অরিজিৎ সিং(Arijit Singh), ভারতবর্ষের জনপ্রিয় গায়ক, যার সুরেলা কণ্ঠে মেতে ওঠে সারা বিশ্ব। যার গানের জাদুতে মনের মধ্যে জেগে ওঠে নানান অনুভূতি; আনন্দ-দুঃখ, একাকীত্ব-ভালোবাসায় তার গান থেকেছে সর্বদা আমাদের সাথে এবং পাশে। তবে জানেন কি আপনারা সেই স্বনামধন্য গায়ক থাকেন না মুম্বাইয়ের কোনও বড় অট্টালিকায় বা ফ্ল্যাটে।
হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন বাকি বলিউড তারকাদের মতো তিনি থাকেন না মুম্বাইয়ের কোনও ফ্ল্যাটে। আজও তার ঠিকানা মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। কারণটা একটাই তিনি থাকতে চাননা স্বনামধন্য গায়ক অরিজিৎ সিং হয়ে, তার কাছে অনেক বেশি আপন “সোমু” নামটি। জিয়াগঞ্জের উন্নতির জন্য তিনি করেছেন অনেক কাজ, যেমন হাসপাতাল তৈরি, খেলার মাঠ সংস্করণ। মুর্শিদাবাদের নারীদের ইংরেজি শিক্ষায়ও তার সাহায্য দৃষ্টান্তমূলক।
বাংলা মা এবং পাঞ্জাবি বাবার সন্তান তিনি। ছোট থেকেই পড়াশোনা করেছেন জিয়াগঞ্জের বিজয় সিং স্কুলে। বর্তমানে যার পরিচালনা সমিতির সদস্য তিনি। স্কুলের উন্নতির জন্য করেছেন অনেক কাজ। তাই এবার মায়ের স্মরণেই স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন তিনি। অরিজিৎ সিংয়ের মা অদিতি সিং ২০২১ সালে করোনা আক্রান্ত হন। প্রথমে তাকে জিয়াগঞ্জের হাসপাতালে, তারপর বহরমপুরের মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে টিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তবে করোনা মুক্ত হলেও মাল্টি অর্গান ফেলিওরের কারণে শেষ রক্ষা হয়নি। মাত্র ৫৭ বছর বয়সেই অরিজিৎ সিংয়ের মা অদিতি সিং পরলোক গমন করেন। তবে মায়ের উদ্দেশ্য অরিজিৎ করেছেন অনেক কিছুই। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তৈরি করেছেন অরিজিৎ। তবে সর্বদাই তার কাজের প্রশংসা করেছেন অনেকে।
তার প্রশংসা করেছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিজে। জিয়াগঞ্জের উন্নতিতে তার অবদানের কথা বারবার বলেছে তিনি। তাকে সমস্ত রকমের সাহায্যেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেমন কথা তেমন কাজ। বুধবার সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন “অরিজিৎ ভালো গান করে, তাকে সম্প্রতি জঙ্গিপুরের জমি অনুদান হয়েছি। কারণ সে স্কুল থেকে শুরু করে অনেক কিছু করেছে সে। আমি খুব খুশি, তাকে তার কাজের জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।” সূত্রে খবর, অরিজিৎ সিংয়ের মায়ের নামে তৈরি সংস্থায় জমিটি দান করেছেন তিনি।
হাসপাতাল, স্কুল প্রভৃতি নির্মাণের জন্য তাকে যে জমিটি দেওয়া হয়েছে, সেটি রঘুনাথগঞ্জ থানার অধীনে পড়ে। মায়ের নামে ওইজমিটি বেশ জনবহুল এলাকায় এবং আসে পাশে রয়েছে পাকা রাস্তাঘাট এবং বাজার। জমিতে ইতিমধ্যেই পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। শীঘ্রই শুরু হবে স্কুল। আপাতত দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হবে সেখানে। মা অদিতি সিংয়ের নামেই তৈরি হবে স্কুলটি। অরিজিৎ সিং জানিয়েছেন তিনি মনে করেন তার শহরের উন্নতির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন তিনি। কারণ তার মনে শিক্ষা এবং খেলাধুলাই ভবিষ্যত গরিতে পারে যুব সমাজের।