জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘লকডাউনে আমি পাড়ার মোড়ে সবজি বিক্রি করেছি’, ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়ের জীবনের অজানা কাহিনী, আজ সব পেরিয়ে তিনি সফল অভিনেতা!

অভিনয় জগতের ঝলমলে আলোয় আজ তিনি, কিন্তু এই জার্নি এতটাও সহজ ছিল না। ছোট থেকে সংগ্রাম, জীবন যুদ্ধ আর মায়ের আত্মত্যাগ—এই তিনে মিলে তৈরি হয়েছে অভিনেতা ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়ের সাফল্যের ভিত। টেলিভিশনের পর্দায় আজ তাঁর হাসিমুখ দেখতে পাওয়া গেলেও সেই হাসির পেছনে রয়েছে অজস্র ত্যাগ, ঘাম, এবং চোখের জল।

‘আনন্দী’ ধারাবাহিকে বর্তমানে অভিনয় করছেন ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়। এর আগেও ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘মন দিতে চাই’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু অভিনয়ের এই মসৃণ পথের পেছনে ছিল এক বন্ধুর লড়াই। ক্লাস ফোরে পড়ার সময়ই তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। একমাত্র সন্তান হিসেবে তখন থেকেই মায়ের সঙ্গে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন। ছেলের স্বপ্নপূরণে কোনও কষ্টই বেছে নিতে দ্বিধা করেননি মা।

wriwik mukherjee

থিয়েটারে অভিনয়ের নেশায় মজে থাকা ঋত্বিক একাধিক চাকরি করেছেন, আবার ছেড়েও দিয়েছেন। কারণ একটাই—নিজের স্বপ্নকে মরতে দিতে চাননি তিনি। বহুবার হাল ছাড়ার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন, কিন্তু মায়ের ভরসা আর নিজের আত্মবিশ্বাসই তাঁকে টিকিয়ে রেখেছিল। জমানো টাকা দিয়েই থিয়েটারের খরচ সামলেছেন, কিন্তু কখনও নিজের ইচ্ছে থেকে সরে আসেননি।

ঋত্বিক নিজেই জানিয়েছেন, “লকডাউনের সময় আমি পাড়ার মোড়ে সবজি বিক্রি করতাম।” সেই সময়টাই বদলে দেয় তাঁর জীবন। কারণ এরপরেই জি বাংলার চোখে পড়ে যান তিনি। সুযোগ আসে অভিনয়ের। আর তারপরেই তাঁর জীবন ঘুরে যায়। এখন তিনি বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, যার অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক।

‘দাদাগিরি’-র মঞ্চে সৌরভ গাঙ্গুলির সামনে দাঁড়িয়ে চোখে জল নিয়ে ঋত্বিক বলেন, “মা কোনওদিন ৬০-৭০ টাকার বেশি জুতো কেনেনি, দামী লিপস্টিক ব্যবহার করেনি, ভালো গ্রুমিং কিটও ছিল না। আমি চাই, মা যা পায়নি, আমি তাকে সব দিই।” নিজের সাফল্যের আসল কারিগর হিসেবে মাকেই তুলে ধরেছেন তিনি। এই কথা শুনে দাদাও মুগ্ধ হয়ে বলেন, “অবশ্যই তোমার স্বপ্নপূরণ হবে।”

আজকের ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়ের সাফল্যের নেপথ্যে আছে শুধুই কঠিন পরিশ্রম আর মায়ের আত্মত্যাগ। তাঁর জীবনের এই গল্প শুধুই এক অভিনেতার সাফল্য নয়, বরং মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা হাজারো ছেলের প্রেরণা। একজন ছেলের চোখ দিয়ে দেখা স্বপ্ন কিভাবে একজন মা নিজের কাঁধে তুলে নেয়—সেটাই যেন প্রতিফলিত হয়েছে এই গল্পে।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page