বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনুরাধা রায়। ১৯৮৮ সালের কর্ত্রী সিনেমার হাত ধরেই তিনি পা রেখেন অভিনয় জগতে। তারপর ঝিনুক মালা, ইন্দ্রজিৎ, চৌধুরী পরিবার, আপন পর, মানসম্মান, বিয়ের লগ্ন, বিশ্বাস অবিশ্বাস, সংসার সংগ্রাম, মানমর্যাদা, রাখি পূর্ণিমা, অগ্নিশিখা, জামাইবাবু জিন্দাবাদ, পরিবার, বিয়ের ফুল, তুমি এলে তাই, সজনী, আই লাভ ইউ, নীল আকাশের চাঁদনী, শশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, জিও পাগলা, কর্ণসুবর্নের গুপ্তধন, চল কুন্তল সহ একাধিক সিনেমা করেছেন তিনি।
তবে শুধু সিনেমাতেই নয় ধারাবাহিকের মাধ্যমের মানুষকে তার অভিনয়ের দ্বারা মুগ্ধ করেছেন তিনি। বোঝেনা সে বোঝেনা, বন্ধন, ইষ্টি কুটুম, গোয়েন্দা গিন্নি, অর্ধাঙ্গিনী, বকুল কথা, গানের ওপারে সহ বহু ধারাবাহিক করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি অভিনয় করছেন স্টার জলসার ম্যাজিক মোমেন্টের প্রযোজিত ধারাবাহিক চিনিতে। তার ধারাবাহিক মিষ্টি চরিত্র থেকে একদম পৃথক তার এই চরিত্রটি। তার চিনি ধারাবাহিকের চরিত্রটির সম্বন্ধে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কি বললেন তিনি?
এই বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন “হ্যাঁ সিনেমায় রচনার শাশুড়ি হিসেবে করেছে কিন্তু ছোট পর্দায় প্রথমবার। খুব মজা লাগছে আর শুধু নয় অনেকটাই নেগেটিভ চরিত্র। এতদিন একরকম করে এসেছি একটা একদম কনট্রাস্ট চরিত্র। সবসময় ফন্দি আঁটছি, দুষ্টুমি করছে বেশ ভালো লাগছে।”
তিনি এও জানান যে “মানুষ তো পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্টায় তাই একদিক থেকে তাকে ঠাম্মিকে খারাপ লাগলেও তিনি নিজের জায়গায় ঠিক। তিনি সবসময় চান দ্রোণকে মানে নাতিকে তার আয়ত্তে রাখতে। মানে ঠাম্মি যা বলবে নাতিকে তাই করতে হবে। ঠাম্মি নাতিকে নিয়ে খুব পসেসিভ। নাতির ভালোর জন্যই সে সব কিছু করছে। তার উদ্দেশ্য কাউকে ক্ষতি করা নয় শুধু নাতির ভালো চান তিনি।” তিনি কাউকে নিয়ে এরকম পসেসিভ কিনা সেই কথায় তিনি জানিয়েছেন “না একদমই না, আমি মনে করি যে যার নিজের গতিতে স্বচ্ছন্দ থাকুক। আমি কাউকে কন্ট্রোল করব বা কেউ আমায় কন্ট্রোল করবে আমি সেটা পছন্দ করি না।”
আরও পড়ুন- ব্যতিক্রমী! জন্মদিনে মথুরা ভ্রমণে সৌমীতৃষা, কেকের পরিবর্তে প্রসাদেই জন্মদিন উৎযাপন
যদি কেউ জর করে তবে কি তিনি প্রতিবাদ করেন? সেই উত্তরে তিনি বলেছেন “না আমি প্রতিবাদী নয়, যদি কেউ আমায় কন্ট্রোল করতে যায় আমি সরে আসি সেখান থেকে।আসলে পনেরোই আগস্ট জন্মেছি তো তাই একটু স্বাধীনচেতা।” বর্তমান সমাজে মেয়েদের যে স্বাধীনতা ছিল সেইসময় সেটা ছিল না এই বিষয়ে তিনি বলে “খুব কম স্বাধীনতা ছিল আর তার মধ্যে আমি যৌথ পরিবারের মেয়ে আমার বাবা মা খুব কড়া ছিলেন। নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ ছিলাম কিন্তু তার মধ্যেও চেষ্টা করতাম নিজের মত থাকতে। যদিও তারা এটাও করেনি যে সব আমার ওপর চাপিয়ে দিতেন।”
“তবে আমার শশুরবাড়িতে আমি সবসময় স্বাধীন ছিলাম শুধু বলবো আমার অভিনয়ের ইচ্ছে ছিল না সেটা শশুরবাড়ি থেকে এসেছে। অনেক শুনেছি যে শাশুড়ি এবং বউমার মধ্যে বনে না কিন্তু আমি শাশুড়ি মার থেকে অনেক ভালোবাসা সমর্থন পেয়েছি। অভিনয় না করলে হয়তো অন্যকিছু করতাম কিন্তু করতাম। এরকমও হয়েছে সে সকলে বারণ করেছে কিন্তু শাশুড়ি মা বলেছেন না ওটা করবে।”
তিনি এও বলেন তার চরিত্রটি প্রগ্রেসিভ কিনা সেটাসময়ের সঙ্গে বোঝা যাবে। এই ধারাবাহিকে তার লুকস নিয়ে তিনি বলেছেন “খুব ভালো লাগছে। এমনিও আমার সাদা এবং কালো খুব ভালো লাগে। একদম দুধে সাদা শাড়ি আর সোনার গয়নার খুব ভালো লাগছে বাকিটা সবাই বলবে।” বিয়ের মহাপর্ব নিয়ে তিনি জানান সকলেই খুব চিন্তা কি হবে। সেটাসময় আসতে আসতে জানা যাবে কি হয়।”
বর্তমান সমাজে মেয়েদের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে সেই বিষয়ে তিনি বলেন “আমার মনে হয় মেয়ে হোক বা ছেলে সবারই আগে একটা ক্যারিয়ার করতে হয় তারপর বিয়ে করা উচিত। কারণ ছেলেদেরও মনে হয় একটা চাকরি করা মেয়ে বিয়ে করে মানতে পারবে কিনা এবং একটা মেয়েরও মনে হয় তার স্বাধীনতায় শ্বশুরবাড়ির লোক হস্তক্ষেপ করবে কিনা? তো আমার মনে হয় দুজনকেই একটু নামিয়ে কম্প্রোমাইজ করে চলতে হবে।”
শেষে তিনি সকলকে অনুরোধ করেন তিনি দেখার। স্টার জলসায় সোম থেকে রবি ঠিক রাত সাড়ে ১০টায়।