুরদর্শন। এখন গজিয়ে উঠেছে একাধিক বাংলা সিরিয়াল চ্যানেল। তবে ২০২৩শে দাঁড়িয়ে কোন পাঁচটি সিরিয়াল ও নায়িকাদের দর্শক পছন্দ করছে রইল তাঁর তালিকা।’

দীপা (অনুরাগের ছোঁয়া) : স্টার জলসার ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকটি দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ইতিমধ্যেই দর্শকদের মনের মণিকোঠায় জায়গা করতে সক্ষম হয়েছে এই সিরিয়াল। পাশাপাশি সিরিয়ালের মাধ্যমে যেভাবে একজন শ্যামবর্ণ মেয়ের জীবন সংগ্রামের কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ছোটপর্দায় তা দারুণ পছন্দ হয়েছে বাংলা সিরিয়াল প্রেমী ও নেটিজেনদের। টি আরপি তালিকায়ও ভাল ফল করে আসছে শুরু থেকেই।

জগদ্ধাত্রী (জগদ্ধাত্রী) : মা হারা মেয়ে জগদ্ধাত্রী। ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছে অযত্নে। সৎ মা আর বোনের অনাদর তিরস্কারে বড় হওয়া জগদ্ধাত্রী একজন বড় মাপের পুলিশ অফিসার। পাশাপাশি গৃহকর্মেও বেশ নিপুণ সে। তাঁর চরিত্রের ‘যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে ধরণ’ বেশ পছন্দ দর্শকদের। তাই দেড় বছর ধরে টিআরপি তালিকায়ও ধরা বাঁধা স্থান এই সিরিয়ালের।

পর্ণা (নিম ফুলের মধু) : সাম্প্রতিক ধারাবাহিকগুলির থেকে একেবারে অন্যরকম এই সিরিয়ালের গল্প। ঝাঁ চকচকে ড্রয়িংরুমের বদলে গল্প এগোচ্ছে উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির মলিন উঠোনে। নায়িকা পর্ণা চায় শ্বশুরবাড়ির অচলায়তন ভেঙে কর্মরতা হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে। আবার এমনি চাকরি নয়। সুপ্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক হতে চায় পর্ণা। তাঁর জীবন সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম হতে পারছেন এই প্রজন্মের মেয়েরা। মধ্যবিত্ত বাড়ির খুঁটিনাটিতে নিজেদের জীবন খুঁজে পাচ্ছেন দর্শকরা। এই ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে অবশ্য গল্পের গরু গাছে ওঠেনি বলেও মত সিরিয়ালপ্রেমীদের।

শিমুল (কার কাছে কই মনের কথা) : শুরুটা ছিল তিক্ততায় ভরা। আর পাঁচটা ধারাবাহিকের মতই দেখানো হয়েছিল শাশুড়ি-বৌমা ঝগড়া ও পারিবারিক কোন্দল। এমন কি ছেলের ফুলশয্যার ঘরেই রাত্রি যাপন করেছিলেন মা। তবে শাশুড়ি-বৌমা সম্পর্কের সমীকরণ বদলেছে। সম্প্রতি কার কাছে কই মনের কথা ধারাবাহিকে জমে উঠেছে বউমা-শাশুড়ি রসায়ন। বৌমা শিমূল তাঁর ভালবাসায় ভরিয়ে পাল্টে দিয়েছে শাশুড়ি মনন। রুক্ষ স্বভাবের শাশুড়ি মধ্যে লুকিয়ে থাকা মিষ্টি স্বভাবের মানুষটিকে টেনে বের করে রেখেছে সে। আর এখনতো জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবটাই করে শাশুড়ি-বৌমা মিলে। সম্প্রতি গল্প যেদিকে মোড় নিয়েছে তা দেখলে বোঝা যায়, শাশুড়ি-বৌমা এক টিমে। মাঝে মাঝেই শিমুলের সঙ্গে তাঁর বরের সংঘাত চলে। রীতিমত পারিবারিক হিংসার শিকার সে। আর জীবন যুদ্ধে যে ভাবে এসব কিছু সিদ্ধ হস্তে সামলাচ্ছে শিমুল, যার জন্য দর্শকদের অত্যন্ত কাছের হয়ে উঠেছেন।

মেঘ (ইচ্ছে পুতুল) : দুই বোন ‘মেঘ’ ও ‘ময়ূরী’র গল্প নিয়েই ধারাবাহিক ‘ইচ্ছে পুতুল’। এই মুহূর্তে টেলিপাড়ায় জলপনার কেন্দ্রে এই ধারাবাহিক। জি বাংলার এই সিরিয়ালে একই ব্যক্তির প্রেমে পড়ে যায় মেঘ ও ময়ূরী। তারপর থেকেই শুরু হয় ময়ূরীর দিদির সংসারে অশান্তি লাগানোর প্রয়াস। কিন্তু এই ধারাবাহিকের নায়িকা ‘মেঘ’র চরিত্রটি একেবারে অন্য ধাঁচের। অন্য নায়িকারা হাজার অপমান করার পরেও মহান সেজে শ্বশুর বাড়ি ফেরত চলে যায়, কিন্তু মেঘ ফেরা তো দূর, তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আচ্ছা করে ধুয়ে দেয় তাঁর মুখোশ পড়া শ্বশুরবাড়ি আর প্রাক্তন বরকে। বাংলা সিরিয়ালের গল্পের গতানুগতিক ছক ভেঙে এই নতুন ধরণের গল্প তাই মন জিতেছে সিরিয়াল প্রেমীদের।

Joyee Chowdhury

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ-এ স্নাতকোত্তর। বিনোদন ও সংস্কৃতি বিভাগই মূল ক্ষেত্র।