জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) এখন টেলিভিশনের পর্দায় অন্যতম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। শুরুর দিকে টিআরপির তালিকায় বিশেষ সাড়া না পেলেও, সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকটি প্রথম সারিতেই নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছে। দর্শক এখন প্রতিদিন সন্ধ্যার পর অপেক্ষা করেন অপর্ণা আর আর্যর রসায়ন দেখার জন্য। তবে শুধু মুখ্য চরিত্রই নয়, এই ধারাবাহিকের আসল প্রাণ যে অন্য কোথাও লুকিয়ে আছে, সেটা এখন দর্শকরা স্বীকার করতেই বাধ্য হচ্ছেন।
অপর্ণা আর আর্যর প্রেম কাহিনিতে যেখানে কোমলতায় ভরা, সেখানে মীরা চরিত্রটি গল্পে এনেছে এক অন্য মাত্রা। মীরা, অর্থাৎ ‘তন্বী লাহা রায়’ (Tonni Laha Roy)— যার অভিনয় আজ গোটা দর্শকমহলে আলোচনার বিষয়। যদিও তিনি ধারাবাহিকে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করছেন, কিন্তু তাঁর সংবেদনশীলতা, বেদনা আর ভেতরের লড়াই দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে। তন্বীর নিজের ভাষায়, “মীরাকে মানুষের পছন্দের জন্য তৈরি করা হয়নি, সারা জীবন মনে রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে!” দর্শকরাও যেন এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত!
কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, “মীরা চরিত্রে তন্বী ফাটিয়ে দিচ্ছে, দারুণ সিরিয়াস!” তবে, পর্দার বাইরের জীবনটা এত সহজ নয় তন্বীর জন্য। ব্যক্তিগত জীবনে একের পর এক ধাক্কা সামলেও তিনি দাঁড়িয়ে আছেন নিজের মতো করে। মাতৃবিয়োগের শোক, রাজদীপ গুপ্তের সঙ্গে ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক— সব মিলিয়ে এক গভীর অন্ধকারের মধ্যে দিয়েই যেন পেরিয়ে এসেছেন তিনি। তাই হয়তো মীরার মতো জটিল, আবেগপূর্ণ চরিত্রকে এত বাস্তবভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তিনি।
পুরস্কার জিতে তন্বী বলেছিলেন, “মীরা আগুনের মধ্যে দিয়ে হেঁটেছে, নিজেকে শেষ করে দিয়েও হেসেছে… ধন্যবাদ অন্ধকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্যকে দেখার জন্য।” তাঁর সেই কথাগুলিই যেন চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছে একাকার হয়ে। অন্যদিকে, ধারাবাহিকের গল্পে যেখানে অপর্ণা চরিত্রটি আর্যর থেকে বয়সে ছোট, সেখানে মীরা অনেকটা পরিণত, বাস্তব জীবনের মতো সম্পর্ক বোঝে গভীরভাবে। তাই আর্যর সঙ্গে তার মানসিক যোগ অন্যরকম। গল্পে যেমন তার প্রেম পরিণতি পায়নি, দর্শক মনে ঠিক তেমনই তার জায়গা তৈরি হয়েছে স্থায়ীভাবে।
আরও পড়ুনঃ একদিকে বোনের বিয়ে, অন্যদিকে কোটি টাকার লুট করতে নিশার প্ল্যান ঘিরে নতুন ঝড়! উজির দুশ্চিন্তা বাড়ছে, তবে কি ঋষির সঙ্গে এই মিথ্যে সম্পর্কে আজীবনের মতো জড়িয়ে পড়বে সে?— ‘জোয়ার ভাঁটা’য় আজকের টানটান পর্ব!
অনেকেই এখন প্রশ্ন তুলছেন— অপর্ণার চেয়ে মীরা কি আরও প্রাসঙ্গিক? কেউ এমনও লিখছেন, “অপর্ণা চরিত্রটা বড্ড ন্যাকা, মীরা অনেক বেশি বাস্তবিক!” উল্লেখ্য, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ মূলত এক অসমবয়সী প্রেমকাহিনি হলেও, এই ধারাবাহিকের আসল শক্তি তার চরিত্রগুলোর মধ্যে থাকা দ্বন্দ্ব আর সংবেদনশীলতা। আর সেই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতেই এখন মীরা। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়— আপনাদের চোখে কি এখন সত্যিই অপর্ণার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মীরা? জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!
