প্রত্যন্ত গ্রামের সরু পথ, কাঁচা বাড়ি, আর ফুটবলকে ঘিরে স্বপ্ন—সব মিলিয়ে শৈশবটা যেন ছিল এক রঙিন কল্পলোক। মাঠ কাঁপানো ফুটবলার হওয়ার ইচ্ছে ছিল তার। ফুটবল মানেই ছিলপৃথিবীর সবচেয়ে বড় মঞ্চ। কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তব খুব ছোট বয়সেই অভিনেতার সামনে এসে হাজির হয়।
ছোটবেলায় যেখানে স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে ছুটে যাওয়ার সময়, তার কাঁধে এসে পড়েছিল পেট চালানোর দায়িত্ব। সকালবেলায় স্কুল, রাতে কারখানার কাজ—পড়াশোনার বই ছেড়ে অভিনেতা তখন আর জীবনের অঙ্ক মেলাতে ব্যস্ত। এরপরেই শুরু হয় অন্য জীবনের গল্প। খড়দহ শুরু হয় অভিনেতা শংকর চক্রবর্তীর অভিনয়ের পথচলা। সেখান থেকেই প্রথম সিরিয়ালে সুযোগ, আর তোতলা গণেশের চরিত্র অভিনয় করে চমকে দিয়েছিলেন সমগ্র বাংলা।
টলিউডে যত তারকার ঝলক, ততটাই অন্ধকার থাকে মেধাবী অভিনেতাদের চারপাশ। প্রসেনজিৎ বা চিরঞ্জিত মতো তারকারা বারবার আলোচনায় থাকলেও, শংকর চক্রবর্তীর মতো প্রতিভাধর অভিনেতারা হারিয়ে যান চুপিচুপি। তোতলা গণেশের মতো জনপ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করে যে অভিনেতা একসময় দর্শকের মনে ঝড় তুলেছিলেন, আজ তিনি কাজের অভাবে দিশেহারা।
অভিনয়ে অগাধ প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও হাতে না আছে নতুন কাজ, না আছে স্থায়ী আয়। সংসারের টানাপোড়েনে দিন কাটছে ভীষণ কঠিনভাবে। এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে—টলিউড কি সত্যিই প্রতিভাকে ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে? নাকি মেধাবীদের হারিয়ে যাওয়া নিয়তি?
আরও পড়ুনঃ ‘ঘেন্না পেলে বুঝি আমি ঠিক কাজই করছি… যখন তোমাকে কেউ অপছন্দ করছে, ভাববে ঠিক পথে আছো!’ সমালোচনা নিয়ে গায়িকা অঙ্কিতা ভট্টাচার্যর দৃঢ় বার্তা!
শংকর চক্রবর্তীর মতো অভিনেতারা যখন সুযোগ না পেয়ে বাড়িতে বসে থাকেন, তখন দর্শকমনেও প্রশ্ন তৈরি হয় ‘কেন একজন অভিনেতার এমন পরিস্থিতি?’। একসময় যাঁর অভিনয়ে হাসত, কাঁদত সমগ্র বাংলা—আজ সেই অভিনেতাই কাজের আশায় দিন গুনছেন। টলিউডের অন্দরের এই বাস্তব কি বদলাবে? নাকি আরও অনেক শংকর চক্রবর্তী হারিয়ে যাবেন অযত্নে?
