জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“কোয়েলকে ব্ল্যাঙ্ক চেক সই করে দিয়েছিলাম, সেই চেক আজও ব্যাঙ্কে জমা পড়েনি!”— কোয়েলের এই মহত্ত্বে মুগ্ধ দেব! অভিনেত্রীর সততা আর সম্পর্কের মূল্যবোধই আজও আলোয় রাখে তাঁদের বন্ধুত্বকে! আপনার মতে সেরা জুটি, দেব–শুভশ্রী না দেব–কোয়েল?

টলিউডের বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রায় এক দশক পর ফের একসঙ্গে হাজির হলেন দেব ও শুভশ্রী (Dev-Shubhashree)। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় তাঁদের নতুন ছবি ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu) দর্শকদের কাছে নিয়ে এল ‘দেশু’ (Desu) জুটির পুরনো রোম্যান্সের স্মৃতি। এই জুটি যেমন বক্স অফিসে বহু হিট উপহার দিয়েছে, শুভশ্রীর-দেবের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তেমনি ভক্তদের মনে আলাদা আবেগ তৈরি করেছিল আরও এক নায়িকা। কে বলুন তো? হ্যাঁ, দেব-কোয়েল (Dev-Koel) জুটি, জেন-জি ভাষায় যাকে বলা যায় ‘দেকো’ (Deko)।

বাংলা সিনেমায় দেবের কেরিয়ারে কোয়েলের সঙ্গে করা ছবিগুলো এখনো দর্শকদের মনে অমলিন। ‘প্রেমের কাহিনী’, ‘মন মানে না’, ‘বলো না তুমি আমার’, ‘পাগলু’, ‘পাগলু ২’— একের পর এক ব্লকবাস্টার ছবি তাঁদের জুটিকে টলিউডে এক অন্য পর্যায় নিয়ে গিয়েছিল। প্রেমের কাহিনী ছবি সেই ‘রিমঝিম এ ধারাতে’ গান আজও সমান জনপ্রিয়। পরে দেবের প্রযোজনায় নির্মিত ‘ককপিট’ ছবিতেও দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছিল এই জুটি। যদিও এর পর বহু বছর ধরে তাঁদের আর একসঙ্গে বড়পর্দায় দেখা যায়নি।

বহুদিন পরে বড় পর্দায় দেব-শুভশ্রী জুটি ফিরে আসতেই, ভক্তরা এখন অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দেব-কোয়েলের প্রত্যাবর্তনের জন্য। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেব সেই পুরোনো দিনগুলির এক অজানা অধ্যায় ভাগ করে নিলেন ভক্তদের সঙ্গে। তিনি জানান, কোয়েল শুধু সহ-অভিনেত্রী নন, বাস্তবেও তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই যখন তাঁর নিজের প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘ককপিট’ -এর জন্য নির্ধারিত নায়িকা শেষ মুহূর্তে না করে দেন। দেবের মাথায় আসে কোয়েলকে নেওয়ার কথা, ছুটে যান প্রিয় বান্ধবীর কাছে।

ছবির গল্পটা শুনে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি কোয়েল, তখন এক মুহূর্ত দেরি না করে কোয়েল রাজি হয়ে যান। দেব যদিও জানিয়েছেন, এই ছবির জন্য কোয়েল প্রথম পছন্দ ছিল না। ছবির গল্প পড়ে কেমন লেগেছিল নায়িকার, সেটাও আজ অব্দি দেব জিজ্ঞেস করেননি। তবুও বন্ধুত্বের টান আর পেশার প্রতি নিষ্ঠা, দুইয়ের মিশেলেই কোয়েলকে সবসময় আলাদা মনে করেন দেব। তবে একজন প্রযোজক হিসেবে নায়কের মনে তখন দ্বিধা তৈরি হয়েছিল। এত বড় মাপের নায়িকাকে কীভাবে সাম্মানিক দেবেন?

সেই সময়ে তা নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছিলেন দেব। কোয়েল তাঁর বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ায় তাঁকে পারিশ্রমিক নিয়ে সরাসরি কিছু জিজ্ঞাসা করার কথা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। তাই এক অভিনব উপায় বের করেন দেব, তিনি কোয়েলকে একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে দেন! দেবের কথায়, তিনি কোয়েলকে বলেছিলেন, “তুমি যে টাকাটা অংকটাই লিখবে, আমি তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করব না।” এই ঘটনার সবচেয়ে আবেগঘন দিকটি হলো, কোয়েল সেই চেক আজও ব্যাংকে জমা দেননি!

এদিন কিছুটা আবেগঘন কন্ঠে দেব বলেন, “সেই ব্ল্যাক চেক আজ অব্দি ব্যাংকে জমা পড়েনি, আদেও কোনও অংক লিখেছিল কি না অথবা শূন্য লিখেই জমা দিয়েছিল, তা আমার জানা নেই!” দেব বলেন, এটাই তাঁদের সম্পর্কের আসল রূপ— বন্ধুত্ব, বিশ্বাস আর অটুট আস্থার এক অনন্য প্রতীক। বড়পর্দার সফল জুটি থেকে বাস্তব জীবনের বন্ধুত্ব, দেব-কোয়েলের এই অধ্যায় নিঃসন্দেহে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক সুন্দর গল্প, যা আগামী প্রজন্মকেও বারবার ছুঁয়ে যাবে।

Piya Chanda