২০ নভেম্বর ২০২২, জীবন-মৃত্যুর লড়াই থামিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। অল্প সময়ের ব্যবধানেই নিভেছে অভিনেত্রীর জীবন প্রদীপ। মা-বাবার কোল শূণ্য করে আজ সকলের থেকে অনেক দূরে তিনি। আজও ছোট মেয়ে ঐন্দ্রিলার স্মৃতি আঁকড়ে তাঁর মা-বাবা। মেয়ের মৃত্যুর বছরখানেক কাটতে প্রথমবারের জন্য পর্দায় এলেন ঐন্দ্রিলার মা-বাবা। মেয়ের স্মৃতিচারণে পুরনো কথা ফের একবার মনে করালেন তাঁরা।
অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা লড়াকু কন্যা। একের পর এক জটিল শারীরিক ব্যাধি হাসিমুখে পার করেছেন অভিনেত্রী। জয় করেছেন ক্যান্সারের মতো মারণ ব্যাধিও। কেবল ঐন্দ্রিলা নন মারণব্যাধি ক্যান্সার জয় করেছেন তাঁর মাও। ঐন্দ্রিলার যখন সাত বছর বয়স তখন তাঁর মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। বাবা না বললেও মায়ের শারীরিক অসুস্থতার কথা
ঠিক বুঝে নেয় ছোট্ট ঐন্দ্রিলা।
সম্প্রতি জি বাংলার একটি শো ‘ঘরে ঘরে জি বাংলা’ পৌছে গিয়েছিল অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার বাড়ি। তাঁর মা, বাবা ও দিদি ক্যামেরার সামনে প্রিয় ঐন্দ্রিলার কথা আরও একবার স্মরণ করান। এই এপিসোডের সঞ্চালক ছিলেন অভিনেতা বিশ্বজিত বসু। অভিনেত্রীর বাবা বলেন, সাত বছর বয়সী ছোট্ট ঐন্দ্রিলা তাঁর মায়ের ক্যান্সারের কথা শুনে হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন।
এরপর তিনি মনে করান ঐন্দ্রিলার জন্মদিনের সেই দিনটির কথা। যেদিন তাঁরা জানতে পারেন ঐন্দ্রিলা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন! তিনি বলেন, ২০১৫ সাল। ওর জন্মদিন ৫ ফেব্রুয়ারি। ঘড়িতে বাজে পৌনে ১২টা। ও বসে আছে, সবাই শুভেচ্ছা জানাবে। হঠাৎ আমাকে বলে, বাবা দেখো পেটের এখানটা কেমন শক্ত লাগছে। পেশায় চিকিৎসক উত্তম বাবু জানান, তিনি হাত দিয়ে দেখলেন বেশ শক্ত হয়ে রয়েছে জায়গাটা। ঐন্দ্রিলাও সেদিন প্রথম এই শারীরিক সমস্যার কথা উপলব্ধি করেন।
এরপর ঐন্দ্রলাকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির এইমস হাসপাতালে। ঐন্দ্রিলার সামনেই সেই ডাক্তার বলে, “এটা তো এখন অপারেশন করা যাবে না। জানেন কী হয়েছে। ওর তো ইউয়িং সারকোমা ক্যান্সার।” তাঁর শরীরে কর্কট রোগ! মনের যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা। এরপর তো দীর্ঘ সংগ্রাম। কর্কট রোগকে জয় করে কাজে ফেরেন অভিনেত্রী। কিন্তু সেই যুদ্ধ জয়ের শান্তি কিছুদিনের! জীবন যুদ্ধে লড়তে লড়তেই ২০২২-এর নভেম্বরে তারাদের দেশে পাড়ি দেন অভিনেত্রী। নাহ্, তিনি হারিয়ে যাননি। আজও আছেন সকলের মাঝেই।