জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“ঠিক হয়েছে চুলের মুঠি ধরে ঘুরালে আরও ভালো হতো!” “থাপ্পড়টা আমি দিতে পারলে ভালো হতো! নেকি কুসুমকে আরও থাপ্পড় দেওয়া হোক যাতে ন্যাকামি কমে!”— ‘কুসুম’এর সাম্প্রতিক পর্ব নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন দর্শক, দাবি উঠছে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার!

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কুসুম’ (Kusum) শুরু থেকেই দর্শকদের মধ্যে এক আলাদা কৌতূহলের জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল। গ্রাম থেকে আসা এক সাধারণ মেয়ের স্বপ্ন, আত্মবিশ্বাস আর সংগ্রাম দিয়ে সাজানো গল্প অনেকেই শুরুতে পছন্দ করেছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই গল্প যেন বাস্তবতার ছাপ হারাতে বসেছে। একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং ঘিরে তৈরি হওয়া নাটক এখন একদম বাস্তব জীবনের সীমা ছাড়িয়ে আবেগ আর একরোখা মনোভাবের খাঁচায় বন্দি হয়ে পড়েছে। যেটা একসময় সহানুভূতির জায়গা ছিল, আজ তা-ই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, কুসুমের চোখে একটি অভিনয়ের মুহূর্ত হয়ে উঠেছে তার জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত সিঁদুর, কুসুমের কাছে তা যেন পরিণয় প্রতীক। যদিও আশপাশের সবাই বুঝিয়েছে, সে বুঝতেই চায় না। আয়ুষ্মান, যার সঙ্গে এই বিয়ের নাটক হয়েছিল, সে নিজেও প্রকাশ্যে বলেছে সে এমন কোনও সম্পর্ক মানে না। অথচ কুসুম লুকিয়ে-চুরিয়ে সেই সম্পর্ককেই টিকিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা করছে। এমন আচরণ দেখে অনেক দর্শকই বলছেন, এটা একতরফা প্রেম নয়, একপ্রকার জেদ!

আসলে কুসুমের এই ধরণের একরোখা এবং কখনও কখনও যুক্তিহীন আচরণই এখন সাধারণ দর্শকদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ধারাবাহিকে আয়ুষ্মান তার মা-কে সত্যিটা জানতে না দেওয়ার জন্য কত কিছু করেও শেষমেশ বিজ্ঞাপন পুরষ্কার জিতে যাওয়ার সুবাদে যখন সেটা ইন্দ্রানীর সামনে সত্যিটা আসে, তখন ঘটে বিস্ফোরণ। আয়ুষ্মান-কুসুমের বিয়েটা তিনি মানতে পারেন না। আয়ুষ্মান বোঝানোর চেষ্টা করলেও, কোনও লাভ হয় না। উল্টে ইন্দ্রানী একটার পর একটা চড় মারতে থাকেন আয়ুষ্মানকে।

যেখানে আজ পর্যন্ত বড় ছেলের উপর চিৎকার করেননি ইন্দ্রানী, সেখানে সামান্য কর্মচারীর মেয়ে হয়ে কুসুমের জন্য মা-ছেলের সম্পর্কে এমন দূরত্ব কুসুমের বাবা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তিনিও কুসুমকে চড় মেরে বাবা ডাকার থেকে বিরত থাকতে বলেন। এদিকে কুসুম শপথ নেয় যে, আয়ুষ্মান আর ইন্দ্রানীর সম্পর্ক আবার আগের মতো করে দেবে। এই ঘটনার পরই সমাজ মাধ্যমে কুসুমকে নিয়ে একের পর এক বিদ্রুপ শুরু হয়েছে। দর্শকদের একটা বড় অংশ বলছে, “ঠিক হয়েছে চুলের মুঠি ধরে ঘুরালে আরো ভালো হতো।

থাপ্পড়টা আমি দিতে পারলে ভালো হতো!” আবার কেউ লিখেছে, “ডিমের কুসুমকে ডিমের ভিতর থেকে বের করা উচিত হয়নি, ন্যাকা মহিলা একটা!” এমনকি কেউ কেউ বলছেন, “এতো নেকামি করে যে, ওর থেকে আমি ভালো অভিনয় করতে পারবো! ন্যাকি কুসুমকে আরো ৫/৬ টা থাপ্পড় দেওয়া হোক, যাতে একটু ন্যাকামি কমে!” কুসুমের শপথ শুনে একজন দর্শক লেখেন, “শপথ রাখুন, আগে বর ভাবা বন্ধ করুন আয়ুষ্মানকে!” এগুলো নিছক রসিকতা নয়, এই প্রতিক্রিয়াগুলো থেকে স্পষ্ট-মানুষ আর ধৈর্য্য ধরতে পারছে না।

সব মিলিয়ে ‘কুসুম’ এখন আর আগের মতো দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারছে না। একটা চরিত্র যখন বাস্তবতার বাইরে গিয়ে মাত্রাহীন আবেগে ডুবে যায়, তখন সেটি আর মানুষকে ছুঁতে পারে না, বিরক্তি তৈরি করে। গল্পে নাটক থাকতেই পারে, কিন্তু কুসুমের মতো চরিত্র যখন প্রতিটি পদক্ষেপেই নিজেকে জোর করে ‘বউ’ প্রমাণ করার চেষ্টায় থাকে, তখন সেই চরিত্রের উপর সহানুভূতির বদলে তৈরি হয় বিতৃষ্ণা। ধারাবাহিকের গতি ফেরাতে হলে গল্পের বাস্তবতা ফিরিয়ে আনা ছাড়া উপায় নেই।

Piya Chanda