জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘লোকে আমার গায়ের রং নিয়ে নোংরা মন্তব্য করেছে, কিন্তু লোকে কী বলল, আমায় যায় আসে না, কারও কথায় নিজেকে পাল্টাবো না!’ অকপট শিঞ্জিনী

নতুন বছরে নতুন বার্তা নিয়ে হাজির টলি অভিনেত্রী অভিনেত্রী ‘শিঞ্জিনী চক্রবর্তী’ (Shinjinee Chakraborty) । বর্তমানে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখনীতে তৈরী স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে বর্ষার চরিত্রে অভিনয় করছেন। অভিনেত্রীর অভিনয় প্রথম আত্মপ্রকাশ জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘উমা’ (Uma)-র মাধ্যমে। সেখানে এক সাহসী ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রীকে। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন রাখা উমাকে সবার বেশ মনে ধরেছিল।

উমা থেকে যে যাত্রা শুরু, তারপরে ‘চিরসখা’-য় এখন যে চরিত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁকে, তা নিয়ে কম আলোচনায় থাকেননা তিনি। তবে এবার নায়িকা নয়, খলচরিত্রে বলেই যেন সমালোচনার মুখোমুখি। এই পরিবর্তন কি ইচ্ছাকৃত? শিঞ্জিনীর জবাব স্পষ্ট, “নায়িকা হওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা তাঁর ছিল না। বরং চরিত্রের গভীরতা, গল্পের প্রয়োজন আর অভিনয়ের সুযোগের দিকেই আমার ঝোঁক বেশি।” কে কী ভাবছে, তা নিয়ে চিন্তা না করে নিজের পথেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।

তবে জানেন কি এই সফরটা এতটাও সহজ ছিলো না তাঁর জন্য, গায়ের রং নিয়ে ছোটবেলা থেকে নানা কথা শুনতে হয়েছে। মডেলিংয়ে পা রাখার প্রথম দিনেই তাঁকে জানানো হয়েছিল— ত্বককে ফর্সা দেখাতে হবে, চড়া মেকআপে নিজেকে পাল্টে ফেলতে হবে। কিন্তু সেখানেই প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, তাঁর ‘ডাস্কি’ ত্বকই তাঁর পরিচয়, সেটাই তাঁর আত্মবিশ্বাস, এই রঙই তাঁর অলঙ্কার।

গায়ের রং নিয়ে সমালোচনা, সামাজিক চাহিদা কিংবা রূপের মাপে ‘সুন্দর’ হওয়ার সংজ্ঞাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ছোট পর্দার পরিচিত মুখ বললেন “সমাজের গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে নিজের আত্মপরিচয়কে প্রতিষ্ঠিত করাই আসল”। নববর্ষে নিজেকে ভালোবাসার বার্তাই তুলে ধরলেন অভিনেত্রী। বললেন, “আমি যেমন আছি, তেমনটাই ঠিক। গায়ের রং বদলে ‘আদর্শ’ হওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই।”

আত্মমর্যাদায় ভরপুর শিঞ্জিনী বুঝিয়ে দিলেন, নিজেকে ভালোবাসার কোনও বিকল্প নেই। শিঞ্জিনী মনে করেন, আত্মপ্রেম বা ‘সেলফ লাভ’ শুধুই ফ্যাশন নয়— এটা এক ধরনের সংগ্রাম, এক ধরনের চর্চা, যা সময় নিয়ে গড়ে ওঠে। নিজেকে ভালোবাসার যাত্রাটা সহজ ছিল না তাঁর জন্য। আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হয়েছে ধাপে ধাপে। শরীর, গায়ের রং, চেহারা— এই সব নিয়ে কটাক্ষ শুনেও থেমে যাননি তিনি।

বরং, প্রতিবাদ না করে নিজের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন তিনি কারও চেয়ে কম নন। আর আজ সেই আত্মবিশ্বাসের আলোয় জ্বলজ্বল করছেন পর্দার বাইরে ও ভিতরে। বছরের প্রথম দিনে মানুষ যখন নিজেদের নতুন করে গড়ে তোলার সংকল্প নেয়, তখন শিঞ্জিনীর বার্তা— “নিজেকে ভালোবাসুন, যেমন আছেন ঠিক তেমন। সমাজের চোখে নিজেকে বদলাবেন না। নিজের আলোর ঠিকানা নিজেই হয়ে উঠুন।”

Piya Chanda