শৈশবে ঘটে যাওয়া কিছু অন্ধকার স্মৃতি আমাদের জীবনের ওপর স্থায়ী ছাপ ফেলে দেয়। ঠিক তেমনই কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী (Famous Actress)। মাত্র ১০ বছর বয়সে, স্কুল ছুটির পর গাড়ির ভেতরে বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় ঘটে যায় এমন এক ঘটনা, যা আজও তাঁর মনে আতঙ্ক হয়ে রয়ে গিয়েছে। গাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ানো এক অচেনা ব্যক্তি আচমকা এমন কুরুচিকর আচরণ শুরু করেন, যার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না তিনি।
জানলার পাশ থেকে সেই ব্যক্তি শুরু করেন প্রকাশ্য হ’স্ত’মৈ’থুন! ছোটবেলায় এমন দৃশ্য দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই মুহূর্তে গাড়ির দরজা লক করে তিনি ভান করেন যেন কিছুই দেখেননি। তবু ভিতরে ভিতরে আতঙ্কে কেঁপে উঠেছিলেন। তাঁকে মনে হচ্ছিল, ওই ব্যক্তি হয়তো দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়বে। এই ভয়াবহ ঘটনাটিকে তিনি সারা জীবন ভোলার চেষ্টা করলেও আজও মনের গভীরে একটা অস্পষ্ট আতঙ্ক রয়ে গিয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, স্কুলবাসেও একাধিকবার অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন তিনি। বাসের কন্ডাক্টরের অশোভন স্পর্শ কিংবা তাঁর প্রতি কটূ দৃষ্টি যেন একটা নিরাপত্তাহীনতার দেওয়াল তৈরী করেছিল তাঁর চারপাশে। এমন অভিজ্ঞতা শৈশবেই তাঁর মনে পুরুষদের নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি ও আস্থাহীনতা তৈরি করে দেয়। তিনি বলেন, বহু বছর কাউকে ডেট করতে পারেননি। নিজেকে ঘিরে ফেলেছিলেন এক নির্দিষ্ট গণ্ডিতে।
কিন্তু ২০ বছর বয়সে বিদেশে যাওয়ার পর প্রথম কোনও সম্পর্কে জড়ানোর কথা ভাবেন তিনি। এর আগে সেই সাহস বা ইচ্ছা, কোনওটাই ছিল না তাঁর। নিজের পরিবারকেও বলেননি কিছুই, কারণ তিনি নিজেই সেসময় বুঝতে পারেননি যে আসলে কী ঘটছে তাঁর সঙ্গে। সেই সময়ের ভয়, সংকোচ, অনিশ্চয়তা আর না বোঝার যন্ত্রণা, সব মিলিয়ে এগুলো ছিল তাঁর কাছে একরকম দুঃস্বপ্নের মতো। বহুবার চেষ্টা করেছেন সেসব ভুলে যেতে, মনে হয়েছে সব যেন ভুল বা কল্পনা!
আরও পড়ুনঃ “ঐন্দ্রিলার জন্য উপহার কিনতে গিয়েই পকেট ফুটো হয়ে গেছে”— প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা অন্তঃপ্রাণ অঙ্কুশ! বিয়েটা হচ্ছে কবে? কি জানালেন নায়ক?
কিন্তু সেই স্মৃতিগুলো তাঁর সঙ্গেই থেকে গিয়েছে। এই সাহসী স্বীকারোক্তির মাধ্যমে তিনি শুধু নিজের মনের বোঝা কমাননি, বরং সমাজের প্রতিও রেখেছেন এক সতর্কতা। কীভাবে ছোটদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা যায়, সে কথা নতুন করে ভাবার দরজা খুলে দিলেন তিনি। এই সাহসী কণ্ঠ আর কেউ নন, জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও কৌতুকশিল্পী ‘জেমি লিভার’। ‘হাউজফুল ৪’, ‘ভূত পুলিশ’-এর মতো ছবিতে যাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি মনে রেখেছেন দর্শক। তবে এবার তিনি প্রমাণ করলেন, একজন নারী হিসেবে মানসিক জোর ঠিক কতটা বড় হতে পারে।