জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘আমার গণেশ মানে অবাঙালি সাজ নয়! বাঙালি ঘরের মতো সরল রূপই আমার কাছে আসল’, গণেশ পুজোয় বাঙালির অবাঙালি রীতি নিয়ে মুখ খুললেন ভাস্বর চ্যাটার্জী

কলকাতার পুজো মানেই দুর্গোৎসবের আবহ। তবে গত কয়েক বছরে শহরের উৎসবের ক্যালেন্ডারে ঢুকে পড়েছে এক নতুন নাম—গণেশ চতুর্থী। আগে যেটা ছিল মূলত মহারাষ্ট্রের সংস্কৃতি, এখন সেটাই ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলার অন্দরমহলেও। এদিন শহরের বহু অলিগলিতে রঙিন প্যান্ডেল, আলোর ঝলকানি আর মিষ্টির গন্ধে জমে উঠছে উৎসব। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, বহু তারকাদের বাড়িতেও এখন দেখা যাচ্ছে এই পুজোর আয়োজন।

আজকের দিনে তাই প্রশ্ন ওঠে—টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় কেমনভাবে কাটাচ্ছেন গণেশ চতুর্থী? অভিনেতা নিজেই জানালেন, শুটিং থাকলেও ভক্তিতে কোনও ভাটা পড়ে না। তাঁর কথায়, “আমাদের বাড়িতে প্রতিদিনই পুজো হয়। আজকের দিনে ঠাকুরঘরে নিজেই গণেশ ঠাকুরকে পুজো করেছি।” বিশেষ দিনে গণেশের জন্য নিরামিষ ভোগ, ফল আর প্রসাদ নিবেদন করেছেন ভাস্বর। তবে মহারাষ্ট্রের মতো মোদক তাঁর পুজোতে নেই। কারণ, সেটা বাঙালি সংস্কৃতির অংশ নয় বলেই মনে করেন তিনি।

ভাস্বর স্পষ্ট জানালেন, আড়ম্বরের থেকেও আসল ভক্তি মনের মধ্যে। তাঁর কাছে গণেশ মানেই বাংলার নিজস্ব রূপ—সাধারণ মাটির মূর্তি, যেটা তিনি নিজেই রং করেছিলেন। ঝলমলে গয়না, ছাতা বা মহারাষ্ট্রীয় সাজসজ্জায় সাজানো গণেশ তাঁর পছন্দ নয়। তিনি বলেন, “আমাদের গণেশ মানে অবাঙালি সাজ নয়। বাঙালি ঘরের মতো সরল রূপই আমার কাছে আসল।”

মহারাষ্ট্রের বিশাল আয়োজনকে ভাস্বর অসম্মান করেন না। তবে তাঁদের অনুকরণ করার প্রয়োজনও দেখেন না। অভিনেতার মতে, “যার যার ঠাকুর, তাদের সংস্কৃতি অনুযায়ী পুজো করা উচিত। ওঁরা কি আমাদের সংস্কৃতি মানেন? তা তো নয়।” তাঁর দাবি, কলকাতায় মাত্র কয়েক বছর ধরে বড় আকারে গণেশ পুজো শুরু হয়েছে, যা অনেক সময় অতিরিক্ত জাঁকজমকপূর্ণও হয়ে উঠছে। এর তুলনায় আগে ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো হতো, কিন্তু এখন সেই ছবি বদলে যাচ্ছে।

অভিনেতার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্য রক্ষা। তিনি মনে করেন, গণেশ পুজো হোক সরলভাবে, ভক্তি থাকুক অন্তরে। কারণ বাংলার মানুষ বরাবরই গণেশকে পরিবারের ছেলে হিসেবেই দেখেছে, নয়তো আড়ম্বরপূর্ণ উৎসবের দেবতা হিসেবে নয়। তাঁর মতে, বাঙালি হুজুগে হলেও নিজের সংস্কৃতি মেনে চলা উচিত। তাই শেষ কথা একটাই—ভক্তির আসল মানে আড়ম্বর নয়, বরং ভেতরের বিশ্বাস আর ঐতিহ্যের টান।

Piya Chanda