বর্তমান সমাজে বাংলা ও বাঙালির অন্যতম পছন্দের বিনোদনের মাধ্যম হচ্ছে বাংলা সিরিয়াল! বহু ধারাবাহিকের ভিড়ে এক একটি ধারাবাহিক এক একজনের কাছে ভীষণ প্রিয়! আর তাই সন্ধ্যা নামলেই মা-কাকিমারা বসে যান টিভির সামনে নিজেদের পছন্দসই সিরিয়ালটি দেখতে! আর টিআরপি তালিকায় ভালো পারফর্মেন্স তো দেখাতেই হবে! তা না হলে যে অকালে সরে যেতে হবে! সম্প্রতি একাধিক চ্যানেলে বিভিন্ন সিরিয়াল বন্ধ হয়ে চালু হয়েছে একাধিক নতুন সিরিয়াল! আর নিত্য নতুন ধারাবাহিকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাঙালির সিরিয়াল প্রেম !
আর এবার বাঙালির এই সিরিয়াল প্রেমেই লেগেছে ধাক্কা! আসলে বিভিন্ন চ্যানেলে চলে এই ধারাবাহিকগুলি! যেমন জি, স্টার, সোনি! এই প্রত্যেকটি চ্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা সাবস্ক্রিপশন নিতে হয়! উল্লেখ্য, চলতি ফেব্রুয়ারি থেকেই TRAI-এর নতুন রেট আরোপ হবে বলে জানা গিয়েছিল। প্রায় ৩ বছর পর চ্যানেলের দাম বাড়ানো হয়েছে! আর এতেই ঝামেলা শুরু হয়েছে কেবল অপারেটর আর ব্রডকাস্টারের মধ্যে!
আর যার জন্য টিভি খুললেই এখন দেখা যাচ্ছে, একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা, স্টার ,জি এবং সোনি চ্যানেলগুলো প্রথমে দেখতে পাবেন না আর তারপরে একটি ইনফরমেশন আপনার স্ক্রিনে দেখতে পাবেন। যেখানে লেখা রয়েছে, TRAI এর নতুন আদেশে চ্যানেলগুলো মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়িয়েছে! গ্রাহকের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি! আর জন্য ব্রডকাস্টার আমাদের চ্যানেলটি বন্ধ করে দিতে পারে! আপনাদের সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য! দাম কমা না পর্যন্ত অপেক্ষা করুন দাম কমলে আপনারা আপনাদের প্রিয় চ্যানেলগুলো আবার দেখতে পাবেন। ততক্ষণ আমাদের সঙ্গে, থাকুন।”
এই ব্ল্যাকআউটের জেরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৪১ লাখ টিভিতে একাধিক জনপ্রিয় চ্যানেল দেখা যাচ্ছে না! জিটিপিএল-কেসিবিপিএল, হ্যাথওয়ে, ডেন, ফাস্টওয়ের মতো একাধিক কেবল অপারেটরেরা এখন সেটটপ বক্সের মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সংযোগ পৌঁছে দেয়। কিন্তু জি, স্টার, সোনির মতো নামীদামী সংস্থার মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেয়নি তারা! আর তাই এই পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গের ৪১ লাখ বাড়িতে দেখা যাচ্ছেনা প্রিয় চ্যানেল গুলি!
কেবল অপারেটদের আশঙ্কা, এমনিতেই OTT, ইন্টারনেটের জেরে টিভিতে কেবল, DTH সংযোগের প্রতি বর্তমানে গ্রাহকদের আগ্রহ কমছে। আর এবার দাম বাড়লে গ্রাহকরা কেবল সংযোগ ছেড়ে দেওয়ার দিকে ঝুঁকবে! কিন্তু ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির জেরে দাম বাড়ানোর পক্ষেই রয়েছে ট্রাই। গত বছর নভেম্বর মাসে নতুন ট্যারিফ অর্ডার ২.০ আনা হয়েছে। যার জন্য নতুন চ্যানেল নিতে গ্রাহকদের ১২ টাকা দিতে হত। আর এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ১৯ টাকা! আর যার জন্য শুরু হয়েছে প্রতিবাদ!
বড় বড় এই নেটওয়ার্কগুলির সঙ্গে শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই বিষয়ে অপারেটরদের দাবি, আদালতের তরফে এই মূল্যবৃদ্ধির ওপর ২০ তারিখ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ এই পরিস্থিতিতে চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে বডক্রাস্টাররা বেআইনি ধরনের কাজ করেছেন।