বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। তাঁকে মানুষ চেনেন বিভিন্ন ধারাবাহিক, সিনেমার সৌজন্যে। কিন্তু তিনি এমন একজন মানুষ তার জীবনটা সম্পূর্ণ ভাবেই সিরিয়ালের মতো।
পর্দায় যে মানুষটাকে হাসি খুশি দেখা যায় তাঁর জীবনের প্রতিটা পর্যায়ে অনেকটা করে অন্ধকার মিশে আছে। বিভিন্ন সময় ঠকলেও হ্যাপি এন্ডিং-এর আশা ছাড়তে পারেন না অভিনেত্রী। তিনি মল্লিকা ব্যানার্জি।
বলা যায় অনুপ্রেরণার অপর নাম মল্লিকা। বাংলা টেলিভিশনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক সব চরিত্রেই নিজের অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন এই অভিনেত্রী। জীবনের বহু ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজও সুখের আশা রাখেন এই অভিনেত্রী।
বাস্তব জীবনে বিভিন্ন সময়ে প্রতারিত হয়েছেন অভিনেত্রী মল্লিকা ব্যানার্জি। একটি অনুষ্ঠানে মুখ খুলেছিলেন এই নিয়ে। আদতে বেলুড় নিবাসী ছিলেন এই অভিনেত্রী। বাবা ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। অভিনেত্রীরা ছিলেন তিন বোন। মল্লিকা যখন ক্লাস এইটে পড়েন সেই সময় অসু্স্থ হয়ে পড়েন তাঁর বাবা। আর তার পর থেকেই তাঁদের এড়িয়ে চলতে শুরু করেন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাও। মাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে ওই বয়সেই নাচের স্কুল খুলে ফেলেন মল্লিকা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতে ব্যাকআপ ডান্সারের কাজও শুরু করেন তিনি।
নৃত্যশিল্পী হলেও একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন অভিনেত্রী। যদিও তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। কম বয়সে একজনের প্রেমে পড়ে ঘর ছেড়ে ছিলেন তিনি। বিয়েও করেন সেই মানুষটাকে। তাঁদের এক কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। যখন তাঁর মেয়ের বয়স যখন ৯ বছর তখন তাঁর স্বামী তাঁদের ছেড়ে অন্যত্র সংসার পাতেন। স্বপ্ন, বিশ্বাস এক লহমায় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল মল্লিকা দেবীর।
সেই সময় তাঁকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে অভিনয়। পা রাখেন অভিনয় জীবনে। ‘সোহাগে সিঁদুর’ ছিল তাঁর প্রথম ধারাবাহিক। এরপর প্রেমে পড়েছিলেন তিনি একজনের। এমনকি সেই ব্যক্তির কথায় নিজের অভিনয় জীবনটাও বিসর্জন দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু অচিরেই ভাঙ্গে ভ্রম। সেই মানুষটার কাছেও ঠকেছিলেন অভিনেত্রী। যদি আজ জীবনে সফল তিনি। সবটাই করেছেন নিজের হাতে, নিজের প্রচেষ্টায়। আজও বাবার কথা মনে রেখে তিনি আশা রাখেন হ্যাপি এন্ডিংয়ের।