বাংলা টেলিভিশন (Bengali Television) থেকে বাংলা সিনেমা (Bengali Cinema) সর্বত্রই ছিল তার অবাধ আধিপত্য। অসম্ভব প্রতিভাবান অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। ভিলেন রূপে রীতিমতো দর্শকের মনে ভয় ধরাতেন তিনি। ঘেন্না করতে বাধ্য করতে। এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত ছিল তার অভিনয়। এমনই জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে আমরা হারিয়েছি অকালে। বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রিকে আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল তার। কিন্তু বড্ড অসময়ে চলে যান তিনি।
১৯৯৬ সালে আত্মজা ছবিতে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে নিজের অভিনয়ে জীবনের যাত্রা পথ শুরু করেছিলেন অভিনেত্রীর রিতা কয়রাল। এরপর ক্রমশই তার ঝুলি ভরতে থাকে। একের পর এক সফল সিনেমার হাত ধরে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। পারমিতার একদিন, অসুখ, খেলাঘর, দত্ত ভার্সেস দত্ত, গণেশ টকিজ, জীবন নিয়ে খেলার মতো বহু প্রশংসিত ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
কিন্তু আলোর পিছনে যেরকম অন্ধকার থাকে সেই রকমই রিতা কয়রালের সাফল্যমন্ডিত জীবনের পিছন ছিল আঁধারে পরিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে লিভারের ক্যানসারে ভুগছিলেন অভিনেত্রী। অত্যন্ত গুরুতর শারীরিক অবস্থাতেও কাজ করেছেন অর্থের প্রয়োজনে। মাঝেমধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হত। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবারও তিনি ফিরে আসতেন নিজের কাজের ক্ষেত্রে।
তবে ২০১৭ সালের ১৭ই নভেম্বর আর ফেরেননি তিনি। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে চিরকালের জন্য না ফেরার দেশে চলে যান সবার প্রিয় রীতা কয়রাল। তার ব্যক্তিগত জীবনও ছারখার হয়েছিল। প্রথমবার তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জনপ্রিয় অভিনেতা তথা ভিলেন অভিনেতা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। না একেবারেই সুখের হয়নি তাদের দাম্পত্য। ২০০০ সালে মারা যান সৌমিত্র। এরপর দ্বিতীয়বার বিয়ে করলেও সেই সম্পর্ক খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। শেষের দিকে মেয়ে অমৃতাকে নিয়ে আলাদাই থাকতেন অভিনেত্রী রীতা কয়রাল।
আরও পড়ুন: বাঁধন ছিঁড়ে নিজেকে মুক্ত করলো দীপা! তবে লাবণ্য কই? শাশুড়িকে খুঁজতে ফের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দীপা
এমনকি নিজের কর্ম জগতেও হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন অভিনেত্রী।কেরিয়ারেও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। একটি ভিডিওতে তিনি জানিয়েছিলেন, বলিউডের নামকরা অভিনেতা অনুপম খের তাকে হুমকি দিয়েছিলেন। কারণ, বাড়িওয়ালি ছবিতে কিরণ খেরের জন্য ডাবিং করেছিলেন তিনি। তাকে দিয়ে সেই কাজ করান অনুপম কিন্তু পরে তিনি রটিয়ে দেন কিরণ খের নাকি নিজেই কথা বলেছেন। এই অপমানে যথেষ্ট দুঃখ পেয়েছিলেন রিতা। এবং সেই দুঃখ নিয়েই চলে গেছেন তিনি।