জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“ক্লাস নাইনে বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে, সংসারে দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়েছে!” শিশু শিল্পী থেকে অভিনেত্রী কতটা কঠিন ছিল দিতিপ্রিয়ার কাছে?


অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ শিশুশিল্পী হিসেবে। ২০০৮ এ মাত্র ছয় বছর বয়সে দুর্গা ধারাবাহিকে কাজ শুরু করেন। অভিনয় কাকে বলে না বুঝলেও কাজটা দক্ষতার সাথেই করতেন। তিনি সকলের পছন্দের দিতিপ্রিয়া রায়। এরপর অপরাজিত, তোমায় আমায় মিলে ধারাবাহিকের পর সৃজিত মুখার্জির রাজকাহিনীতে তার উপস্থিতি সকলের নজর কাড়ে। দিন ভালোই কাটছিল হঠাৎই ক্যান্সার ধরা পড়ে দিতিপ্রিয়ার বাবার। তারপর সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়। তারপরেই করুণাময়ী রানী রাসমণিতে বিপুল জনপ্রিয়তা পান দিতিপ্রিয়া।

কবে থেকে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা এল, এ প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী জানান, “ক্লাস এইট থেকে বোঝা শুরু করলাম এটা করলে আমার ভালো লাগে। ভালো লাগাটা সবচেয়ে বেশি ইম্পরট্যান্ট আমার কাছে। আমি কাজ করতে করতে শিখেছি।”জনপ্রিয়তার শিখরে উঠে দিতিপ্রিয়ার কতটা অহংকার রয়েছে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দিতিপ্রিয়া বলেন, “এমনিতেই লোকজন বলে যে দিতিপ্রিয়ার খুব অহংকার। ‌ আমি কম কথা বলতে পছন্দ করি, এর মানে এটা নয় আমি মাটিতে পা দিয়ে চলি না।”

image 3

পড়াশোনার সাথে অভিনয় করতে অসুবিধা হয়নি কখনও, দিতিপ্রিয়ার কথায়, “যখন আমি ক্লাস টেন আর টুয়েলভ দিই তখন আমি রানী রাসমনি করছি। তখন পরীক্ষা দিয়ে এসে শুটিংয়ে ঢুকতাম তারপরে বাড়ি ঢুকে পড়তে বসতাম, পড়তাম, দু-তিন ঘন্টা ঘুমিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতাম। ক্লাস টুয়েলভেও পরীক্ষার আগের দিন শুটিং করেছি। আমার মনে হয় কেউ যদি চেষ্টা করে, তাহলে সে সবকিছু পারে। মেকআপ রুমে বই নিয়ে যেতাম, এখন এটা একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। গ্রাজুয়েশন এর পরীক্ষার একদিন আগে আমি লন্ডন থেকে ফিরেছিলাম। তাই সবাই যখন ওখানে ঘুরছিল, আমি বই নিয়ে পড়তাম।”

সিরিয়াল করে বলে পড়াশোনা করতে পারে না এমন কথা উঠতেই পারত, এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দিতিপ্রিয়া বলেন, “আমি চাইতাম না এই কথাটা উঠুক তাই জন্য আমি পড়াশোনা করতাম। ওতো অভিনয় করে ওর জন্য ওর দ্বারা এটা হবে না। আমি সব সময় ক্লাস অ্যাটেন্ড করতে পারি না এটা সত্যি।”‌ অভিনয়টা ভালোবাসার জায়গা থেকে পেশায় কিভাবে পরিণত হল, দিতিপ্রিয়া বলছেন, “ক্লাস নাইনে বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে। বাবা যখন সুস্থ হবার পথে তখন আমি রানী রাসমনির অফারটা পেয়েছিলাম। তখন পরিবারের লোকজন বলেছিল দেখো তুমি কি করবে। অনেকের বাবা মাস্টার্স অবধি পড়াতে পারে, আমার বাবার শরীর খারাপের জন্য ক্লাস নাইন থেকে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে, ঠিক আছে অসুবিধা নেই।”

image 5


ওই বয়সে সঠিক ডিসিশন নেওয়াটা কতটা কঠিন ছিল, অভিনেত্রী বলেন, “আমি বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারছি এখনও‌। রোজ তাকে সামনে দেখতে পাচ্ছি‌। তার থেকে বেশি চাওয়ার নেই, পাওয়ার নেই। বাবা বলেছিল আমাকে মেয়ে আর স্ত্রীয়ের জন্য সুস্থ হতেই হবে। আমার কাছে ওটাই মোটিভেশন ছিল।” রানী রাসমণি চরিত্রটা ব্যাগেজ হয়ে উঠেছিল কোন ক্ষেত্রে,” আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল দিতিপ্রিয়া হয়ে ওঠার ব্যাগেজ হয়ে উঠেছিল। দিতিপ্রিয়া ওটা বাদ দিয়ে আরও কিছু করতে পারে সেটা লোকে ভুলে যেতে শুরু করেছিল।রানী রাসমণি করেছি বলে আমি অনেকটা সেনসিটিভ হয়েছি বোধ মানুষের মধ্যে কমে যাচ্ছে সেটা অনেক শিখিয়েছে আমাকে‌।”

Piya Chanda