ওপার বাংলার মিষ্টি মেয়ে ময়না পরিস্থিতির চাপে পড়ে বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালিয়ে এপার বাংলায় চলে আসে ময়না। একজন বনেদি বাড়ির গিন্নির হাত ধরেই এপার বাংলায় আশ্রয় খুঁজে পায় সে। কিন্তু বিধির বিধানে বদলে যায় সব কিছু। ওই বাড়ির ছেলে রোদ্দুর লগ্নভ্রষ্ট হয়ে ফিরে আসে বাড়িতে। তারপর একপ্রকার জোর করেই রোদ্দুরের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় ময়নার। কিন্তু তারপর? ময়না কি পাবে তার ঠিকানা? এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার গল্প নিয়েই তৈরি জি বাংলার ধারাবাহিক পুবের ময়না। যেখানে মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ ময়নার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ঐশানি দে (Oishani Dey)।
পুবের ময়না ধারাবাহিকের অভিজ্ঞতা জানিয়ে কি বলেছেন অভিনেত্রী ঐশানি দে?
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী ঐশানি দে জানান “এই কয়েকদিনে ওখানে সকলের সঙ্গে সুন্দরভাবে মিশে গিয়েছি। সকলের সঙ্গেই একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। শ্যুটিংয়ের ফাঁকে আমরা কিন্তু ভীষণ মজা করি। সবথেকে বড় কথা, আমার এই ‘ময়না’ চরিত্রটা ভীষণ পছন্দ হয়েছে। পুবের ময়না দুই দেশ, দুই বাংলাকে জুড়ে একটা গল্প। আমার মনে হয়না যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলা সিরিয়ালে এধরনের গল্পের আধারে কোনও কাজ হয়েছ! এই গল্পটা বা ‘ময়না’ চরিত্রটাও একঘেয়ে নয়। ময়না ভীষণই উচ্চাকাঙ্খী একটা চরিত্র। ময়নার মধ্যে একটা জেদ আছে, যে ওর যেটা পাওয়ার সেটা ওকে অর্জন করতেই হবে, সেই সঙ্গে ভীষণই প্রাণোজ্জ্বল একটা চরিত্র এটা। তাই আমার মনে হয় দর্শকদের এই চরিত্র, এই গল্পটা ভালোলাগবে। পুবের ময়নার গল্পের সঙ্গে দর্শকরা নিজেদের যুক্ত করতে পারবেন।”
পুবের ময়নায় বাঙাল ভাষায় কথায় কথা বলতে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ঐশানি দে?
অভিনেত্রীর বলেছেন “নাহ। এই অ্যাকসেন্টের জন্যই আমার একটু অসুবিধা হচ্ছে। তবে এবিষয়ে আমাকে ওখানে সকলেই হেল্প করছেন। যাঁরা ওখানে রয়েছেন, তাঁরা সকলেই ভীষণ ‘হেল্পফুল’, আর তাই আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। গৌরবদাও অর্থাৎ অভিনেতা গৌরব রায় চৌধুরী আমাকে এবিষয়ে সাহায্য করছেন, কারণ, উনি নিজে বরিশালের। যখন অডিশন হয়েছিল, আমি চিত্রনাট্য় দেখে তখন ভেবেছিলাম, এটা কী! তারপর শিখতে শিখতে কাজ করছি। এখনও শিখছি। ভাষার জন্য আমার ওপার বাংলার পুরনো কিছু সিনেমা দেখেছি বেশকিছু, কিছু বইও পড়েছি। সেইভাবেই উচ্চারণ করার চেষ্টা করছি, যাতে চরিত্রটা অনেক বেশি বাস্তব মনে হয়।”
কিভাবে অভিনয় অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করছিলেন ঐশানি দে?
অভিনেত্রীর কথায়, “আমি কখনও ভাবিইনি যে অভিনয় করব। আমি গান করতাম। সেই সূত্রেই থিয়েটারের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়। থিয়েটার করতে করতেই আমি এই অভিনয়টাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়তাম। তারপর সেই চর্চা ধরে রাখতেই পাকাপাকিভাবে অভিনয়ে এসে পড়েছি। আমার বাড়িতে কিন্তু আমিই প্রথম অভিনয়ে এসেছি। তারপর আমার দেখে আমার মাও টুকটাক থিয়েটার করতে শুরু করেন। আমি এর আগে সিরিয়াল ৪ বছর আগে করেছি। ‘সিংঘলগ্না’ করেছিলাম, তারও আগে ‘নটী বিনোদিনী’ করি। তারপর সিনেমাতে কাজ করেছি। ‘ট্যাংরা ব্লুজ’, ‘মুখোশ’, ‘হৃদপিণ্ড’, ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্য’-এর ছবিতে কাজ করেছি, খুব শীঘ্রই যে ছবিটা মুক্তি পাবে ‘পদাতিক’, ওই ছবিতেও আমি আছি। আর জি বাংল অরিজিনালসের দুটো ছবিতেও কাজ করেছি।”
আরো পড়ুন: অতীতের কালো ছায়া থেকে বেরিয়ে অবশেষে সুখের হদিশ পেল সুধা, কিন্তু অতীতের কালো অন্ধকার কি চুরমার করে দেবে তেজ ও সুধার শুভ বিবাহ?
বর্তমানে কোন বর্ষের ছাত্রী দর্শকদের প্রিয় ময়না ওরফে অভিনেত্রী ঐশানি দে?
অভিনেত্রীর মতে, “আমি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী, বিডি মেমোরিয়াল স্কুলে (কামালগাছি) পড়ি। পরের বছর বোর্ডের পরীক্ষা। তাই অভিনয় পড়াশোনা দুটোই আমাকে ব্যালেন্স করে চলতে হচ্ছে। এটা একটু তো কঠিন বটেই। তবে মজাও লাগছে। শ্যুটিং থেকে বাড়ি ফিরে পড়তে বসি। কিছুদিন আগে বিষয়টা একটু চাপের হয়ে উঠেছিল। কারণ, তখন আমার পরীক্ষা চলছিল। আর রাতে শ্যুটিং হচ্ছিল। সেট থেকে ফিরে রাতে পড়ছিলাম, আর ঘুমোতাম না। তারপর সকালে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলাম। তাছাড়া যখনই সময় পাই পড়েনি। শ্যুটিংয়েও বই নিয়ে যাই। পড়াশোনা তো করতেই হবে। আমার পরীক্ষা থাকলে ওরা ডেট অ্যাডজাস্ট করে দেয়। যাঁদের সঙ্গে কাজ করছি সকলেই খুব সাহায্য করে। এবিষয়ে আমি কৃতজ্ঞ। বোর্ডের পরীক্ষার সময়েও সেভাবেই করব। তাছাড়া এখন থেকেই আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি বোর্ডের পরীক্ষা জন্য। আমি পড়াশোনা, অভিনয় কোনওটাই বাদ করতে চাই না।”