জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘খুব খারাপ মানুষ, মহিলা সহশিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়যোগ্য নন…ওর সঙ্গে শুট করা যায় না!’ ‘১০ ঘণ্টা কাজ করে অসুস্থতার নাটক!’– জিতুকে নিয়ে দিতিপ্রিয়ার মৌখিক অভিযোগ! আত্মসম্মানেই কঠিন সিদ্ধান্ত, ধারাবাহিক ছাড়ছেন জিতু!

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর (Chirodini Tumi Je Amar) সাফল্যের মধ্যেই যেন একের পর এক অশান্তির সুর। টিআরপির প্রথম সারিতে থাকা এই ধারাবাহিক নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে, কিন্তু পর্দার আড়ালে নাকি পরিস্থিতি ঠিক উলটো! এর আগেও মুখ্য দুই শিল্পী ‘জিতু কমল’ (Jeetu Kamal) এবং ‘দিতিপ্রিয়া রায়’-এর (Ditipriya Roy) মধ্যে মতবিভেদ নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। তখন মনে হয়েছিল সব মিটে গেছে, দু’জন নিজেদের মতো কাজেও ফিরেছেন। কিন্তু সম্প্রতি আবার নতুন করে ভাঙনের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই!

আর সেই জল্পনাই এবার আরও জোড়ালো হলো জিতুর তরফে সম্প্রতি একটি পোস্টে! প্রসঙ্গত, শুটিং ফ্লোরে যে সব সময় সাবলীল পরিবেশ পাওয়া যায় না, সেটা নতুন কিছু নয়। তবে জিতুর ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি অসুস্থতা কাটিয়ে সেটে ফিরলেও বারবার শুটে দেরি এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি আর অকারণ জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছিলেন। অভিযোগ উঠছে, দিতিপ্রিয়া নাকি তাঁর সঙ্গে একসঙ্গে শট দিতেই অনীহা দেখাচ্ছেন। প্রযোজনা সংস্থাকে জানানো হলেও ফল মিলছিল না বলে জানা গেছে। এমনই অবস্থায় নাকি ‘আলাদা শট’ নিয়ে কাজ চালানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।

যেটা জিতুর মতে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। অন্যদিকে দিতিপ্রিয়া এইসব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, সব নিয়ম মেনেই শুটিং চলছে এবং বাকি সবকিছুই মিথ্যে রটনা। কিন্তু যতই নিরপেক্ষ অবস্থান নিক দিতিপ্রিয়া, সেটে উপস্থিত অনেকেই বলছেন যে পরিস্থিতি বেশ কিছুদিন ধরেই গম্ভীর। এমনকী দলবদ্ধভাবে একটি মিটিং ডাকার কথাও রয়েছে, যাতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা যায়। কারণ অভিনেতাকে নাকি জানানো হয়েছে তিনি ছেড়ে দিতে পারেন ইচ্ছা করলে চরিত্রটি!

অভিনেতাও নাকি সেই পথেই হাঁটছেন এবার! সব জল্পনার মাঝেই হঠাৎ অভিনেতা জিতু সমাজ মাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। সেখানে সরাসরি কারও নাম না নিয়ে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, বহুদিনের দমে থাকা অপমানবোধই তাঁকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। তিনি লিখেছেন, বাড়ির ঝামেলা বাইরে বলতে তিনি স্বচ্ছন্দ নন, তাই এতদিন চুপ থেকেছেন। কিন্তু নিজের আত্মসম্মানকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে তিনি রাজি নন। সহ-অভিনেত্রীর থেকে পাওয়া অভিযোগ এবং প্রোডাকশনের ভূমিকা, সব মিলিয়ে তাঁর মনে হয়েছে আর থাকা সম্ভব নয়।

তার পোস্টে লেখা রয়েছে, “হ্যাঁ, আমার সহ অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া একসঙ্গে শর্ট দিতে রাজি নন। কারণ, আমি খুব খারাপ মানুষ। আমি অভিনেত্রীদের সঙ্গে অভিনয় করার যোগ্য নই, শরীর খারাপের মিথ্যে নাটক করছি! তা নাহলে ১০ ঘণ্টা কাজ করছে কী করে হসপিটাল থেকে ফিরে– এইসব অভিযোগগুলি তুলেছেন। প্রোডাকশন মারফত আমি এই সব শুনতে পেলাম এবং সেই প্রোডাকশনের দু-তিনজন (এই সিরিয়ালটি সৃজনেরশীলতার দায়িত্বে রয়েছেন) এটাকে সহমত জানিয়ে বলেছেন যে আপনি চাইলে ছেড়ে দিতেও পারেন।”

যেন এই পোস্টে তিনি নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত ছাপিয়ে দিয়েছেন। এতকিছুর পর দর্শকদের প্রশ্ন, তবে কি এই বার সত্যিই ধারাবাহিক ছাড়ছেন জিতু? ধারাবাহিকের সাফল্যের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ মুখ, কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই জট পাকিয়েছে যে অনেকেই বলছেন, অভ্যন্তরীণ চাপ তাঁকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করছে! সম্প্রতি পোস্টে তাঁর ভাষা এবং ইঙ্গিত আরও পরিষ্কার যে, তিনি আর এই টানাপোড়েনের মধ্যে থাকতে চান না। এখন অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। যদি সত্যিই তিনি বিদায় নেন, তা হলে এই জনপ্রিয় ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ যে বড়সড় ধাক্কা খাবে, তা বলাই যায়।

Rimi Datta

রিমি দত্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কপি রাইটার হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় চার বছরের অভিজ্ঞতা।