বাংলা চলচিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা তিনি। তার অভিনয় বাংলার সিনেমাকে এনে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা। স্বর্ণযুগে তারা অভিনয় এখনও একইভাবে দাগ কেটে যায় ভারতীয় সিনেমার দর্শকদের মনে। এই বছর ৬ এপ্রিল ছিল অভিনেত্রীর ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী। তবে তার চলে যাওয়ার পরও তার জীবন নিয়ে একবিন্দুও কৌতূহল এবং উৎসাহ কমেনি তার অনুরাগীদের। চিরকাল নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিশেষ গোপনীয়তা বজায় রেখেছেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)।
১৯৩১ সালের পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বাবা মায়ের নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। যদিও পাবনার মহাকালী পাঠশালায় তার নাম ছিল কৃষ্ণা দাশগুপ্ত। বাংলাদেশের পাবনা শহরের গোপালপুর এলাকার হেমসাগর লেনে মহানায়িকা কাটিয়েছেন তার শৈশব এবং যৌবনকাল। কলকাতায় যাওয়ার বছর দুয়েকের পরেই তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কলকাতার বনেদি পরিবারের ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে। সিনেমা জগতে আসার পর পরিচালক সুকুমার দাসের সহকারী নীতিশ দাস তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় সুচিত্রা।
১৯৫২ সালের শেষ কোথায় সিনেমার মাধ্যমে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বাংলার মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। তারপর একের পর এক বাংলার সমানতালে হিন্দি সিনেমাতেও চুটিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রায় ৬০তির বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন মুখ্য চরিত্রে। নিপুণ, সুদক্ষ অভিনয়ের গুনে তিনি পেয়েছেন বেশ কয়েকটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার। দীর্ঘ সময় লোকচক্ষুর আড়ালে থাকার পর অবশেষে ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন মহানায়িকা।
জন্মসূত্রে বাংলা দেশে জন্ম হলেও দেশভাগের আগে পরিবারের সঙ্গে ভারতে চলে সেন অভিনেত্রী। এই বছর ৬ এপ্রিল তার জন্মবার্ষিকীতে বাংলাদেশের পাবনায় সংস্কৃতিমন্ত্রকের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন এবং সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের যৌথ উদ্যোগে মহানায়িকার বাড়িতে একটি স্মৃতিসভার আয়োজন করা হয়। মহানায়িকার জন্মবার্ষিকীকে স্মরণে রেখে আসন্ন ২০-২১ এপ্রিল নিউইর্য়কে সুচিত্রা সেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আওয়াজ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় এই চলচ্চিত্র উৎসবের কথা।
আরো পড়ুন: অভিনেতা প্রতীক সেনকে নিয়ে দুঃসংবাদ! জানলে মন ভাঙবে ভক্তদের!
শনিবার ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনায় মহানায়িকার স্মৃতিতে মোড়া পৈতৃক নিবাসে সুচিত্রা সেনের ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। মহানায়িকার মৃত্যুর পর তার পৈতৃকগৃহে একবার আসার ইচ্ছে প্রকাশ করছিলেন সুচিত্রা কন্যা মুনমুন সেন। যদিও সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মুনমুন সেনের পক্ষে। তবে তিনি জানিয়েছেন বহুদিন তিনি বাংলাদেশে যাননি। এবার তিনি গেলে পাবনাতেই যাবেন।