জি বাংলার বহুল বিতর্কিত এবং আলোচিত ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) ধারাবাহিক নিয়ে জলঘোলা বহুদিন ধরেই চলছে, তবে সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে আবার নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy)। বেশ কয়েক সপ্তাহ নীরব থাকার পর তিনি জানান, এই ধারাবাহিকে ব্যস্ত শিডিউলের কারণেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ তাঁর হাতছাড়া হয়েছে! তাঁর এই কথা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে মনে করছেন, এতদিন যে চাপ থেকে অসহযোগিতা বা অপেশাদারিত্বের অভিযোগ তিনি তুলেছিলেন জিতুকে নিয়ে সেগুলো কি তাহলে পুরোপুরিই ভুল ব্যাখ্যা ছিল?
আবার কেউ কেউ সরাসরি বলছেন, “সফল একজন সহ-অভিনেতার প্রতি রাগ থেকেই নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। জিতু সমানতালে ধারাবাহিক এবং ছবিতে অভিনয় করে যাচ্ছেন, সময় নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তাই হিংসার থেকেই এত বিতর্ক তৈরি করে ধারাবাহিক ছেড়েছেন দিতিপ্রিয়া!” যদিও, এসব মন্তব্যের উত্তরে এখনও কোনও স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দেননি অভিনেত্রী। অন্যদিকে, জিতু কমল নিজের অবস্থান নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও, সমাজ মাধ্যমে তাঁর সাম্প্রতিক পোস্টটি বেশ চর্চায়। এদিন তিনি সমাজ মাধ্যমে নিজের কিছু ছবির পাশাপাশি একটি লেখাও দিয়েছেন।
সেখানে লেখা, “নদীর ধারে বসে তুমি নদীর উপর ঢিল মারলে বা নদীকে গালি দিলে, তাতে নদীর কিচ্ছু যায় আসবে না। নদী নিজের ধারায় বয়ে যাবে। সেই প্রবাহমান নদীতে তুমি যদি সাঁতার না জেনে নামো, নদী তোমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।” নাম না করলেও, দর্শকদের মতে এই বার্তাটি দিতিপ্রিয়াকেই উদ্দেশ্য করে লেখা! বিশেষ করে সাঁতার না জেনে নদীতে নেমে ভেসে যাওয়ার উপমা, অনেকেই ধরে নিচ্ছেন এটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে না পারার প্রসঙ্গেই বলা। তবে জিতু এখনও কোথাও সরাসরি বলেননি যে এই মন্তব্য দিতিপ্রিয়াকে লক্ষ্য করে লেখা।
এই বিতর্কের আড়ালে দিতিপ্রিয়ার বর্তমান মানসিক অবস্থাও আলোচনায় এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, টানা সমস্যার পর নিজেকে কিছুদিন আড়ালে রাখতে চান। ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, যাতে বিগত মাসের চাপ থেকে কিছুটা দূরে থাকা যায়। সমাজ মাধ্যমে সমালোচনা আর কটাক্ষ মিলিয়ে তিনি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারেননি বলেই স্বীকার করেছেন। জনপ্রিয় একটি চরিত্রে অভিনয় করতে করতে হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে বিদায় নিতে বাধ্য হওয়াও যে তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছে, তা তাঁর কথার মধ্যেই বোঝা যায়।
এদিকে ধারাবাহিকে অপর্ণা চরিত্রে নতুন মুখ শিরিন পালকে দেখে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কেউ নতুন পরিবর্তন গ্রহণ করছেন, কেউ আবার দিতিপ্রিয়াকে দেখতে চাইছেন। যদিও এই প্রতিস্থাপন নিয়ে দিতিপ্রিয়া কোনও মন্তব্য করেননি, তবে তাঁর ওয়েব সিরিজ হারানোর বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা। অনেকেই বলছেন, ‘এত বড় সুযোগ যদি সত্যিই আসে, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সাধারণত আগেই প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেন। সেখানে শুধুমাত্র শিডিউলের কারণেই কি সত্যিই কাজ হাতছাড়া হতে পারে?’
আরও পড়ুনঃ কারর প্রতি রাগ নেই, ক্ষোভ নেই! জীবনে যা ঘটেছে সেটাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য! ক্ষমা মানুষ কি করে করবে? সেটা তো ঈশ্বরের কাজ! অকপট নীলাঞ্জনা
সব মিলিয়ে, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’কে ঘিরে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলো যেন শেষ হওয়ার নাম নিচ্ছে না। একদিকে নতুন জুটিকে নিয়ে অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে পুরনো দ্বন্দ্বের নতুন ব্যাখ্যা। দিতিপ্রিয়া নতুনভাবে শুরু করতে চান, এটা তিনি নিজেই বলেছেন। কিন্তু তাঁর মন্তব্যের পর যা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে বিতর্কের এই নতুন দফা এখনই শেষ হচ্ছে না। তবে, দর্শকদের প্রত্যাশা একটাই যে ভালো কাজ দেখবেন, ব্যক্তিগত বিরোধ নয়। আর শিল্পীদের ক্ষেত্রেও আশা, তাঁরা যেন পেশাদারিত্বের মধ্যেই নিজেদের সিদ্ধান্ত ও ব্যাখ্যাগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেন।
