দুটি বোনের মধ্যে সম্পর্ক বাস্তবে যেখানে সবচেয়ে কাছের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, যেখানে বাড়ির বড় বোন মানেই যে ছোট বোনের কাছে মায়ের সমান, যার সঙ্গে চলে ঝগড়া, ঝামেলা, মারামারি কিন্তু আবার বিপদে পড়লেই সেই বোনকেই কাছে পাওয়া যায় সবচেয়ে আগেই। মায়ের বকা খাওয়া স্কুল কামাই থেকে প্রথম প্রপোজ ছোটবোনের সবটাই জুড়ে থাকে তার দিদি। ছোট বোনের কাছে সবচেয়ে ভরসার সঙ্গে সুরক্ষিত স্থান হল তার দিদির ছত্রছায়া। সেখানে থেকে সে শিক্ষা নেয় ভালো মন্দের। যে দিদি তাকে সেখান বড় হওয়ার, যে সবসময় সময় বিপদ থেকে আগলে রাখে তার ছোট বোনকে।
একসঙ্গে শপিং যাওয়া, পুজোর ঘুরতে যাওয়া সবটাই মিলে থাকে দিদি বোনের সম্পর্ক। দিদি মানেই যার শাসন, আবদার, সবটা জুড়ে থাকে ছোটবোন। একই ভাবে দিদির কাছের তার আদরের স্নেহের, ভালোবাসার এবং সমস্যায় সবচেয়ে কাছের হয় তার ছোট বোন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু পাল্টেছে ঠিকই কিন্তু পাল্টায়নি সম্পর্কের সমীকরণ, সম্পর্কের সেই ভাব এখনও একইভাবে বজায় রয়েছে মানুষের মনে। হয়তো ধরন পাল্টেছে কিন্তু মানুষের মনে মন একে অপরের জন্য পাল্টায়নি অনুভূতি।
তবে ধারাবাহিকেও কি সেই একই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখা যায়? ধারাবাহিকে তো বলা হয় বাস্তবের অনুরূপ কিন্ত আসলে সত্যিই কি তাই? না হয়ত সব ধারাবাহিকে তাই দেখা যায়না। হাতে গোনা কয়েকটি ধারাবাহিকে দুই বোনের মধ্যেকার মিষ্টি সম্পর্ক দেখা হলেও জি বাংলা হোক বা স্টার জলসা বাংলার প্রায় সব ধারাবাহিকেই এখন দেখা যায় বোনে বোনে দ্বন্দ্ব। বিশেষত জি বাংলার প্রায় সবকটি ধারাবাহিকেই দেখা যাচ্ছে এই একই বিষয়। সেটা জি বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক জগদ্ধাত্রীই হোক বা সম্প্রতি শুরু হওয়া ধারাবাহিক মিঠিঝোরা।
আর সমস্ত বোনের মধ্যে লড়াইয়ের একমাত্র বিষয় হবে একজন মাত্র পুরুষ চরিত্র। ইচ্ছে পুতুল ধারাবাহিকেও নীল যে কিনা ময়ূরীর সম্পর্কে জামাইবাবু হয় তাকে পাওয়ার জন্য তাকে পাওয়ার জন্য নিজের বোনকেও হত্যা করতে পিছুপা হয়নি ময়ূরী। ওদিকে জগদ্ধাত্রীকে নিজের দিদির সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে দেখে তার স্বামীকেও কেড়ে নেয় মেহেন্দি। ধারাবাহিক মিঠিঝোরাতে প্রথমে রাইপূর্ণা নিজের পরিবারের খাতিরে তার হবু স্বামী শৌর্য্যর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয় বোনের। কিন্তু পরে সেই বোন নীলুর বাড়িতেই আসে থাকতে শুরু করে সে, ফলস্বরূপ শুরু হন বিবাদ।
আরও পড়ুনঃ মিশন বর্ষা উদ্ধার! সিংজির খবর পেয়ে বর্ষাকে উদ্ধারে করে বিহারে যাচ্ছে দাবাং পর্ণা! আগাম পর্ব ফাঁস
আছে এটা কি বাস্তবেও ঘটে? দিদি মায়ের সমতুল্য হলে জামাইবাবুও যে তার বাবার স্বরূপ হয় সেটা কি সত্যিই মূল্যহীন আজকের সমাজে? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নটা জাগছে মনে? আর যদি তা না হয় তবে কেন দেখানো হচ্ছে ধারাবাহিকে এই ধরনেরই বিষয়, এটি কি কোনও খারাপ প্রভাব পড়বে না সমাজে। একজন বোনই যদি আর একজন বোনের ঘর ভাঙ্গে তাহলে কি এই সমাজে ভালোবাসা, কাছের সম্পর্কের ওপর মানুষের কোনও ভরসা থাকবে? স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগছে সকলের মনে।