সংগীত জগতের একটি জনপ্রিয়র নাম ইমন চক্রবর্তী। ৮ থেকে ৮০ সকলেই তাকে এক ডাকে চেনেন, ভালবাসেন তার গান শুনতে। সম্প্রতি বসন্তোৎসব বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জনপ্রিয় গায়িকা ইমন চক্রবর্তী। প্রতিবছরই লিলুয়ায় তাঁর বাড়িতে বসন্তোৎসব আয়োজন করে থাকেন তিনি। কিন্তু এবছর স্থানীয় বাসিন্দাদের অসংযত আচরণের জন্য বাধ্য হয়ে এই উৎসব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গায়িকা।
ইমন চক্রবর্তী জানান, প্রতিবারই তাঁর বাড়ির সামনে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন বসন্তোৎসব দেখতে। গানের মাধ্যমে তিনি সকলকে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে চান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু মানুষের অসভ্য আচরণ এবং শৃঙ্খলার অভাব তাঁর এই উৎসবকে নষ্ট করছে। তিনি বলেন, “উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্যই বসন্তোৎসবের আয়োজন করি। কিন্তু যদি কেউ সেই পরিবেশ নষ্ট করে, তাহলে বাধ্য হয়েই তা বন্ধ করতে হয়। এটাই সবচেয়ে বেদনাদায়ক।”
বর্তমানে কাজের সূত্রে দক্ষিণ কলকাতায় থাকলেও নিজের শিকড় ভুলে যাননি ইমন। প্রায় ৮ বছর ধরে লিলুয়া অঞ্চলে বসন্ত উৎসব আয়োজন করে থাকেন তিনি। নিজের মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই উৎসব আয়োজন করে থাকেন। তবে এই ৮ বছরে এমন কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে যার জন্য বারবারই উৎসব বন্ধ রাখতে হয়েছে। তিনি জানান, আসলে গত ৮ বছর ধরেই দেখছি আমাদের অনুষ্ঠানে কিছু মানুষ এসে গোলমাল করার চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশি নিরাপত্তার মাঝেই গোটা অনুষ্ঠানটি হয়। কিন্তু তাও বিভিন্ন ভাবে শিল্পীদের গাড়ির ক্ষতি করা, কখনও শিল্পীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের হুজ্জুতিতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হল। এ বছরটা বন্ধ রাখছি।”
এখন প্রশ্ন উঠেছে তবে কি পরের বছরের থেকে লিলুয়া থেকে বসন্ত উৎসবের স্থান পরিবর্তন করবেন? ইমনের কথায়, ‘‘আমি চাইলে অনায়াসে দক্ষিণ কলকাতায় নিয়ে আসতে পারি অনুষ্ঠানটা। কিন্তু লিলুয়ার সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে আছে।’’ গায়িকার অভিযোগ, গতবারের বসন্তোৎসবে কিছু দর্শকের অভব্য আচরণ এবং অপ্রয়োজনীয় হট্টগোল পুরো অনুষ্ঠানটিকে বিশৃঙ্খল করে তোলে। তিনি আরও জানান, এভাবে চলতে থাকলে পরিবারের নিরাপত্তা এবং আয়োজনের সৌন্দর্য্য দুটোই ব্যাহত হবে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না।
আরও পড়ুনঃ বিনোদন জগতে ফের শোকের ছায়া! অকাল মৃত্যু জনপ্রিয় অভিনেতার
ইমনের এই ঘোষণা তাঁর ভক্তদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। তবে অনেকেই তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন, ভবিষ্যতে এমন আয়োজন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য। বসন্তোৎসবের মতো সাংস্কৃতিক উৎসবের গুরুত্ব বজায় রাখতে সকলের দায়িত্বশীল আচরণই একমাত্র পথ।