জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

কেটে গেছে দীর্ঘ সাত বছর, এখন‌ও কথা বলতে পারেন না, হাঁটতে অপরাগ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাতি রণদীপ বসু!

তিনি ছিলেন বাংলা সিনেমার আইকন। উত্তম কুমার পরবর্তী তিনিই হয়ে উঠেছিলেন বাংলা সিনেমার মুখ। তিনি ছিলেন বাংলার সর্বশেষ আইকন। তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chattopadhyay ) । ১৫ই নভেম্বর,২০২০ বাঙালি হারিয়েছিল তাদের সর্বশেষ আইকনকে। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা, কোভিড পরবর্তী জটিলতা নিয়ে দেড় মাসের ওপর হাসপাতালে থাকার পর এই দিনটিতেই সবাইকে ছেড়ে চলে যান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা সিনেমা দুনিয়ায় বিরাট বড় জায়গা দখল করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এক লহমায় ফাঁকা হয়ে যায় সেই জায়গা।

প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পী শুধুমাত্র একজন অভিনেতাই ছিলেন না। নাটক, কবিতা, গান সর্বত্রই ছিল তাঁর দৃপ্ত পদচারণা। তিনি চলে গেছেন আজ প্রায় চার বছর। কিন্তু আজও তার স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত বাংলা। তবে সময় থেমে থাকে নি। এগিয়ে চলেছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভাবকে সঙ্গী করেই ছবি হচ্ছে।
তবে একজনের জীবন আজ‌ও থমকে রয়েছে সৌমিত্রতেই।

বলাই বাহুল্য, প্রায় দুবছর পরেও শুধুই তার স্মৃতি আঁকড়ে জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর নাতি। কাটাচ্ছেন বলাই ভালো। কারণ জীবন যাপন করা তার বন্ধ হয়েছে আজ থেকে সাত বছর আগেই। এখন জীবন সংগ্রাম করে চলেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন লড়াইয়ের অপর নাম।‌ তিনি “রণদীপ বসু।”

দাদুর মতোই অভিনয়কেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল রণদীপ। উল্লেখ্য, ‘এগারো’ ছবি দিয়ে তাঁর অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর “Dutta v/s Dutta”র মতো দর্শকের মন ছুঁয়ে যাওয়া একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন রণদীপ। তবে আজ অভিনয় করা তো দূরস্ত ক্যামেরার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারেন না তিনি। এতগুলো বছর পেরিয়ে আজ‌ও প্রতিনিয়ত তিনি লড়াই করে চলেছেন শরীরের সঙ্গে। শারীরিক অবস্থা আগের থেকে অনেকটা ভালো হলেও এখন‌ও ঠিক করে কথা বলতে পারেন না, হাঁটতে চলতেও পারেন না রণদীপ।‌

রণদীপ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা পৌলমী বসুর ছেলে। ২০১৭ সালের একটি বাইক দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণভাবে বদলে যায় রণদীপ বসুর জীবন। বাড়িতে অভিনয়ের পরিবেশ। দাদু মহা তারকা। মা সফল থিয়েটার কর্মী। আর তাই তাদের হাত ধরেই, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই অভিনয় পা রাখেন রণদীপ। স্বল্প সময়েই জিতে নেন বাঙালি দর্শকের মন। দারুন গুণী ছিলেন তিনিও। কিন্তু প্রতিভা বিকশিত হওয়ার আগেই সেই প্রতিভার যেন অকাল মৃত্যু ঘটে।

না, আগের জীবনে আর ফেরা হবে না তার। রণদীপ এখন আর কথা বলতে পারেন না সেই অর্থে। জড়িয়ে যায়। খুব কষ্ট হলেও হাঁটাচলা করার চেষ্টা করছেন তিনি। এই অসহায় কষ্টকর জীবনে আজ‌ও তাঁর সবটা জুড়ে দাদু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। দাদুর আবৃত্তি, অভিনয়, ভাষ্যপাঠ সমানে শোনেন তিনি। মনে বল পান। তিনি নিশ্চয়ই একদিন না একদিন সুস্থ হবেন। ফিরবেন পর্দায়। আশায় তার দর্শকরা। ‌

TollyTales NewsDesk