জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“জমানো টাকার দেখা নেই উল্টে ঋণ, পেটের দায় সিরিয়াল করছি!” “এখনকার দিনে নতুন মুখ নির্বাচন হয় দের মিনিটের রিল দেখে!— নতুন প্রজন্মকে নিয়ে কটাক্ষের সুর শঙ্কর চক্রবর্তীর গলায়!

টলিউডের যেসব প্রতিভাবান ও বহুমুখী শিল্পীরা আছেন যারা নিজেদের চরিত্রে প্রবল গভীরতা এবং অনুভূতি দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে দক্ষ, তাদের মধ্যে একজন হলেন অভিনেতা ‘শঙ্কর চক্রবর্তী’ (Sankar Chakraborty)। অভিনয়ের অনন্য শৈলী দিয়ে প্রতিটি চরিত্রে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলার দক্ষতা রাখেন তিনি। তার কেরিয়ার শুরু হয় মঞ্চ নাটক দিয়ে, কিন্তু খুব শীঘ্রই টেলিভিশনে ও চলচ্চিত্রে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন।

তাঁর প্রতিটি চরিত্রে থাকে এক ধরণের আত্মবিশ্বাস এবং মানবিকতা, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। শঙ্করের অভিনয়ে যে আত্মবিশ্বাস দেখা যায়, তা শুধু পর্দার চরিত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও সেভাবে দৃশ্যমান। ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন অত্যন্ত বিনম্র ও সৃজনশীল মানুষ, যিনি অভিনয়ের মাধ্যমে জীবনের গভীরতর অনুভূতিগুলো দর্শকদের কাছে নিয়ে আসেন। কিন্তু এই ব্যাক্তিত্বের জীবনের গল্পটা ঠিক কি? জনেন না অনেকেই।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের ব্যাক্তিগত জীবন আর টলিউডের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যার মধ্যে তিনি প্রথমেই বলেন, “এখনকার দিনে কাস্টিং ডিরেক্টর অভিনয় দেখে না, বরং সমাজ মাধ্যমের দের মিনিটের রিল দেখে অভিনেতা অভিনেত্রী নির্বাচন করেন।” তিনি আরও বলেন যে যারা নির্বাচিত হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই অভিনয় করতে জানেন না। এই প্রসঙ্গে নিজের অভিনয় জগতে আসার পেছনের গল্পও শোনান।

অতীতে অভিনেতার নাম ছিলো অমলেষ চক্রবর্তী, মা বড় ছেলেকে হারিয়ে অভিনেতাকে “হারাধন” বলে ডাকতেন। মা-বাবা মারা যাওয়ার পর দূরসম্পর্কের এক মামার বাড়িতে দিন কাটিয়েছেন তিনি, সেখানেই স্কুলের নাম দেওয়া হয় শঙ্কর। রবীন্দ্রভারতীতে গিয়ে আবৃত্তি করে সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন একসময়। তিনি পড়াশোনা করতে দেওয়ার বিনিময় মামার ছোট্ট ব্যাবসা সামলাতেন। ছোটো থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভীষণ টান ছিল তাঁর।

পাড়ার নাটকের দলে প্রথম অভিনয়ে সুযোগ মেলে তাও আবার লোক কম পড়াতে। সেখানেই প্রথম মেন রোলে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন, পেয়েছিলেন রুপোর মেডেল। এরপরে আর দোকানে মন বসেনি তার, “মনে হতো অন্যান্য পেশাতে নাম দীর্ঘস্থায়ী হয়না, যেটা অভিনয় করলে হয়”। কিন্তু অভিনয় করবো বললেই তো আর করা হয় না? তার জন্য উপযুক্ত হতে হয়, সেই ভাবনা থেকেই যোগ দেন থিয়েটারে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।

একসময় কিনবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, “শঙ্করকে ঠিক মতন ব্যাবহার করা হলো না, নাহলে ও আরও বড় হতো।” বর্তমানে অভিনেতা বাংলা ছবিতে তেমন ডাক পাননা বলে বিশেষ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমার জমানো টাকা নেই, পেটের দায়ে সিরিয়াল করতে হচ্ছে, নাটক আমার ভালোবাসা কিন্তু ওটাতে আয়ে হয়না।” অভিনেতা বলেন তার মেয়ে এখন মুম্বাইয়ে একজন প্রতিষ্ঠিত সহ পরিচালক, সম্প্রতি ‘মিস্ডম্যাচ’ সিরিজটিতে কাজ করেছেন। মেয়ের বারণ সত্বেও তিনি আজও পর্দা ছাড়েননি।

Piya Chanda