জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘ডিভোর্স নয়, সময় চেয়েছিলাম, মেন্টাল সেপারেশনে ছিলাম! সেটাই চিরবিদায় হবে ভাবিনি’—স্বামীর চলে যাওয়ার পর আজ‌ও তাকে ঘিরেই বাঁচেন ‘মিঠিঝোরা’ অভিনেত্রী পৌষমিতা গোস্বামী!

অভিনয় জগতে প্রতিদিন আলো, ক্যামেরা, অ্যাকশনের আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনেক না বলা গল্প। দর্শকরা যাদের দেখে হাসে, ভালোবাসে, জীবনের প্রেরণা খোঁজে—তাদের জীবনের ভিতরেও থাকে তীব্র ঝড়। তেমনই এক হৃদয়বিদারক বাস্তবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পৌষমিতা গোস্বামী। মিঠিঝোরা ধারাবাহিকের নায়িকা হলেও, বাস্তব জীবনের ট্র্যাজেডি যেন তাঁর থেকে অভিনয়ের রঙ ছিনিয়ে নিয়েছে।

পৌষমিতা ও তাঁর স্বামী অর্ণব রায় প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন। ২০২১ সালে আইনি বিয়ে ও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামাজিক রীতিতে তাঁদের চার হাত এক হয়। তবে সুখের সংসার খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। দাম্পত্য জীবনের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তাঁরা একসঙ্গে না থেকে কিছুদিন আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তবে এটা কোনও বিচ্ছেদের গল্প ছিল না। বরং তাঁরা নিজের মতো করে সময় চেয়ে নিয়েছিলেন—নিজেদের বোঝার জন্য, সম্পর্ককে আরেকবার নতুন করে গড়ে তোলার জন্য।

তবে সেই প্রতীক্ষিত ‘ফের একসাথে হওয়া’র দিন আর এল না। চলতি মাসেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আচমকাই প্রয়াত হন অর্ণব রায়। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান পৌষমিতার জীবনসঙ্গী। এই খবরে পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি রীতিমতো শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়েন পৌষমিতা নিজেও। কিন্তু তবুও দুই দিন বাদেই আবার কাজে ফিরে যান তিনি—কারণ তাঁর বিশ্বাস, “অর্ণব বেঁচে থাকলে বলত কাজ থামিও না।”

অভিনেত্রী জানান, তিনি এখনও তাঁর স্বামীকে ভালোবাসেন, এখনও বিশ্বাস করেন অর্ণব তাঁর চারপাশে রয়েছেন। অর্ণবের মৃত্যুর পর বারবার তাঁর কথা মনে পড়ে, মনে পড়ে ভালোবাসার মুহূর্তগুলো, জীবনের প্রতিটি পরত যেখানে অর্ণব ছিলেন পাশে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি চাই না কেউ আমার মতো কষ্ট পাক, কারও জীবনসঙ্গী যেন এত অল্প সময়ে চলে না যায়।”

অর্ণবের সঙ্গে শুধু সম্পর্ক ছিল না, ছিল একটি প্রোডাকশন হাউজের দায়িত্বও। এখন সেই দায়িত্বও একা সামলাচ্ছেন অভিনেত্রী। তিনি বিশ্বাস করেন, কাজই এখন তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ‘মিঠিঝোরা’ ধারাবাহিকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের যন্ত্রণাকে আড়াল করে চলছিলেন তিনি। কিন্তু সেই অন্ধকার থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। অর্ণব নেই, কিন্তু তাঁর স্মৃতি রয়ে গেছে চিরকাল। সেই স্মৃতিই এখন অভিনেত্রীর জীবনজুড়ে আলো-আঁধারির গল্প লিখে চলেছে।

Piya Chanda