দীর্ঘদিন যাবৎই বাঙালির গর্ব, আবেগের অন্য নাম হলেন বাংলার পুত্র অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী(Mithun Chakraborty)। তবে শুধু তিনি যে বাঙালির মন জিতেছেন এমনটা নয়, তিনি বাংলা থেকে বলিউডে গিয়ে অপার আধিপত্য কায়েম করেছেন। শূন্য থেকে শুরু করে আজ তাঁর স্টারডম প্রত্যেকটা মানুষের কাছেই শিক্ষনীয়, প্রশংসনীয়। আসলে মিঠুন চক্রবর্তী রাজত্ব করেছেন টলিউড থেকে বলিউডে। কাশ্মীর ফাইলস হোক বা প্রজাপতি তিনি অভিনয় নিজের জাদু দেখিয়েছেন সর্বত্র।
অন্যদিকে বাংলার অন্যতম বড় তারকা হলেন অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। বাংলা স্বর্ণযুগের অভিনেতা তিনি। পরিচালনায় করেছেন তিনি। যদিও এখন বড় একটা সিনেমায় তাঁকে দেখা যায় না। বরং অনেকটা বেশি করে তিনি এখন যুক্ত রাজনীতির ময়দানে। বাংলা সিনেমায় তাঁরও অনন্য অবদান রয়েছে। চিরঞ্জিত চক্রবর্তী এবং মিঠুন চক্রবর্তী দুজনেই বাস্তব জীবনে বেশ ভালো বন্ধু। কিন্তু তাঁদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর রাজনৈতিক পার্থক্য। একদিকে যেমন মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপির নেতা অন্যদিকে চিরঞ্জিত তৃণমূলের। আর এই রাজনৈতিক পার্থক্যের জন্যই বিভিন্ন সময় মিঠুন চক্রবর্তীকে ঘিরে বিরূপ মন্তব্য করেছেন চিরঞ্জিত।
যেমন কিছু মাস আগে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বহিরাগত তারকাদের আমন্ত্রণ জানানো এবং ঘরের ছেলে বর্ষীয়ান অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়! সেই সময় মিঠুনকে আমন্ত্রণ না জানানো প্রসঙ্গে চিরঞ্জিত বলেছিলেন, বিষয়টা বুঝুন, আপনি যদি আমাকে গালাগালি করেন, তাহলে আমি নিশ্চয়ই আমার মেয়ের বিয়েতে আপনাকে নিমন্ত্রণ করব না। এখানেও বিষয়টা একই রকম।
আর এবার ফের একবার মিঠুন প্রসঙ্গে বিস্ফোরক হলেন চিরঞ্জিত। অভিনেতা একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমাদের পুরনো বন্ধুত্বে কোনও চির ধরেনি। যদিও আমাদের মধ্যে আর কথা হয়নি। কিন্তু আমি আমি জানি ও বুঝবে। আমি সবসময় লজিক্যাল কথাই বলি। আমি দেব হতে পারব না। আমি ওকে সিনেমাতেই নেব না যতক্ষণ ও বিজেপির হয়ে কাজ করছে। এটাই আমার লজিক। ও অন্য দলের ওকে পাবলিসিটিটা আমি কেন দেব? প্রশ্ন চিরঞ্জিতের।
উল্লেখ্য, টলিউডের অন্যতম নামী তারকা দেব কিন্তু তৃণমূল সাংসদ। আর কিছুদিন আগেই তিনি সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধকে দূরে সরিয়ে নিজের প্রযোজনায় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘প্রজাপতি’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। দারুণ সাফল্য লাভ করেছে এই সিনেমাটি। মিঠুনের সঙ্গে অভিনয় করার জন্য কটাক্ষ হজম করতে হয়েছে দেবকও। যদিও সেই সময় অভিনেতা দেব জানিয়েছিলেন রাজনীতি সঙ্গে তাঁর পেশাদারী জীবনের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। কাজ কাজের জায়গায়। সেখানে তিনি রং দেখেন না। একই কথা বলেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তীও।
যদিও চিরঞ্জিত এমনটা ভাবেন না। তাঁর কথায়, দেব মিঠুনকে কোনও সিনেমায় নিচ্ছে মানে, মিঠুনের মুখ দিয়ে ২ লক্ষ পোস্টার পড়ছে। সঙ্গে মিডিয়া কভারেজ, এইসব করে আমি ওঁকে আরও পপুলার হতে সাহায্য করছি। মিঠুন চক্রবর্তী তো একজন মৃতপ্রায় তারকা। ওঁকে আমি নতুন জীবন দেওয়া মানে খরচ হচ্ছে দেবের, কিন্তু সাহায্যটা পাচ্ছে বিজেপি। আর তাই আমি এই বিরুদ্ধেই কথা বলব।