গত বছরের শেষের দিকে মারা যান অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী স্ত্রী তথা অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী সোনালী চক্রবর্তী।এই তারকা দম্পতি বাঙালি দর্শকের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। বরিশালের বর এবং কলিকাতার কনে এই অনুষ্ঠানটি আজও বাঙালির মনের কুঠুরিতে থেকে গেছে। বলা যায় আগামী দিনেও থেকে যাবে।
এই অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন অভিনেতার শঙ্কর চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী তথা অভিনেত্রী সোনালী চক্রবর্তী। ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এই অনুষ্ঠানটি। একটা সময় বাংলা সিনে দুনিয়ায় অপরিহার্য ছিলেন সোনালী চক্রবর্তী। গত বছর সেই জনপ্রিয় অভিনেত্রীই জীবনযুদ্ধে হেরে চলে যান সবাইকে ছেড়ে। প্রয়াত হন অভিনেত্রী সোনালী চক্রবর্তী।
আজও তাঁর স্মৃতি ভার করে আসে শঙ্কর চক্রবর্তীর দুই চোখে। আসল মানুষ চলে গেলেও তাঁর স্মৃতি কিন্তু অমলিন। আর সেই স্মৃতি আঁকড়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান সাথী হারা মানুষেরা। গাঁটছড়া ধারাবাহিকে খড়ির জেঠিমা রূপে অভিনয় করতে করতেই হঠাৎই ছন্দপতন হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেত্রী সোনালী চক্রবর্তী। দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু লড়াই জিতে আর বাড়ি ফেলা হলো না মৃত্যুতেই হলো সমাপ্তি।
সোনালী চক্রবর্তী ও শঙ্কর চক্রবর্তীর একটি মেয়ে। বর্তমানে মেয়ের অধীনে, মেয়ের শাসনেই রয়েছেন অভিনেতা বলে জানিয়েছেন। শত বাধার মধ্যেই নব্বইয়ের দশকে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। অভিজাত পরিবারের মেয়ে ছিলেন সোনালী দেবী। আর তুলনামূলক ভাবে দরিদ্র পরিবারের ছেলে ছিলেন শঙ্কর চক্রবর্তী। যদিও তাঁদের মধ্যে কোনওদিন কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। শঙ্করের প্রেমে পড়েছিলেন সোনালী।
চায়ের দোকানে কাজ করা থেকে সিনেমা টিকিট ব্ল্যাক করা সব কাজই করেছেন শঙ্কর চক্রবর্তী। বিয়ের পর অবশ্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেরানির চাকরিও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওই অভিনয়ের ভূত তাড়া করে বেড়াতো। পা রাখেন অভিনয় জগতে কিন্তু সেই সময় মেগা সিরিয়ালের কনসেপ্ট ছিল না। দুটি ধারাবাহিকে হিরো হিসেবে কাজ করলেও জনপ্রিয়তা পাননি পরে অবশ্য ভিলেন হিসেবে জনপ্রিয়তা পান।
বাংলার খ্যাতনামা, প্রসিদ্ধ, আইকনিক অভিনয় শিল্পী উৎপল দত্তের সঙ্গে থিয়েটারে কাজ করতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করেন নায়ক খলনায়ক নয় তাঁকে ভালো করে অভিনয়টা করতে হবে। আর তাই ভালো অভিনেতা হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যান তিনি। একটি সাক্ষাৎকারে অকপট হয়ে অভিনেতা জানিয়েছেন, এই জীবনে প্রচুর টাকা নষ্ট করেছেন তিনি। বিশেষ করে গাড়ির পিছনে অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন। তাঁর আক্ষেপ সময় থাকতে যদি তিনি তাঁর সহধর্মিণীর কথা শুনতেন তাহলে হয়ত এতটা অর্থের অপচয় হত না তাঁর।