প্রায় ১৫০ টা সিনেমায় অভিনয়। প্রতিটি সিনেমাতেই ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। দর্শকরা তার সমসাময়িক নায়কদের মধ্যে তাকেই সব থেকে সুদর্শন আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি অভিনয় আর চেহারার দিক দিয়ে রীতিমতো টক্কর দিতেন অমিতাভ বচ্চনকে।
একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দেওয়া সেই অভিনেতা হলেন বিনোদ খান্না। অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবন এবং অভিনয় জীবন ছিল একেবারেই আলাদা একে অপরের থেকে। বলিউডের অন্যতম প্রতিভাশালী অভিনেতা হিসেবে ধরা হয় বিনোদকে। বাবার দেখাদেখি দুই ছেলে অভিনয় জগতে পা দিয়েছেন এবং প্রশংসা অর্জন করেছেন। এই অভিনেতা চিরতরে চলে গেলেও দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন।
আজ সেই বিনোদ খান্নার জন্মদিন। দেশভাগের সময় পেশোয়ার থেকে ভারতে চলে আসে পরিবার।১৯৫৭ সালে দিল্লি চলে যান মুম্বই থেকে। তখন তিনি সেখানে পড়ছিলেন তাই দিল্লিতে গিয়ে বাকি পড়াশোনা শেষ করেন। তিন বছর পর আবার মুম্বই ফিরে এলেন। কলেজে পড়ার সময় থেকে থিয়েটার করতেন কিন্তু ক্রিকেট ভালবাসতেন। অভিনয়ে সফল হতে দু’বছর সময় বেঁধে দিয়েছিল পরিবার।
প্রথম সিনেমায় প্রথম চরিত্র ছিল খলনায়কের। সেটা ছিল ‘মন কা মীত’। এরপর ‘আন মিলো সজনা’, ‘পূরব অউর পশ্চিম’, ‘মেরা গাঁও, মেরা দেশ’, ‘সচ্চা ঝুটা’, ‘মস্তানা’র মতো একের পর এক ছবি করে গেলেন। ১৯৭১ সালে ‘হম তুম অউর ওহ্’ ছবিতে প্রথম মুখ্য চরিত্র করার সুযোগ পেলেন বিনোদ।
সাত-আটের দশকে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কড়া প্রতিযোগিতা চলতো এই অভিনেতার। কিন্তু সব থেকেও একাকীত্বে ভুগছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর একেবারে ভেঙে পড়লেন তিনি। সন্ন্যাস নিয়ে আমেরিকায় ওশোর আশ্রমে চলে গেলেন। টয়লেটও পরিষ্কার করতেন সেখানে। পাঁচ বছর ধরে আশ্রমে থাকাকালীন স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেল তার।
একটা দীর্ঘ সময় তিনি ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ লুকিয়ে রেখেছিলেন নিজের শরীরে। মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানা যায়, ছ’বছর ধরে অসুস্থতা পুষে রেখেছেন বিনোদ। জার্মানিতে শুরু হলো চিকিৎসা। সেখানেই ২০১৭ সালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বিনোদ খান্না। তখন তিনি দাবাং সিনেমায় সলমন খানের বাবার চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। শেষমেষ ভাই প্রমোদের সঙ্গে তার চেহারা মিল থাকায় সলমনের বাবা চরিত্রে অভিনয় করতে দেওয়া হলো তার জায়গায়।