ছোটোবেলায় আমরা সকলেই কিছু না কিছু হতে চাই। কেউ ডাক্তার, কেউ পাইলট, কেউ অভিনেত্রী। তবে বড় হতে হতে বুঝতে পারি, সেই স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গেলে পেরোতে হয় অনেক কাঁটা। কিছু স্বপ্ন সহজে ধরা দেয় না। আবার কেউ কেউ সব বাধা পেরিয়ে জিতে নেন যুদ্ধ। এই পথচলার নায়িকাদের একজন ‘নিম ফুলের মধু’-র কৃষ্ণা ওরফে অভিনেত্রী অরিজিতা মুখোপাধ্যায়।
যাঁদের আমরা রোজ টিভির পর্দায় দেখি, তাঁদের জীবন কিন্তু শুধু সাজগোজ আর ক্যামেরার ঝলকানিতে ভরা নয়। সেই রঙিন পর্দার আড়ালে থাকে অনেক অন্ধকার। রোজ রোজ কঠিন লড়াই। অনেকেই এই যুদ্ধে হার মানেন। তবে কেউ কেউ আবার বুক চিতিয়ে দাঁড়ান, লড়াই চালিয়ে যান। ঠিক যেমনটা করেছেন অরিজিতা মুখোপাধ্যায়।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অরিজিতা বলেন, “চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে আসার পরই শুরু হয় মহামারী। তখন কেউ চিনত না, হাতে টাকা নেই, কাজ নেই। সাংঘাতিক ডিপ্রেশন হচ্ছিল। পার্থদা, সুদীপাদি, তুলিকাদি পাশে না থাকলে হয়তো ভেঙে পড়তাম।” এভাবেই শুরু হয় তাঁর লড়াই। তবে এখানেই শেষ নয়।
অভিনেত্রী জানান, “লুক সেট হয়ে গিয়েছিল, তাও কাজ চলে গিয়েছে। কারণ বলা হয়েছে, দেখতে ভাল লাগছে না। এর আগে কখনও কেউ বলেনি আমি দেখতে খারাপ। কিন্তু টেলিভিশনে এসে শুনলাম, আমি ‘এনাফ’ নই। প্রথমে মনে হয়েছিল ভুল শুনছি। তারপর বারবার শুনতে শুনতে বিশ্বাস করে ফেললাম – হ্যাঁ, আমি দেখতে খারাপ। আয়নার দিকে তাকানো বন্ধ করে দিয়েছিলাম।” এই মানসিক অবসাদ তাঁকে ভিতর থেকে ভেঙে দিয়েছিল, এমনকি নিজেকে আঘাত করতেও শুরু করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ জি বাংলায় আসছে নতুন ধারাবাহিক দাদামণি! আবারও ছোট পর্দায় নায়ক প্রতীক সেন! কেমন হলো ‘দাদামণি’র প্রথম প্রোমো? কে থাকছে প্রতীকের বিপরীতে জানেন?
এই রিজেকশন একবার নয়, দু’বার পেয়েছিলেন অরিজিতা। প্রতিবার একই কারণ—‘দেখতে ভাল না’। অথচ আজ সেই অরিজিতা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। ‘নিম ফুলের মধু’ ধারাবাহিকের কৃষ্ণা চরিত্র বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন। এখন দর্শকের ভালবাসায় স্নান করছেন তিনি। এত কষ্ট, এত অবজ্ঞার পরেও কখনও অভিনয় ছাড়েননি, স্বপ্ন দেখাও বন্ধ করেননি। বরং প্রমাণ করেছেন, দেখতে কেমন সেটা নয়, মন আর সাহস থাকলে স্বপ্ন সত্যি হয়।