জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“শুধু একজন অভিনেত্রী বা পরিচালক নিয়ে ছবি হয় না”! – সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ডাইনি’ প্রসঙ্গে নাম না নিয়েই রাজ-শুভশ্রীকে কটাক্ষ মিমির!

টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) সম্প্রতি তার নতুন ওয়েব সিরিজ ‘ডাইনি’-এর (Dainee) মুক্তি উপলক্ষে নিজের বাড়িতে এক সাক্ষাৎকারে হইচই (Hoichoi) -তে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিরিজের প্রসঙ্গে মিমি জানান, সমাজের ভ্রান্ত ধারণা ভাঙার উদ্দেশ্যেই এই গল্প তৈরি হয়েছে। ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, জলপাইগুড়িতে বড় হওয়ার সময় তিনি দেখেছেন কীভাবে কিছু মহিলাকে ‘ডাইনি’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হতো। এমনকি ছোটবেলায় তিনিও বেশ ডানপিটে ছিলেন—ফুল-ফল চুরি করা ছিল তার অন্যতম শখ।

বিশেষ করে টক ফল খেতে ভালোবাসতেন, আর মজার ছলে তিনি সেগুলোকেই ‘বিষ ফল’ বলে ডাকতেন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, জীবনে তাঁকে কখনও কেউ ‘বিষ’ বলে আখ্যা দিয়েছে কি না? উত্তরে মিমি হেসে বলেন, “এখনো মাঝেমধ্যে শুনতে হয়, তবে সামনে বলার সাহস কেউ করেনি আজ অব্দি!” ইন্ডাস্ট্রিতে বহুবার তাঁকে নিয়ে নানান গুজব ছড়িয়েছে, তবে এসব নিয়ে আর মাথা ঘামান না তিনি। কিন্তু একসময় যা তার কাছে কষ্টের কারণ ছিল, আজ তা নিয়ে হাসতে শিখেছেন।

image 67

তবে মিমির জীবন শুধু ক্যামেরার আলোয় রঙিন ছিল না, ব্যক্তিগত জীবনেও কম ঝড়ঝাপটা যায়নি তাঁর ওপর দিয়ে। একসময় পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) সঙ্গে তাঁর প্রেম নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে জোর গুঞ্জন ছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক টেকেনি। গুঞ্জন, রাজের জীবনে শুভশ্রী গাঙ্গুলীর (Subhashree Ganguly) প্রবেশের পরই মিমির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। যদিও সেই পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে চান না মিমি, কিন্তু বলিউডের মতো টলিউডেও যে সম্পর্ক এবং বন্ধুত্ব একসঙ্গে টেকে না, তা তিনি বুঝে গেছেন।

যদিও এই প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলেননি মিমি, তবে একটা সময় তিনি ইন্ডাস্ট্রি থেকে কিছুটা সরে গিয়েছিলেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছু। অতীতের মনোমালিন্য ভুলে এখন মিমি এবং শুভশ্রী একে অপরের কাজের প্রশংসা করেন। মিমি বলেন, “আমার প্রতিটা কাজেই শুভশ্রী অনেক অনুপ্রেরণা দেয়। ওর কাজও আমার ভীষণ ভালো লাগে।” ব্যক্তিগত জীবনের পুরনো কাহিনি নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয়, মিমি হাসতে হাসতে বলেন, “মানুষ ভুল থেকে শেখে, আমিও শিখেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কারও হাত ধরিনি।

যেদিন পাব, অবশ্যই সবাইকে জানাবো।” এই আড্ডার মাঝেই উঠে আসে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে সমাজের কুসংস্কার। মিমি বলেন, এখনও এই বিষয়টি নিয়ে ট্যাবু রয়েছে, যা ভাঙা উচিত। এছাড়াও তাঁর মানসিক দুঃসময়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে। মিমি জানান, কিছু সময় এমন ছিল যখন ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের টানাপোড়েন তাকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, কিন্তু সময়ের সঙ্গে শিখেছেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কারও পাশে চিরকাল থাকে না।

তবে আজ তিনি আগের থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সহজ নয়, কিন্তু কিছু কাছের বন্ধু এখনো তাঁর পাশে আছেন। এখনো তার গুটি কয়েক কাছের বন্ধু আছে, যাদের মধ্যে ‘অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের’ (Anindya Chatterjee) অন্যতম। মাঝেমধ্যেই তাদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ওঠে, কিন্তু মিমি এটাকে শুধুই বন্ধুত্ব বলেই ব্যাখ্যা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। মিমি বলেন, “চারিদিকে প্রচুর লোক আছে নিন্দা করার জন্য কিন্তু নিজের কাজটা নিজেকেই করে যেতে হবে।

আমি মূলত নিজেকে সর্বেসর্বা ভাবতে খুব একটা পছন্দ করি না, অনেককে নিয়েই একটা সিনেমা হয়। সেখানে একজন পরিচালক বা অভিনেত্রী একা কিছু করতে পারে না।” ‘ডাইনি’ মুক্তির সঙ্গেই মিমি আবার ক্যামেরার সামনে পুরোদমে ফিরেছেন। ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়ার পরেও তিনি এখনও নিজের কেরিয়ার ও জীবন নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। একদিকে সমাজের পুরনো কুসংস্কার ভাঙার প্রচেষ্টা, অন্যদিকে সম্পর্কের সমীকরণ বদলানো—সব মিলিয়ে মিমির জীবন এখন এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page