জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘যে মানুষ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়, সে আবার এত দ্রুত সুস্থ হয়ে নাচতে পারে কী করে!’ ‘ব্রেন স্ট্রোক না ছাই অসুস্থতার নাটক যত!’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষবিদ্ধ অভিনেত্রী সায়ন্তনী মল্লিক!

সাম্প্রতিক আলোচনার ঝড় যেন থামতেই চাইছে না ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকের শিল্পীদের নিয়ে! আর এইবার ধারাবাহিকে সদ্য যুক্ত হওয়া অভিনেত্রী ‘সায়ন্তনী মল্লিক’কে (Sayantani Mullick) নিয়ে শুরু হয়েছে সমাজ মাধ্যমে আলোচনা। মাস দুয়েক আগেই তিনি নিজের হাসপাতালের একটি ছবি ভাগ করেছিলেন, যেখানে ক্লান্ত-শ্রান্ত মুখে স্বামীর কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ছবির ক্যাপশনে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ঈশ্বর আর স্বামী ইন্দ্রনীলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই পোস্ট দেখেই ভক্তরা প্রথম বুঝতে পারেন যে, অভিনেত্রী নিশ্চই কোনও ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন।

এইসব ঘটনার সূত্রপাত গত ৮ সেপ্টেম্বর। দীর্ঘদিনের শুটিং শেষে সেইদিন বাড়িতে টিভি দেখছিলেন সায়ন্তনী, আচমকাই মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পরিস্থিতি বুঝে নেন ইন্দ্রনীল এবং তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের মতে, ওই অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর ব্রেন স্ট্রোক ধরা পড়ে আর দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় বড় বিপদ এড়ানো যায়। কয়েকদিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফিরে চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে বিশ্রামে কাটান তিনি। ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে এগোতেই আবার কাজে ফিরেছিলেন।

কারণ দীর্ঘদিন এক জায়গায় থেমে থাকা তার স্বভাব নয়। এদিকে কাজে ফেরার পর আবারও শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে তাঁর নতুন চরিত্রের শুটিং শুরু হওয়ার মাঝেই তিনি একটি রিল ভিডিও পোস্ট করেন। যেখানে গানের তালে নাচতে দেখা যায় তাকে। আর সেটাই কিছু নেটিজেনের চোখে যেন ‘অপরাধ’। তারা দাবি তোলেন, ‘যে মানুষ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়, সে আবার এত দ্রুত সুস্থ হয়ে নাচতে পারে কী করে!’ কেউ কেউ তো সরাসরি অভিযোগ করেন, অভিনেত্রীর অসুস্থতা ছিল ‘সাজানো নাটক’!

সমালোচনার মুখে চুপ না থেকে সায়ন্তনী স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন এদিন। সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করা তাঁর জন্য বাধ্যতামূলক। অসুস্থ সময়টায় যাঁরা তাঁর জন্য উদ্বিগ্ন হয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশও করেন তিনি। পাশাপাশি আক্ষেপও করেন, যে কিছু মানুষ পরিস্থিতি না বুঝে কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন! নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘ব্রেন স্ট্রোক মানেই যে মানুষ বিছানায় পড়ে থাকবে, তা নয়। সঠিক চিকিৎসা আর নিয়ম মানলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব।’

ভিডিও বার্তাটির শেষে তিনি অনুরোধ করেন কাউকে না জেনে আঘাত না করতে। মানুষের ব্যক্তিগত লড়াই কতটা গভীর হতে পারে, তা বাইরে থেকে বোঝার ক্ষমতা নেই কারোর, তাই তিনি সমালোচকদের উদ্দেশে শুধু এটুকুই বলেন,”আপনাদের মনটা সুস্থ হোক! সেটা হলে হয়তো অন্যের কষ্টটুকুও বুঝতে পারবেন।” তাঁর এই পরিপক্ক, শান্ত প্রতিক্রিয়া দেখে অনেকেই নতুন করে উপলব্ধি করেছেন, ক্যামেরার সামনে উজ্জ্বল এক তারকার পেছনেও থাকে সংগ্রাম, ভয় আর পুনরুদ্ধারের দীর্ঘ পথচলা।

Piya Chanda