প্রথম পর্বের সম্প্রচার থেকে শুরু করে ফাইনালের মঞ্চ— সারেগামাপা মানেই উত্তেজনা, আবেগ আর স্বপ্নপূরণের গল্প। প্রতিবারের মতো এবারও দর্শকদের মনে উন্মাদনা ছিল চূড়ান্ত পর্ব নিয়ে। কার মাথায় উঠবে বিজয়ীর মুকুট? কে পাবে সেরার সম্মান? ফাইনালের মঞ্চে ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আর দর্শকরা নিজেদের পছন্দের প্রতিযোগীকে সমর্থন জানাতে ছিলেন ব্যস্ত। তবে বিজয়ী ঘোষণার পরেই শুরু বিতর্ক!
এ যেন এক চিরাচরিত ট্রেন্ড! রিয়েলিটি শো মানেই এখন বিতর্ক অবধারিত। দর্শকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়, কেউ বলেন ফল ঠিকই হয়েছে, কেউ আবার অভিযোগ তোলেন বেছে নেওয়া বিজয়ী নাকি যোগ্য নন। এবারও সেই চিত্রই দেখা গেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন ময়ূরীকে জয়ী হতে দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন, কেউ আবার আরাত্রিকাকে। তবে বেশিরভাগ বিতর্ক ঘিরে রয়েছে বিজয়ী দেয়াশিনী রায়ের নামকে কেন্দ্র করে।

প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটি অংশ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, টাকা দিয়ে নাকি সারেগামাপার মুকুট কিনেছেন দেয়াশিনী! অর্থাৎ, তিনি যোগ্যতার কারণে নয়, বরং আর্থিক প্রভাব খাটিয়ে জিতেছেন। যদিও এমন অভিযোগের ভিত্তি কতটা বাস্তব, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ, শুধুমাত্র জল্পনা বা ফেসবুক পোস্টের ভিত্তিতে এমন গুরুতর অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবুও ট্রোলিং, কটাক্ষ চলছেই। অনেকে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সারেগামাপার স্বচ্ছতা নিয়েও।
আরও পড়ুনঃ “এখন বোধহয় মৃত্যুই আমাদের একসাথে করতে পারে!” অত্যন্ত অল্প বয়সেই হারিয়েছেন স্বামীকে, জীবনের ‘অন্ধকার অধ্যায়’ এর কথা বললেন পৌষমিতা!
এতদিন এ বিষয়ে চুপ ছিলেন দেয়াশিনী। তবে অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সমস্ত বিতর্কের কড়া জবাব দিলেন এই গায়িকা। তিনি বলেন, “টাকা দিয়ে উইনার হওয়ার ক্ষমতা আমার পরিবারের একেবারেই নেই। আমার বাবা একজন মিউজিশিয়ান, কোথায় পাবেন উনি এত টাকা? যারা এসব বলেন, তাঁদের বলব, একটু ভেবেচিন্তে কথা বলুন।” পাশাপাশি তিনি জানান, সারেগামাপার যাত্রাটা তাঁর কাছে সহজ ছিল না। প্রতিযোগিতার প্রতিটি ধাপ কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে পেরোতে হয়েছে। মা এবং তিনিও অনেক লড়াই করেছেন এখানে পৌঁছাতে। তাই এই ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য তাঁর কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক।
রিয়েলিটি শো-র ফলাফল নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। তবে বারবার প্রতিযোগীদের এই ধরনের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়, যা তাদের মানসিকভাবে আঘাত করে। দেয়াশিনীর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, কঠোর পরিশ্রমই তাঁর অস্ত্র, আর দর্শকদের ভালোবাসাই তাঁর সবচেয়ে বড় পুরস্কার। বিতর্ক থাকবেই, কিন্তু তাঁর জয়ের গল্প শুধুই তাঁর কঠোর অধ্যবসায়ের ফসল।